ঢাকা ১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫

জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন সানায়ে তাকাইচি

  • আপডেট সময় : ০৪:৩০:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫
  • ৬ বার পড়া হয়েছে

সানায়ে তাকাইচি -ছবি রয়টার্স

প্রত্যাশা ডেস্ক: জাপানে রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ সানায়ে তাকাইচিকে দলের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)।

শনিবার (৪ অক্টোবর) গৃহীত এই সিদ্ধান্তের কারণে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন তিনি, যা বিনিয়োগকারী ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে।

জাপানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শিগেরু ইশিবা সরে দাঁড়ানোর পর নতুন সরকারপ্রধান নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে ভোট হবে ১৫ অক্টোবর। ক্ষমতাসীন জোটের সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাকাইচির জয় প্রায় নিশ্চিত ধরা হচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় পুরো সময় জুড়ে ক্ষমতায় থাকা এলডিপি ৬৪ বছর বয়সি তাকাইচিকে বেছে নিয়েছে এমন এক সময়ে, যখন জনগণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষুব্ধ। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্রতিশ্রুতিতে বিরোধী দলগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন ভোটাররা। এলডিপির পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র নারী ছিলেন তাকাইচি। মধ্যপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বী শিনজিরো কোইজুমিকে টপকে তিনি দলের প্রধান হলেন।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে সাবেক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকাইচি যে দলের হাল ধরতে যাচ্ছেন, যা নিজেদের নিয়েই গভীর সংকটে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ‘ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর দ্য পিপল’ ও অভিবাসনবিরোধী ‘সানসেইতো’-র মতো দলগুলো বিশেষত তরুণ ভোটারদের মধ্যে সমর্থন বাড়িয়ে এলডিপির অবস্থান দুর্বল করে তুলেছে।

গত এক বছরে ইশিবার নেতৃত্বে এলডিপি ও তার জোটসঙ্গীরা পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়, যা শেষ পর্যন্ত তার পদত্যাগের কারণ হয়। দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে তাকাইচি বলেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমি কঠোর মন্তব্য শুনেছি। এই উদ্বেগই আমাকে তাড়িত করেছে। আমি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উদ্বেগ ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তাকে আশায় রূপ দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তাকাইচি ঘোষণা করেছেন, তিনি আগের তুলনায় অনেক বেশি আন্তর্জাতিক সফর করবেন এবং বিশ্বের সামনে জাপানের প্রত্যাবর্তনের বার্তা তুলে ধরবেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাস তাকাইচিকে অভিনন্দন জানিয়ে এক্সে লেখেন, জাপান-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সবক্ষেত্রে আরো মজবুত হবে। তবে তাকাইচির জাতীয়তাবাদী অবস্থান-বিশেষত যুদ্ধাহতদের স্মৃতিসৌধ ইয়াসুকুনি মন্দিরে তার নিয়মিত সফর-দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোকে ক্ষুব্ধ করতে পারে। তিনি জাপানের শান্তিপূর্ণ সংবিধান সংশোধনের পক্ষে এবং চলতি বছর তাইওয়ানের সঙ্গে আংশিক নিরাপত্তা জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই ছিং তে তাকাইচিকে দৃঢ় বন্ধু আখ্যা দিয়ে বলেন, নতুন এলডিপি প্রধান তাকাইচির নেতৃত্বে তাইওয়ান ও জাপান অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলবে বলে আশা করছি।

সানা/আপ্র/০৪/১০/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন সানায়ে তাকাইচি

আপডেট সময় : ০৪:৩০:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: জাপানে রক্ষণশীল জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ সানায়ে তাকাইচিকে দলের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি)।

শনিবার (৪ অক্টোবর) গৃহীত এই সিদ্ধান্তের কারণে দেশটির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন তিনি, যা বিনিয়োগকারী ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে।

জাপানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শিগেরু ইশিবা সরে দাঁড়ানোর পর নতুন সরকারপ্রধান নির্বাচনের জন্য পার্লামেন্টে ভোট হবে ১৫ অক্টোবর। ক্ষমতাসীন জোটের সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাকাইচির জয় প্রায় নিশ্চিত ধরা হচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় পুরো সময় জুড়ে ক্ষমতায় থাকা এলডিপি ৬৪ বছর বয়সি তাকাইচিকে বেছে নিয়েছে এমন এক সময়ে, যখন জনগণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষুব্ধ। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক প্রণোদনার প্রতিশ্রুতিতে বিরোধী দলগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন ভোটাররা। এলডিপির পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে একমাত্র নারী ছিলেন তাকাইচি। মধ্যপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বী শিনজিরো কোইজুমিকে টপকে তিনি দলের প্রধান হলেন।

বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে সাবেক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাকাইচি যে দলের হাল ধরতে যাচ্ছেন, যা নিজেদের নিয়েই গভীর সংকটে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ‘ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ফর দ্য পিপল’ ও অভিবাসনবিরোধী ‘সানসেইতো’-র মতো দলগুলো বিশেষত তরুণ ভোটারদের মধ্যে সমর্থন বাড়িয়ে এলডিপির অবস্থান দুর্বল করে তুলেছে।

গত এক বছরে ইশিবার নেতৃত্বে এলডিপি ও তার জোটসঙ্গীরা পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়, যা শেষ পর্যন্ত তার পদত্যাগের কারণ হয়। দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে তাকাইচি বলেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমি কঠোর মন্তব্য শুনেছি। এই উদ্বেগই আমাকে তাড়িত করেছে। আমি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উদ্বেগ ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তাকে আশায় রূপ দিতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তাকাইচি ঘোষণা করেছেন, তিনি আগের তুলনায় অনেক বেশি আন্তর্জাতিক সফর করবেন এবং বিশ্বের সামনে জাপানের প্রত্যাবর্তনের বার্তা তুলে ধরবেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জর্জ গ্লাস তাকাইচিকে অভিনন্দন জানিয়ে এক্সে লেখেন, জাপান-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সবক্ষেত্রে আরো মজবুত হবে। তবে তাকাইচির জাতীয়তাবাদী অবস্থান-বিশেষত যুদ্ধাহতদের স্মৃতিসৌধ ইয়াসুকুনি মন্দিরে তার নিয়মিত সফর-দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোকে ক্ষুব্ধ করতে পারে। তিনি জাপানের শান্তিপূর্ণ সংবিধান সংশোধনের পক্ষে এবং চলতি বছর তাইওয়ানের সঙ্গে আংশিক নিরাপত্তা জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।

তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই ছিং তে তাকাইচিকে দৃঢ় বন্ধু আখ্যা দিয়ে বলেন, নতুন এলডিপি প্রধান তাকাইচির নেতৃত্বে তাইওয়ান ও জাপান অর্থনীতি, নিরাপত্তা ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরো ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলবে বলে আশা করছি।

সানা/আপ্র/০৪/১০/২০২৫