ঢাকা ১২:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫

জাতীয় দলেও আলো ছড়ানোর প্রত্যয় তানভির-রাজার

  • আপডেট সময় : ০২:২০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : ‘কী রে, তুই নাকি জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিস?’, ফোনের অপরপ্রান্তে জাতীয় নির্বাচকের কথা শুনে ধন্দে পড়ে যান তানভির ইসলাম। তবে তাকে বেশিক্ষণ ঘোরের মধ্যে না রেখে নির্বাচক জানিয়েই দেন, বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। প্রথমবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে এই বাঁহাতি স্পিনারের উচ্ছ্বাস যেন ছুঁতে চায় আকাশ। রেজাউর রহমান রাজা এরকম খবর পেয়েছিলেন প্রায় দেড় বছর আগে। তবে সেটি ছিল টেস্ট দলে। এবার তিনি প্রথমবার সুযোগ পেলেন টি-টোয়েন্টি দলে। নতুন দিগন্তে ডানা মেলে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই এই পেসারেরও। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের বাংলাদেশ দলে সুযোগ পাওয়া দুই ক্রিকেটার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথোপকথনে জানালেন তাদের প্রতিক্রিয়া আর সামনের পরিকল্পনা।
নতুন চ্যালেঞ্জেও জিততে চান তানভির : বিপিএলে এবার চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ১২ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে ছিলেন তানভির। গত বিপিএলেও কুমিল্লাকে শিরোপা এনে দেওয়ায় বড় ভূমিকা ছিল তার ১৬ উইকেটের। পারফর্ম করেছেন তিনি গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে, বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়েও। এবার তার টি-টোয়েন্টি দলে তার সুযোগ পাওয়াটা অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। সেই খবরটি তিনি জানতে পারেন নির্বাচক হাবিবুল বাশারের ফোনে।”অনেক ভালো লেগেছে। অনেক অনেক শুকরিয়া আল্লাহর কাছে।” “(হাবিবুল) বাশার স্যার ফোন দিয়েছিলেন। উনি মজা করে বললেন, ‘কী রে, তুই নাকি জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিস?’ আমি বললাম, “কী বলেন স্যারৃ!” পরে স্যার বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার তোর নাম আছে। অভিনন্দন, ভালো খেলার চেষ্টা করিস।’ এই কথাই হলো।” তানভিরের বাবার ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ করে যেন কারিগরি কোনো চাকরি অথবা পুলিশে যোগ দেন তিনি। কিন্তু ছেলের হৃদয়জুড়ে তো কেবল ক্রিকেট! বাবার কাছ থেকে সময় চেয়ে তিনি আসেন ক্রিকেট মাঠে। এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ক্রমে উন্নতি করে এখন তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চের কাছে। ছেলের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবর শুনে আনন্দাশ্রু ঝরে তানভিরের বাবার চোখে। “বাশার স্যারের সঙ্গে কথা শেষ হলে বাসায় ফোন দিয়ে জানাই জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার কথা। এরপর কী বলব! এটা তো একটা স্বপ্ন… জাতীয় দলে খেলা… বাসার সবাই অনেক খুশি। কয়েকজন তো কান্নাই করে দিছে। আব্বুও কান্না করে দিছে।” প্রাথমিক আবেগ-উচ্ছ্বাস শেষে এখন বাস্তবতাও মাথায় রাখছেন ২৬ বছর বয়সী স্পিনার। বিপিএলের পর এবার জাতীয় দলের চ্যালেঞ্জেও জিততে চান তিনি। “প্রতিটা নতুন ধাপে চ্যালেঞ্জ একটাই, ভালো খেলার। এছাড়া আর চ্যালেঞ্জ নেই। এত দিন যেভাবে খেলেছি, বিপিএলটা যেভাবে খেলেছি, সুযোগ পেলে সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করব। যেন বাংলাদেশকে কিছু দিতে পারি।
বিপিএলের আত্মবিশ্বাসই রাজার ভালো করার প্রেরণা : ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজের টেস্ট স্কোয়াডে প্রথমবার ডাক পেয়েছিলেন রাজা। এরপর টেস্ট দলের সঙ্গে বিদেশ সফরও করেছেন। তবে এখনও তার অভিষেক হয়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এবার বিপিএলের পারফরম্যান্সে সুযোগ পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রথম ম্যাচে ১৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে ৮ ম্যাচে ১৩ উইকেট নেন রাজা। নির্বাচক বা বোর্ডের কারও কাছ থেকে জানার আগেই বড় ভাইয়ের মাধ্যমে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর জেনে যান রাজা। “ভালো লাগছে। খবরটা শোনার পর থেকে আমি রোমাঞ্চিত। (ম্যাচে) সুযোগ পেলে ভালো খেলতে হবে।” “আমার বড় ভাইয়া (শফিউর রহমান) খবরে দেখে আমাকে জানান। ভাইয়ের কাছ থেকেই প্রথমে শুনি। ভাইও অনেক খুশি। পরে (হাবিবুল বাশার) সুমন ভাই কল দিয়েছিলেন। উনি বললেন মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে। সুযোগ এলে যেন কাজে লাগাতে পারি।” এতদিন শুধু টেস্টের জন্য বিবেচিত হওয়া রাজা সীমিত ওভারের সংস্করণের জন্যও আত্মবিশ্বাসী। প্রেরণা সেখানে বিপিএলের পারফরম্যান্স। “সংস্করণ যেটাই হোক, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে সব কিছুই খেলতে হবে। এটা (টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি) নিয়ে ভাবলে হবে না। যদি (একাদশে) সুযোগ হয়, চেষ্টা করব ভালো কিছু করতে।” “বিপিএলের মতো বড় একটা ইভেন্টে আল্লাহর রহমতে ভালো পারফর্ম হয়েছে। এটা অবশ্যই আমার জন্য ভালো বিষয়। ওখান থেকে আত্মবিশ্বাসটা পাব।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতীয় দলেও আলো ছড়ানোর প্রত্যয় তানভির-রাজার

আপডেট সময় : ০২:২০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ ২০২৩

ক্রীড়া ডেস্ক : ‘কী রে, তুই নাকি জাতীয় দলে ডাক পেয়েছিস?’, ফোনের অপরপ্রান্তে জাতীয় নির্বাচকের কথা শুনে ধন্দে পড়ে যান তানভির ইসলাম। তবে তাকে বেশিক্ষণ ঘোরের মধ্যে না রেখে নির্বাচক জানিয়েই দেন, বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। প্রথমবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে এই বাঁহাতি স্পিনারের উচ্ছ্বাস যেন ছুঁতে চায় আকাশ। রেজাউর রহমান রাজা এরকম খবর পেয়েছিলেন প্রায় দেড় বছর আগে। তবে সেটি ছিল টেস্ট দলে। এবার তিনি প্রথমবার সুযোগ পেলেন টি-টোয়েন্টি দলে। নতুন দিগন্তে ডানা মেলে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই এই পেসারেরও। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের বাংলাদেশ দলে সুযোগ পাওয়া দুই ক্রিকেটার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথোপকথনে জানালেন তাদের প্রতিক্রিয়া আর সামনের পরিকল্পনা।
নতুন চ্যালেঞ্জেও জিততে চান তানভির : বিপিএলে এবার চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ১২ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে ছিলেন তানভির। গত বিপিএলেও কুমিল্লাকে শিরোপা এনে দেওয়ায় বড় ভূমিকা ছিল তার ১৬ উইকেটের। পারফর্ম করেছেন তিনি গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে, বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের হয়েও। এবার তার টি-টোয়েন্টি দলে তার সুযোগ পাওয়াটা অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। সেই খবরটি তিনি জানতে পারেন নির্বাচক হাবিবুল বাশারের ফোনে।”অনেক ভালো লেগেছে। অনেক অনেক শুকরিয়া আল্লাহর কাছে।” “(হাবিবুল) বাশার স্যার ফোন দিয়েছিলেন। উনি মজা করে বললেন, ‘কী রে, তুই নাকি জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিস?’ আমি বললাম, “কী বলেন স্যারৃ!” পরে স্যার বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার তোর নাম আছে। অভিনন্দন, ভালো খেলার চেষ্টা করিস।’ এই কথাই হলো।” তানভিরের বাবার ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ করে যেন কারিগরি কোনো চাকরি অথবা পুলিশে যোগ দেন তিনি। কিন্তু ছেলের হৃদয়জুড়ে তো কেবল ক্রিকেট! বাবার কাছ থেকে সময় চেয়ে তিনি আসেন ক্রিকেট মাঠে। এরপর নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ক্রমে উন্নতি করে এখন তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চের কাছে। ছেলের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার খবর শুনে আনন্দাশ্রু ঝরে তানভিরের বাবার চোখে। “বাশার স্যারের সঙ্গে কথা শেষ হলে বাসায় ফোন দিয়ে জানাই জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার কথা। এরপর কী বলব! এটা তো একটা স্বপ্ন… জাতীয় দলে খেলা… বাসার সবাই অনেক খুশি। কয়েকজন তো কান্নাই করে দিছে। আব্বুও কান্না করে দিছে।” প্রাথমিক আবেগ-উচ্ছ্বাস শেষে এখন বাস্তবতাও মাথায় রাখছেন ২৬ বছর বয়সী স্পিনার। বিপিএলের পর এবার জাতীয় দলের চ্যালেঞ্জেও জিততে চান তিনি। “প্রতিটা নতুন ধাপে চ্যালেঞ্জ একটাই, ভালো খেলার। এছাড়া আর চ্যালেঞ্জ নেই। এত দিন যেভাবে খেলেছি, বিপিএলটা যেভাবে খেলেছি, সুযোগ পেলে সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করব। যেন বাংলাদেশকে কিছু দিতে পারি।
বিপিএলের আত্মবিশ্বাসই রাজার ভালো করার প্রেরণা : ২০২১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজের টেস্ট স্কোয়াডে প্রথমবার ডাক পেয়েছিলেন রাজা। এরপর টেস্ট দলের সঙ্গে বিদেশ সফরও করেছেন। তবে এখনও তার অভিষেক হয়নি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এবার বিপিএলের পারফরম্যান্সে সুযোগ পেয়েছেন টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে। সিলেট স্ট্রাইকার্সের প্রথম ম্যাচে ১৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে ৮ ম্যাচে ১৩ উইকেট নেন রাজা। নির্বাচক বা বোর্ডের কারও কাছ থেকে জানার আগেই বড় ভাইয়ের মাধ্যমে জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর জেনে যান রাজা। “ভালো লাগছে। খবরটা শোনার পর থেকে আমি রোমাঞ্চিত। (ম্যাচে) সুযোগ পেলে ভালো খেলতে হবে।” “আমার বড় ভাইয়া (শফিউর রহমান) খবরে দেখে আমাকে জানান। ভাইয়ের কাছ থেকেই প্রথমে শুনি। ভাইও অনেক খুশি। পরে (হাবিবুল বাশার) সুমন ভাই কল দিয়েছিলেন। উনি বললেন মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে। সুযোগ এলে যেন কাজে লাগাতে পারি।” এতদিন শুধু টেস্টের জন্য বিবেচিত হওয়া রাজা সীমিত ওভারের সংস্করণের জন্যও আত্মবিশ্বাসী। প্রেরণা সেখানে বিপিএলের পারফরম্যান্স। “সংস্করণ যেটাই হোক, পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে সব কিছুই খেলতে হবে। এটা (টেস্ট বা টি-টোয়েন্টি) নিয়ে ভাবলে হবে না। যদি (একাদশে) সুযোগ হয়, চেষ্টা করব ভালো কিছু করতে।” “বিপিএলের মতো বড় একটা ইভেন্টে আল্লাহর রহমতে ভালো পারফর্ম হয়েছে। এটা অবশ্যই আমার জন্য ভালো বিষয়। ওখান থেকে আত্মবিশ্বাসটা পাব।”