ঢাকা ০২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ভাসানচরে

  • আপডেট সময় : ০১:১৬:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • ৬৮ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা শুরুর অংশ হিসেবে নোয়াখালীর ওই দ্বীপ ঘুরে দেখতে গেছে জাতিসংঘের দুই সংস্থার একটি যৌথ প্রতিনিধি দল। ২১ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কর্মকর্তারা রয়েছেন।
গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকা থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে তারা ভাসানচরে যান বলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার শাহ মো. রেজোয়ান হায়াত জানান। তিনি বলেন, “সেখানে কার্যক্রম শুরুর প্রাথমিক কাজ হিসেবে জাতিসংঘের টিমটি ভাসানচরে গেল। তারা কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করবেন।”
শুরুতে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে স্থানান্তরের বিরোধিতা করলেও সেই অবস্থান বদলে সম্প্রতি ভাসানচরে শরণার্থীদের জন্য কাজ শুরু করতে সম্মত হয় জাতিসংঘ। এ বিষয়ে গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তিও করে ইউএনএইচসিআর।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেছিলেন, “জাতিসংঘের সংস্থাসমূহের মাধ্যমে কক্সবাজারের মত ভাসানচরেও মানবিক সহায়তা পরিচালিত হবে। বেসামরিক প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।”
বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআরের যৌথ উদ্যোগে রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি, সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, চিকিৎসা, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং জীবিকার ব্যবস্থা করা হবে ভাসানচরে, যে কাজটি এতদিন সরকার একাই করে আসছিল। বাংলাদেশ সরকার সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গা এবং জাতিসংঘ, সহযোগী সংস্থা ও দে-বিদেশি এনজিওকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবে।
ভাসানচর প্রকল্পের উপ-পরিচালক কমান্ডার আনোয়ারুল কবির সোমবার বলেন, ইউএসএইচসিআর ও ডব্লিওএফপির ২১ সদস্যের দলটি সকাল সাড়ে ৯টায় নৌবাহিনীর জাহাজ ডলফিনে করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দুপুর নাগাদ তারা সেখানে পৌঁছায়।
প্রতিনিধি দলটি সেখানে প্রাথমিকভাবে তিন দিন থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভাসানচরে সাপ্লাই চেইন কীরকম হবে, তাদের অফিস, স্টোরেজ এবং মানবিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়ে তারা কাজ করবেন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের সাথেও কথা বলতে পারেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।”
ভাসান চরে চলাচলের সুবিধার জন্য প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি যানবাহনও জাহাজে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মিয়ানমারে দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে রয়েছে। ২০১৭ সালে তার সঙ্গে যোগ হয় আরও ৭ লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে ১১ লাখ রোহিঙ্গার সহাতায় জাতিসংঘ কাজ করে যাচ্ছিল। তবে কক্সবাজারের উপর চাপ কমাতে বাংলাদেশ সরকার যখন রোহিঙ্গাদের একাংশকে নোয়াখালীর জনবিরল দ্বীপ ভাসানচরে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়, তাতে শুরুতে বিরোধিতা করে বিশ্ব সংস্থাটি। এর মধ্যে গত দেড় বছরে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে মানানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়, আর তাতে সফলতাও আসে। বর্তমানে ভাসান চরে সাড়ে ১৮ হাজারের মত রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন বলে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল ভাসানচরে

আপডেট সময় : ০১:১৬:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : ভাসানচরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মানবিক সহায়তা শুরুর অংশ হিসেবে নোয়াখালীর ওই দ্বীপ ঘুরে দেখতে গেছে জাতিসংঘের দুই সংস্থার একটি যৌথ প্রতিনিধি দল। ২১ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) কর্মকর্তারা রয়েছেন।
গতকাল সোমবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকা থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে তারা ভাসানচরে যান বলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার শাহ মো. রেজোয়ান হায়াত জানান। তিনি বলেন, “সেখানে কার্যক্রম শুরুর প্রাথমিক কাজ হিসেবে জাতিসংঘের টিমটি ভাসানচরে গেল। তারা কয়েকদিন সেখানে অবস্থান করবেন।”
শুরুতে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার থেকে স্থানান্তরের বিরোধিতা করলেও সেই অবস্থান বদলে সম্প্রতি ভাসানচরে শরণার্থীদের জন্য কাজ শুরু করতে সম্মত হয় জাতিসংঘ। এ বিষয়ে গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তিও করে ইউএনএইচসিআর।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন বলেছিলেন, “জাতিসংঘের সংস্থাসমূহের মাধ্যমে কক্সবাজারের মত ভাসানচরেও মানবিক সহায়তা পরিচালিত হবে। বেসামরিক প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এখানে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।”
বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআরের যৌথ উদ্যোগে রোহিঙ্গা নাগরিকদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি, সুপেয় পানি, পয়ঃনিষ্কাশন, চিকিৎসা, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং জীবিকার ব্যবস্থা করা হবে ভাসানচরে, যে কাজটি এতদিন সরকার একাই করে আসছিল। বাংলাদেশ সরকার সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গা এবং জাতিসংঘ, সহযোগী সংস্থা ও দে-বিদেশি এনজিওকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবে।
ভাসানচর প্রকল্পের উপ-পরিচালক কমান্ডার আনোয়ারুল কবির সোমবার বলেন, ইউএসএইচসিআর ও ডব্লিওএফপির ২১ সদস্যের দলটি সকাল সাড়ে ৯টায় নৌবাহিনীর জাহাজ ডলফিনে করে ভাসানচরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। দুপুর নাগাদ তারা সেখানে পৌঁছায়।
প্রতিনিধি দলটি সেখানে প্রাথমিকভাবে তিন দিন থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “ভাসানচরে সাপ্লাই চেইন কীরকম হবে, তাদের অফিস, স্টোরেজ এবং মানবিক কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়ে তারা কাজ করবেন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের সাথেও কথা বলতে পারেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।”
ভাসান চরে চলাচলের সুবিধার জন্য প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি যানবাহনও জাহাজে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মিয়ানমারে দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে রয়েছে। ২০১৭ সালে তার সঙ্গে যোগ হয় আরও ৭ লাখ রোহিঙ্গা। কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে ১১ লাখ রোহিঙ্গার সহাতায় জাতিসংঘ কাজ করে যাচ্ছিল। তবে কক্সবাজারের উপর চাপ কমাতে বাংলাদেশ সরকার যখন রোহিঙ্গাদের একাংশকে নোয়াখালীর জনবিরল দ্বীপ ভাসানচরে নেওয়ার উদ্যোগ নেয়, তাতে শুরুতে বিরোধিতা করে বিশ্ব সংস্থাটি। এর মধ্যে গত দেড় বছরে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেওয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে মানানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়, আর তাতে সফলতাও আসে। বর্তমানে ভাসান চরে সাড়ে ১৮ হাজারের মত রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন বলে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে।