ঢাকা ০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের প্রস্তাবে বিশিষ্টজনদের প্রতিক্রিয়া

  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের বিষয় সুরাহা করতে সরকারকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত যে পরামর্শ দিয়েছেন, এ ব্যাপারে মিশ্র মত এসেছে বিশিষ্টজনদের বক্তব্যে। একটি সংবাদসংস্থার সঙ্গে আলাপে তাদের কেউ মিশেলের বক্তব্যেরে কোনো বিষয়ে একমত হলেও আবার অন্য বিষয়ে দ্বিমত করেছেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য না আসায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের এ সফরের বড় ঘাটতি বলে মনে করেন তারা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের বক্তব্য নিয়ে মতামত জানতে চেয়ে সংবাদমাধ্যমটি কথা বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান ও মানবাধিকারকর্মী খুশি কবীরের সঙ্গে।
খুশি কবীর ও নাছিমা বেগম স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত সংস্থা গঠনে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের প্রস্তাবের মধ্যে যৌক্তিকতা দেখছেন। তবে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো গুরুতর সমস্যা রেখে সরকারকে দেওয়া মিশেলের পরামর্শ আমলে নিতে নারাজ অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান। মিশেল ব্যাশেলেত গুম-খুনের যে অভিযোগ তুলেছেন সে ব্যাপারগুলো এখন ঘটছে না উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান বলেন, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকার নানা চাপে আছে। তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে জোর দিয়ে কিছু বলা উচিত ছিল মিশেল ব্যাশেলেতের।
মানবাধিকারকর্মী খুশি কবীর বলেন, ‘মিশেল ব্যাশেলেত যে দাবিগুলো করেছেন তার যৌক্তিকতা আছে। মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার হিসেবে উনি তো ওনার বক্তব্য দেবেন। এখানে এসে আলাপ করে যা যা শুনেছেন তার আলোকেই কথা বলেছেন। আমি মনে করি তিনি সচেতনভাবেই তার বক্তব্য দিয়েছেন।’
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের এসব বিষয় প্রতিপালনের দায় রয়েছে জানিয়ে খুশী কবির বলেন, ‘জাতিসংঘ যতগুলো ফর্মে কাজ করে আমরা সবগুলোর সঙ্গেই জড়িত। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতেই কাজ করি। সরকার নিশ্চয় তাদের পক্ষ থেকে নিজের অবস্থান ও বক্তব্য তুলে ধরেছেন তার কাছে।’ দেশের চলমান নানান সংকট সামনে থাকার পরও মিশেল ব্যাশেলেত যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেগুলোকে অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক বলছেন মিজানুর রহামান খান। তিনি বলেন, ‘তিনি (মিমেল) পরামর্শ দিতেই পারেন। কিন্তু তার যে প্রধান কাজ ছিল তিনি শরণার্থী বিষয়ে কথা বলবেন, সেই বিষয়ে কথা না বলে তিনি উল্টো যে পরামর্শ দিলেন তাতে আশাহত হলাম। আমরা আশা করেছিলাম রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার কাছ থেকে কোনো সুখবর শোনা যাবে। সেটা তো গেলই না বরং আরও দুই তিন বছর তাদের বাংলাদেশে রাখার প্রস্তাব করলেন।’
মানবাধিকার নিয়ে মিশেলের নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থার দাবিরও কোনো কারণ দেখছেন না মিজানুর রহমান খান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাধীন কমিশন গঠনের যে কথা বলছেন, সেটা না বলে তিনি বলতে পারতেন আমাদের যে সংস্থাগুলো আছে, মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ যেন আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে সেসব বিষয়ে কথা বলতে পারতেন।
বর্তমান সময়ে দেশে গুম-খুন হচ্ছে না দাবি করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, যখন গুম খুনের প্রসঙ্গে কথা বলা হচ্ছে তখন দেশ গুম-খুন হচ্ছে না। এর মানে তার সফরকেই তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তার উচিত ছিল রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কথা বলা। তাদের নিজ দেশে ফেরানোর বিষয়ে কথা বলা। আমেরিকা যখন বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- পরিচালনা করে তখন আমরা জাতিসংঘের কোনো বক্তব্য পাই না।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের সঙ্গে সব বিষয়ে একমত হতে পারেননি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘তিনি (মিশেল ব্যাশেলেত) আমাদের এখানের ডেথ প্যানাল্টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু ডেথ প্যানাল্টি থাকার কারণে এসিড নিক্ষেপ অনেকাংশেই কমেছে। এখন ধর্ষণের বিরুদ্ধে জনদাবির মুখে ডেথ প্যানাল্টি করা হয়েছে। এসব বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের কিছু তফাত আছে।’
নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থার বিষয়ে মিশেল ব্যাশেলেত যে দাবি করেছেন তার দাবির প্রসঙ্গে সহমত পোষণ করেন নাছিমা বেগম। সেই সঙ্গে তিনি মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশারী করার মতামত ব্যক্ত করেন।
নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে জবাবদিহির আওতায় আনতে পারি না। যদি আমাদের সেই অধিকার দেওয়া হয় আমরা আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার তার চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ জানান। পরে সফরের শেষ দিন বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগগুলো সমাধানে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত সংস্থা গঠনের প্রয়োজনীতার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মনে করেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বিরোধী দল এবং সাংবাদিকদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকার এই চর্চার বিষয়ে সরকারে আরও উদার হওয়া উচিত। রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে সংলাপের চর্চার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং তরুণ সম্প্রদায় যেন মতপ্রকাশ করতে পারে।
গত ১৪ আগস্ট সকালে চার দিনের সফরে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত। সফরের প্রথম দিন গত রোববার আইনমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। সোমবার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী। গত মঙ্গলবার তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। আর সফরের বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের প্রস্তাবে বিশিষ্টজনদের প্রতিক্রিয়া

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের বিষয় সুরাহা করতে সরকারকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত যে পরামর্শ দিয়েছেন, এ ব্যাপারে মিশ্র মত এসেছে বিশিষ্টজনদের বক্তব্যে। একটি সংবাদসংস্থার সঙ্গে আলাপে তাদের কেউ মিশেলের বক্তব্যেরে কোনো বিষয়ে একমত হলেও আবার অন্য বিষয়ে দ্বিমত করেছেন। বিশেষ করে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য না আসায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের এ সফরের বড় ঘাটতি বলে মনে করেন তারা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের বক্তব্য নিয়ে মতামত জানতে চেয়ে সংবাদমাধ্যমটি কথা বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান ও মানবাধিকারকর্মী খুশি কবীরের সঙ্গে।
খুশি কবীর ও নাছিমা বেগম স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত সংস্থা গঠনে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের প্রস্তাবের মধ্যে যৌক্তিকতা দেখছেন। তবে রোহিঙ্গা সমস্যার মতো গুরুতর সমস্যা রেখে সরকারকে দেওয়া মিশেলের পরামর্শ আমলে নিতে নারাজ অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান। মিশেল ব্যাশেলেত গুম-খুনের যে অভিযোগ তুলেছেন সে ব্যাপারগুলো এখন ঘটছে না উল্লেখ করে মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান খান বলেন, অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকার নানা চাপে আছে। তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে জোর দিয়ে কিছু বলা উচিত ছিল মিশেল ব্যাশেলেতের।
মানবাধিকারকর্মী খুশি কবীর বলেন, ‘মিশেল ব্যাশেলেত যে দাবিগুলো করেছেন তার যৌক্তিকতা আছে। মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার হিসেবে উনি তো ওনার বক্তব্য দেবেন। এখানে এসে আলাপ করে যা যা শুনেছেন তার আলোকেই কথা বলেছেন। আমি মনে করি তিনি সচেতনভাবেই তার বক্তব্য দিয়েছেন।’
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের এসব বিষয় প্রতিপালনের দায় রয়েছে জানিয়ে খুশী কবির বলেন, ‘জাতিসংঘ যতগুলো ফর্মে কাজ করে আমরা সবগুলোর সঙ্গেই জড়িত। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতেই কাজ করি। সরকার নিশ্চয় তাদের পক্ষ থেকে নিজের অবস্থান ও বক্তব্য তুলে ধরেছেন তার কাছে।’ দেশের চলমান নানান সংকট সামনে থাকার পরও মিশেল ব্যাশেলেত যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেগুলোকে অযৌক্তিক ও অপ্রাসঙ্গিক বলছেন মিজানুর রহামান খান। তিনি বলেন, ‘তিনি (মিমেল) পরামর্শ দিতেই পারেন। কিন্তু তার যে প্রধান কাজ ছিল তিনি শরণার্থী বিষয়ে কথা বলবেন, সেই বিষয়ে কথা না বলে তিনি উল্টো যে পরামর্শ দিলেন তাতে আশাহত হলাম। আমরা আশা করেছিলাম রোহিঙ্গা ইস্যুতে তার কাছ থেকে কোনো সুখবর শোনা যাবে। সেটা তো গেলই না বরং আরও দুই তিন বছর তাদের বাংলাদেশে রাখার প্রস্তাব করলেন।’
মানবাধিকার নিয়ে মিশেলের নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থার দাবিরও কোনো কারণ দেখছেন না মিজানুর রহমান খান। এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাধীন কমিশন গঠনের যে কথা বলছেন, সেটা না বলে তিনি বলতে পারতেন আমাদের যে সংস্থাগুলো আছে, মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ যেন আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারে সেসব বিষয়ে কথা বলতে পারতেন।
বর্তমান সময়ে দেশে গুম-খুন হচ্ছে না দাবি করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, যখন গুম খুনের প্রসঙ্গে কথা বলা হচ্ছে তখন দেশ গুম-খুন হচ্ছে না। এর মানে তার সফরকেই তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তার উচিত ছিল রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কথা বলা। তাদের নিজ দেশে ফেরানোর বিষয়ে কথা বলা। আমেরিকা যখন বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- পরিচালনা করে তখন আমরা জাতিসংঘের কোনো বক্তব্য পাই না।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনারের সঙ্গে সব বিষয়ে একমত হতে পারেননি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম। তিনি বলেন, ‘তিনি (মিশেল ব্যাশেলেত) আমাদের এখানের ডেথ প্যানাল্টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু ডেথ প্যানাল্টি থাকার কারণে এসিড নিক্ষেপ অনেকাংশেই কমেছে। এখন ধর্ষণের বিরুদ্ধে জনদাবির মুখে ডেথ প্যানাল্টি করা হয়েছে। এসব বিষয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের কিছু তফাত আছে।’
নিরপেক্ষ তদন্ত সংস্থার বিষয়ে মিশেল ব্যাশেলেত যে দাবি করেছেন তার দাবির প্রসঙ্গে সহমত পোষণ করেন নাছিমা বেগম। সেই সঙ্গে তিনি মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশারী করার মতামত ব্যক্ত করেন।
নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে জবাবদিহির আওতায় আনতে পারি না। যদি আমাদের সেই অধিকার দেওয়া হয় আমরা আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব।’
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার তার চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ জানান। পরে সফরের শেষ দিন বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগগুলো সমাধানে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত সংস্থা গঠনের প্রয়োজনীতার কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মনে করেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, বিরোধী দল এবং সাংবাদিকদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকার এই চর্চার বিষয়ে সরকারে আরও উদার হওয়া উচিত। রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে সংলাপের চর্চার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী এবং তরুণ সম্প্রদায় যেন মতপ্রকাশ করতে পারে।
গত ১৪ আগস্ট সকালে চার দিনের সফরে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলেত। সফরের প্রথম দিন গত রোববার আইনমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। সোমবার নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী। গত মঙ্গলবার তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যান। আর সফরের বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।