ঢাকা ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
তিস্তায় নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে হাজারো মানুষ

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’

  • আপডেট সময় : ০৫:৩৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৮৭ বার পড়া হয়েছে

মঙ্গলবার দুপুরে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতুসংলগ্ন নদীতে নেমে কয়েক হাজার মানুষ প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচি পালন করেন। ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে পদযাত্রা শুরু করেছে তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এ পদযাত্রায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ তিস্তাপাড়ের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার পর এ কর্মসূচি শুরু হয়। উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ১১টি পয়েন্টে এ কর্মসূচি একসঙ্গে হয়েছে। গণপদযাত্রাটি লালমনিরহাট প্রান্তের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
এ পর্যায়ে তিস্তা নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানান আন্দোলনকারীরা। বেলা দেড়টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতুসংলগ্ন নদীতে নেমে কয়েক হাজার মানুষ এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ভারত বছরের পর বছর তিস্তা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছে যার মাশুল দিচ্ছে বাংলাদেশের পাঁচ জেলার অন্তত দুই কোটি মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে এসব এলাকার মানুষ ফসল ফলাতে পারে না। আবার বন্যার সময় হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দেওয়ায় ব্যাপক এলাকা ভাঙনের শিকার হয়। প্রায় এক ঘণ্টা আন্দোলনকারীরা পানিতে অবস্থান করেন।

প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব (দুলু), সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

ছবি সংগৃহীত

আসাদুল হাবিব বলেন, ‘বহমান তিস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়েছি, কিন্তু পানি নাই। তিস্তা মরুভূমি হয়ে গেছে। গতকাল (সোমবার) বিভিন্ন কর্মসূচি ও আজ (মঙ্গলবার) সকালের পদযাত্রায় আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবি করে যাচ্ছি। এখন আমরা তিস্তার পানিতে নেমে বিশ্ববাসীকে দেখাতে চাই, আসলে তিস্তায় কোন পানি নেই। আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়া হোক।’

আসাদুল হাবিব আরও বলেন, ‘তিস্তা একসময় এই এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। সেখানে মানুষ ছিন্নমূল হয়েছে, ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে। কর্মহীন মানুষের সংখ্যা দিন দিন রংপুরে বেড়েই যাচ্ছে। দুই কোটি মানুষের জীবনরেখা তিস্তা নদী। এই নদীকে রক্ষা না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাব না।’

এর আগে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের তিস্তা সড়কসেতু থেকে গণপদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিন কিলোমিটার দূরে কাউনিয়া উপজেলায় পথযাত্রাটি পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে আবার তিস্তা সেতুর দিকে যায়।

ছবি সংগৃহীত

তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে অনুষ্ঠানরত স্মরণকালের এই বৃহৎ কর্মসূচিতে যোগ দেন এ অঞ্চলের সর্বস্তরের লাখো মানুষ। প্রথম দিনের মতো মঙ্গলবার সমাপনী দিনেও সকাল থেকেই ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। সেইসঙ্গে প্রতিবাদ হিসেবে দেশীয় সংগীত, নৃত্য, খেলাধুলা চলেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচিতেও সকাল থেকেই তিস্তা নদীর তীরে জমে উঠেছে মানুষের ঢল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে তিস্তার দুই পাড়ের এই সমাবেশস্থল। তিস্তাপাড়ে হাজারো মানুষ ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগান সম্বলিত পতাকাসহ ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হন।

৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশির ভাগ সময়ে এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। ফলে অসময়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিচ্ছে, বছর বছর বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

এমন পরিস্থিতিতে নদী গবেষক ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তরের পাঁচ জেলার দুই কোটি মানুষের জীবনমান রক্ষায় একমাত্র সমাধান হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। নদীকেন্দ্রিক কৃষিজমি রক্ষা, ভাঙন রোধসহ চরগুলো রক্ষায় সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো উজানের পলিতে নদীর বুক ভরাট হলে স্বল্প পানিতে প্রতিবছর অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। তারা মনে করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি তিস্তা নদীর সুরক্ষার বিষয়টিও এখন জরুরি।

তিস্তাকে সুরক্ষা করা না গেলে শুধু জীবন জীবিকাই নয় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে নদী বিস্তৃত ২ হাজার বর্গকিলোমিটার জনপদের মানুষ। এ কারণে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

ছবি সংগৃহীত

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ওইদিন তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচটি জেলার ১১টি স্থানে একসঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি নদীপারের হাজারো বাসিন্দা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও।

মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিস্তাপারের ১১টি স্থানে অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবার কথা। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, হাফিজ উদ্দিন আহমদসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

তিস্তায় নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে হাজারো মানুষ

‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’

আপডেট সময় : ০৫:৩৬:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে পদযাত্রা শুরু করেছে তিস্তা রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এ পদযাত্রায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ তিস্তাপাড়ের সর্বস্তরের মানুষ অংশ নিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার পর এ কর্মসূচি শুরু হয়। উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলায় ১১টি পয়েন্টে এ কর্মসূচি একসঙ্গে হয়েছে। গণপদযাত্রাটি লালমনিরহাট প্রান্তের তিস্তা ব্রিজ থেকে শুরু হয়ে রংপুরের কাউনিয়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
এ পর্যায়ে তিস্তা নদীতে নেমে ভারতের পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানান আন্দোলনকারীরা। বেলা দেড়টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতুসংলগ্ন নদীতে নেমে কয়েক হাজার মানুষ এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ভারত বছরের পর বছর তিস্তা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেছে যার মাশুল দিচ্ছে বাংলাদেশের পাঁচ জেলার অন্তত দুই কোটি মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে এসব এলাকার মানুষ ফসল ফলাতে পারে না। আবার বন্যার সময় হঠাৎ করে পানি ছেড়ে দেওয়ায় ব্যাপক এলাকা ভাঙনের শিকার হয়। প্রায় এক ঘণ্টা আন্দোলনকারীরা পানিতে অবস্থান করেন।

প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব (দুলু), সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, জেলা বিএনপির আহবায়ক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

ছবি সংগৃহীত

আসাদুল হাবিব বলেন, ‘বহমান তিস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়েছি, কিন্তু পানি নাই। তিস্তা মরুভূমি হয়ে গেছে। গতকাল (সোমবার) বিভিন্ন কর্মসূচি ও আজ (মঙ্গলবার) সকালের পদযাত্রায় আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দাবি করে যাচ্ছি। এখন আমরা তিস্তার পানিতে নেমে বিশ্ববাসীকে দেখাতে চাই, আসলে তিস্তায় কোন পানি নেই। আমরা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই। আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুযায়ী পানির ন্যায্য হিস্যা দেওয়া হোক।’

আসাদুল হাবিব আরও বলেন, ‘তিস্তা একসময় এই এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছে। সেখানে মানুষ ছিন্নমূল হয়েছে, ভিক্ষুকে পরিণত হয়েছে। কর্মহীন মানুষের সংখ্যা দিন দিন রংপুরে বেড়েই যাচ্ছে। দুই কোটি মানুষের জীবনরেখা তিস্তা নদী। এই নদীকে রক্ষা না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে সরে যাব না।’

এর আগে মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের তিস্তা সড়কসেতু থেকে গণপদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিন কিলোমিটার দূরে কাউনিয়া উপজেলায় পথযাত্রাটি পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে আবার তিস্তা সেতুর দিকে যায়।

ছবি সংগৃহীত

তিস্তা বিস্তৃত রংপুর, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও কুড়িগ্রামের ১১টি পয়েন্টে অনুষ্ঠানরত স্মরণকালের এই বৃহৎ কর্মসূচিতে যোগ দেন এ অঞ্চলের সর্বস্তরের লাখো মানুষ। প্রথম দিনের মতো মঙ্গলবার সমাপনী দিনেও সকাল থেকেই ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করেছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি’। সেইসঙ্গে প্রতিবাদ হিসেবে দেশীয় সংগীত, নৃত্য, খেলাধুলা চলেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচিতেও সকাল থেকেই তিস্তা নদীর তীরে জমে উঠেছে মানুষের ঢল। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে তিস্তার দুই পাড়ের এই সমাবেশস্থল। তিস্তাপাড়ে হাজারো মানুষ ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগান সম্বলিত পতাকাসহ ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হন।

৩১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা অববাহিকার ১১৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে। তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়া সত্ত্বেও ভারত একতরফা বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রায় ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য পানি ছাড়ে। যে পানি আশীর্বাদ না হয়ে বেশির ভাগ সময়ে এ দেশের মানুষের জন্য বয়ে আনছে অভিশাপ। ফলে অসময়ে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিচ্ছে, বছর বছর বাড়ছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

এমন পরিস্থিতিতে নদী গবেষক ও উন্নয়ন বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্তরের পাঁচ জেলার দুই কোটি মানুষের জীবনমান রক্ষায় একমাত্র সমাধান হচ্ছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। নদীকেন্দ্রিক কৃষিজমি রক্ষা, ভাঙন রোধসহ চরগুলো রক্ষায় সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। নয়তো উজানের পলিতে নদীর বুক ভরাট হলে স্বল্প পানিতে প্রতিবছর অনাকাঙ্ক্ষিত বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। তারা মনে করছেন, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি তিস্তা নদীর সুরক্ষার বিষয়টিও এখন জরুরি।

তিস্তাকে সুরক্ষা করা না গেলে শুধু জীবন জীবিকাই নয় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে নদী বিস্তৃত ২ হাজার বর্গকিলোমিটার জনপদের মানুষ। এ কারণে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি পালন করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন।

ছবি সংগৃহীত

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। ওইদিন তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচটি জেলার ১১টি স্থানে একসঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি নদীপারের হাজারো বাসিন্দা এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও।

মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিস্তাপারের ১১টি স্থানে অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবার কথা। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, হাফিজ উদ্দিন আহমদসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।