ঢাকা ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
জানুয়ারিতে চার গুণ বেশি আমদানি

এত তেল গেলো কোথায়?

  • আপডেট সময় : ০৯:০১:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৩ বার পড়া হয়েছে

গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। তবুও বাজারে ও দোকানে সংকট। ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: আসন্ন রমজান মাস ঘিরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বিশেষ করে রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছোলা, খেজুর, চিনি, মটর ডাল, সয়াবিন তেল ও ফলসহ পণ্য আমদানি হয়েছে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গত জানুয়ারির চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে। অথচ নগরের দোকান ঘুরে সহজে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতারা বলছেন, এসব তেল মজুত করে রাখা হয়েছে। দাম বাড়ানোর জন্য এই কাজ করেছে সিন্ডিকেট।

গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) একটি সংবাদসংস্থা বহদ্দারহাট ও খাতুনগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখেছে, বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ করছে না বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।

নগরের বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন ও খাতুনগঞ্জের হুমায়ুন কবির বলেন, সব মুদি দোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়, এখন এসব দোকানে খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছে। কোনো দোকানে পাওয়া গেলে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দিতে হয়। এ সুযোগে খোলা তেলের বেড়ে গেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল খালাস হয়েছে দুই লাখ ৩২ হাজার টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৯ শতাংশ বেশি। সয়াবিন বীজের আমদানিও বেড়েছে। গত জানুয়ারিতে সয়াবিন বীজ আমদানি হয়েছে তিন লাখ টন, যা গত এক বছরে এত বেশি সয়াবিন বীজ আমদানির রেকর্ড নেই।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজান ঘিরে যেসব নিত্যপণ্য আমদানি হয়েছে, তাতে কারসাজি না হলে কোনো পণ্যের সংকট হবে না। এমনকি দাম বাড়ার পরিবর্তে আরও কমে আসবে। কিন্তু ভোজ্যতেল সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তেল আমদানি করে মজুত করে রেখেছে। বাজারে ছাড়ছে না। এজন্য সংকট। তারা রমজানের আগে তেলের দাম বাড়ানোর জন্য সিন্ডিকেট করে বসে আছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে বলে জানালেন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহআলম। তিনি বলেন, ‘গত মাসে সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে তিন লাখ ১৯ হাজার ২০ মেট্রিক টন; যা গত বছর আমদানি হয়েছিল ৮১ হাজার ৮৯৯ টন। হিসাবে প্রায় চার গুণ বেশি।’

বিগত সময়ের চেয়ে এবারের রমজান ঘিরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বেড়েছে জানিয়ে ড. মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, ‘এবার বন্দর দিয়ে গত জানুয়ারি মাসে ছোলা আমদানি হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৩০৪ টন, যা গত বছরের জানুয়ারিতে আমদানি হয়েছিল ৬৬ হাজার ৩০ টন, সব ধরনের মটর ডাল ৯৫ হাজার ৭৮৮ টন, গত বছর আমদানি হয়েছিল আট হাজার ৮৭৩ টন, মসুর ডাল ৯০ হাজার ৬০৩ টন, গত বছর আমদানি হয়েছিল ৪৯ হাজার ১৪২ টন। পাশাপাশি চলতি বছরের জানুয়ারিতে চিনি আমদানি হয়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার টন, মুগ ডাল আমদানি হয়েছে ৩৬২ টন, সরিষা আমদানি হয় ৪৮ হাজার ৫৭৭ মেট্রিক টন।’

এদিকে রমজানে ইফতারে ফলের চাহিদা বেড়ে যায়। তাজা ফলের মধ্যে জানুয়ারিতে আপেল আমদানি হয়েছে ১১ হাজার ২০৪ টন, কমলা ও মাল্টা আমদানি হয়েছে ১০ হাজার ৩৯৬ টন, আঙুর এক হাজার ৫০৮ টন, নাশপাতি ২৫২ টন, খেজুর ১৪ হাজার ৮৪৯ টন ও আলুবোখারা ১৪৪ টন।

একইভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে (জুলাই-২০২৪ থেকে জানুয়ারি-২০২৫ পর্যন্ত) সাত মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে আপেল আমদানি হয়েছে ৬৪ হাজার ৫৭ টন, কমলা ও মাল্টা ৮০ হাজার ৩৬ টন, আঙুর ২৮ হাজার ৬৫৩ টন, নাশপাতি দুই হাজার ৬৬১ টন, খেঁজুর ২০ হাজার ৭৭৬ টন, আলুবোখারা এক হাজার ৩০১ টন, মসুর ডাল তিন লাখ ১৬ হাজার ২২৮ টন, মুগ ডাল আট হাজার ২২৩ টন, সব ধরনের মটর ডাল চার লাখ ৮৩ হাজার ২৭২ টন, মাষকলাই ডাল ১২৫ টন, ছোলা এক লাখ ৪৩ হাজার ৬৬২ টন, সরিষা দুই লাখ ১৩ হাজার ৮১২ টন, সয়াবিন তেল নয় লাখ ৭৪ হাজার ৯৯ টন ও এলাচ এক হাজার ১৯৯ টন।

এবার গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ নিত্যপণ্য আমদানি হয়েছে বলে জানালেন খাতুনগঞ্জের মেসার্স জিরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এবার রমজানে চাহিদার বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে। ফলে সংকটের কোনো সুযোগ নেই। এমনকি দাম বাড়বে না বরং কমবে। তবে প্রচুর পরিমাণ তেল আমদানির পরও বাজারে সংকট। এর প্রধান কারণ কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে না।’

নগরের বহদ্দারহাট বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানিয়েছেন, শনিবার প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১৪০ টাকা, চিনি ১২৫ টাকা, সয়াবিন তেল ১৭৫-১৭৬ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা ও রসুন প্রতি কেজি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা।

চাকতাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে ছোলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ৯৬-১২৪ টাকা ও চিনি ১২০ টাকা। এবার আড়তে পর্যাপ্ত পণ্যের মজুত আছে। সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। এখন আমদানি অব্যাহত আছে। তবে তেলের সংকট আছে। ভোজ্যতেল সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আগের মতো তেল দিচ্ছে না। এবার রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্য কম বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছর এই সময়ে পণ্য বিক্রির জন্য দম ফেলার সময় থাকতো না। এবার ক্রেতা কম। তাই বিক্রিও কম।’

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ। তিনি বলেন, ‘এবার রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য প্রচুর আমদানি হয়েছে। এখন পর্যন্ত দাম এবং সরবরাহ ঠিক আছে। আশা করছি, রমজানে কোনো পণ্যেরন দাম বাড়বে না। এরপরও আমাদের টিম মাঠে আছে। অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জানুয়ারিতে চার গুণ বেশি আমদানি

এত তেল গেলো কোথায়?

আপডেট সময় : ০৯:০১:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: আসন্ন রমজান মাস ঘিরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। বিশেষ করে রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছোলা, খেজুর, চিনি, মটর ডাল, সয়াবিন তেল ও ফলসহ পণ্য আমদানি হয়েছে গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এর মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গত জানুয়ারির চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে। অথচ নগরের দোকান ঘুরে সহজে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতারা বলছেন, এসব তেল মজুত করে রাখা হয়েছে। দাম বাড়ানোর জন্য এই কাজ করেছে সিন্ডিকেট।

গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) একটি সংবাদসংস্থা বহদ্দারহাট ও খাতুনগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখেছে, বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। কোম্পানিগুলো তেল সরবরাহ করছে না বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।

নগরের বহদ্দারহাট এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন ও খাতুনগঞ্জের হুমায়ুন কবির বলেন, সব মুদি দোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়, এখন এসব দোকানে খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছে। কোনো দোকানে পাওয়া গেলে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দিতে হয়। এ সুযোগে খোলা তেলের বেড়ে গেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল খালাস হয়েছে দুই লাখ ৩২ হাজার টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৯ শতাংশ বেশি। সয়াবিন বীজের আমদানিও বেড়েছে। গত জানুয়ারিতে সয়াবিন বীজ আমদানি হয়েছে তিন লাখ টন, যা গত এক বছরে এত বেশি সয়াবিন বীজ আমদানির রেকর্ড নেই।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজান ঘিরে যেসব নিত্যপণ্য আমদানি হয়েছে, তাতে কারসাজি না হলে কোনো পণ্যের সংকট হবে না। এমনকি দাম বাড়ার পরিবর্তে আরও কমে আসবে। কিন্তু ভোজ্যতেল সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তেল আমদানি করে মজুত করে রেখেছে। বাজারে ছাড়ছে না। এজন্য সংকট। তারা রমজানের আগে তেলের দাম বাড়ানোর জন্য সিন্ডিকেট করে বসে আছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে বলে জানালেন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ শাহআলম। তিনি বলেন, ‘গত মাসে সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে তিন লাখ ১৯ হাজার ২০ মেট্রিক টন; যা গত বছর আমদানি হয়েছিল ৮১ হাজার ৮৯৯ টন। হিসাবে প্রায় চার গুণ বেশি।’

বিগত সময়ের চেয়ে এবারের রমজান ঘিরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বেড়েছে জানিয়ে ড. মোহাম্মদ শাহআলম বলেন, ‘এবার বন্দর দিয়ে গত জানুয়ারি মাসে ছোলা আমদানি হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৩০৪ টন, যা গত বছরের জানুয়ারিতে আমদানি হয়েছিল ৬৬ হাজার ৩০ টন, সব ধরনের মটর ডাল ৯৫ হাজার ৭৮৮ টন, গত বছর আমদানি হয়েছিল আট হাজার ৮৭৩ টন, মসুর ডাল ৯০ হাজার ৬০৩ টন, গত বছর আমদানি হয়েছিল ৪৯ হাজার ১৪২ টন। পাশাপাশি চলতি বছরের জানুয়ারিতে চিনি আমদানি হয়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার টন, মুগ ডাল আমদানি হয়েছে ৩৬২ টন, সরিষা আমদানি হয় ৪৮ হাজার ৫৭৭ মেট্রিক টন।’

এদিকে রমজানে ইফতারে ফলের চাহিদা বেড়ে যায়। তাজা ফলের মধ্যে জানুয়ারিতে আপেল আমদানি হয়েছে ১১ হাজার ২০৪ টন, কমলা ও মাল্টা আমদানি হয়েছে ১০ হাজার ৩৯৬ টন, আঙুর এক হাজার ৫০৮ টন, নাশপাতি ২৫২ টন, খেজুর ১৪ হাজার ৮৪৯ টন ও আলুবোখারা ১৪৪ টন।

একইভাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে (জুলাই-২০২৪ থেকে জানুয়ারি-২০২৫ পর্যন্ত) সাত মাসে বিভিন্ন দেশ থেকে আপেল আমদানি হয়েছে ৬৪ হাজার ৫৭ টন, কমলা ও মাল্টা ৮০ হাজার ৩৬ টন, আঙুর ২৮ হাজার ৬৫৩ টন, নাশপাতি দুই হাজার ৬৬১ টন, খেঁজুর ২০ হাজার ৭৭৬ টন, আলুবোখারা এক হাজার ৩০১ টন, মসুর ডাল তিন লাখ ১৬ হাজার ২২৮ টন, মুগ ডাল আট হাজার ২২৩ টন, সব ধরনের মটর ডাল চার লাখ ৮৩ হাজার ২৭২ টন, মাষকলাই ডাল ১২৫ টন, ছোলা এক লাখ ৪৩ হাজার ৬৬২ টন, সরিষা দুই লাখ ১৩ হাজার ৮১২ টন, সয়াবিন তেল নয় লাখ ৭৪ হাজার ৯৯ টন ও এলাচ এক হাজার ১৯৯ টন।

এবার গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ নিত্যপণ্য আমদানি হয়েছে বলে জানালেন খাতুনগঞ্জের মেসার্স জিরি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এবার রমজানে চাহিদার বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে। ফলে সংকটের কোনো সুযোগ নেই। এমনকি দাম বাড়বে না বরং কমবে। তবে প্রচুর পরিমাণ তেল আমদানির পরও বাজারে সংকট। এর প্রধান কারণ কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে না।’

নগরের বহদ্দারহাট বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানিয়েছেন, শনিবার প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, মসুর ডাল ১০৫ থেকে ১৪০ টাকা, চিনি ১২৫ টাকা, সয়াবিন তেল ১৭৫-১৭৬ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা ও রসুন প্রতি কেজি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা।

চাকতাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘খাতুনগঞ্জে পাইকারিতে ছোলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ৯৬-১২৪ টাকা ও চিনি ১২০ টাকা। এবার আড়তে পর্যাপ্ত পণ্যের মজুত আছে। সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। এখন আমদানি অব্যাহত আছে। তবে তেলের সংকট আছে। ভোজ্যতেল সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো আগের মতো তেল দিচ্ছে না। এবার রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্য কম বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য বছর এই সময়ে পণ্য বিক্রির জন্য দম ফেলার সময় থাকতো না। এবার ক্রেতা কম। তাই বিক্রিও কম।’

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ। তিনি বলেন, ‘এবার রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য প্রচুর আমদানি হয়েছে। এখন পর্যন্ত দাম এবং সরবরাহ ঠিক আছে। আশা করছি, রমজানে কোনো পণ্যেরন দাম বাড়বে না। এরপরও আমাদের টিম মাঠে আছে। অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।