ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কী ভাবছে চীন

  • আপডেট সময় : ১১:৩০:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কার্বন নিঃসরণের হারে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। চীনে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের হার যুক্তরাষ্ট্রে মাথাপিছু নিঃসরণ হারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। ২০০৬ সালে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমণকারী দেশ ছিল চীন। বর্তমানে বিশ্বে যে পরিমাণ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গত হয়, তার এক–চতুর্থাংশের বেশির জন্য দায়ী করা হয় চীনকে।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে চীন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জানান, ২০৬০ সাল নাগাদ দেশটি কার্বন ডাই–অক্সাইড নির্গমন ধীরে ধীরে কমিয়ে আনবে। তবে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী ও নীতিমালাবিষয়ক বিজ্ঞানীদের দল ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্র্যাকার বলছে, সে লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে চীন এখনো যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।
চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জানান, ২০২৬ সাল থেকে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনবে চীন। দেশটি বিদেশে নতুন কোনো কয়লাচালিত প্রকল্প নির্মাণ করবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি। তবে বিভিন্ন দেশের সরকার ও পরিবেশবিদদের অভিযোগ, পরিকল্পনা মাফিক এগোচ্ছে না চীন।
বেইজিংভিত্তিক টিসিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে চীনকে। এর বদলে পারমাণবিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর উৎপাদন বাড়াতে হবে।
প্যারিসভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট সায়েন্সের গবেষক ফিলিপ সিয়াইস জানান, নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। কার্বন নিঃসরণের হার কমাতে হলে চীনকে পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার পাশাপাশি নতুন কেন্দ্রের সক্ষমতা কমাতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
এই শীতে বিদ্যুৎ–ঘাটতি এড়াতে স্বল্প মেয়াদে কয়লাখনিগুলোকে উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে বেইজিং। টিসিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলেন, চীনে ২০৫০ সাল নাগাদ পারমাণবিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়া উচিত। আর সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সৌর প্যানেলসহ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উৎপাদনে চীন যেভাবে এগিয়ে রয়েছে, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। বায়ুদূষণ মোকাবিলায় সবুজ প্রযুক্তির ব্যবহারকে স্বাগত জানিয়েছিল বেইজিং। বায়ুদূষণ ইস্যুটি চীনের বিভিন্ন শহরে গুরুতর সমস্যা বলে বিবেচিত।
চীন সরকার আরও বিশ্বাস করে তাদের বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটি লাখো নাগরিকের জন্য চাকরি ও আয় নিশ্চিত করতে পারবে, পাশাপাশি বিদেশের তেল ও গ্যাসের ওপর চীনের নির্ভরতা কমবে। ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের ইয়ে চাও বলেন, ‘বৈশ্বিকভাবে জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়ায় চীন এরই মধ্যে এগিয়ে রয়েছে। যেসব কারণগুলোর বদৌলতে আমরা অত্যন্ত সস্তায় সবুজ প্রযুক্তি কিনতে পারছি তার একটি চীন।’
অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি পরিমাণে সৌরশক্তি উৎপাদন করে চীন। তাদের বিপুলসংখ্যক জনসংখ্যার তুলনায় এ পরিমাণটা বেশি নয়। তবে দেশটি কোন পথে এগোচ্ছে, তা বোঝার একটি সংকেত এটি।
২০২০ সালে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় তিন গুণের বেশি বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছে চীন। দেশটি বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ অজীবাশ্ম জ্বালানি উৎস থেকে তাদের জ্বালানি উৎপাদনের পরিমাণ ২৫ শতাংশ হওয়া উচিত। তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করেন, আরও আগেই দেশটির সে লক্ষ্যে পৌঁছানো উচিত।
চীনে এখন কেনা গাড়িগুলোর প্রতি ২০টির একটি বিদ্যুৎচালিত। চীনা কর্মকর্তা ও গাড়ি শিল্প প্রতিনিধিরা আভাস দিয়েছেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ চীনে যতগুলো নতুন গাড়ি বিক্রি হবে, তার প্রায় সব কটি পুরোপুরি বিদ্যুৎচালিত নয়তো একাধিক জ্বালানিচালিত হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেট্রল ও ডিজেলচালিত গাড়ির তুলনায় বিদ্যুৎচালিত গাড়িতে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ প্রত্যাশিতভাবে কম। এটিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, মোট কার্বন নিঃসরণের এক–চতুর্থাংশ হয় পরিবহন জ্বালানি থেকে। এর মধ্যে সড়কপথে চলা পরিবহনগুলো সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গত করে থাকে।
২০২৫ সাল নাগাদ ব্যাটারির ধারণক্ষমতাও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে চীনের। বাকি বিশ্ব সমন্বিতভাবে যে ধারণ ক্ষমতার ব্যাটারি উৎপাদন করে, তার চেয়ে দ্বিগুণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি উৎপাদন করবে বেইজিং। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে চীন নবায়নযোগ্য উৎস থেকে এমন মাত্রায় জ্বালানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে পারবে, যা অতীতে অসম্ভব মনে করা হতো।
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের হার শূন্যে নামিয়ে আনার মানে এই নয় যে চীন কার্বন নিঃসরণ একেবারে বন্ধ করে দিয়ে তা করবে। বরং ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতির সমন্বয় ঘটিয়ে সাধ্যমতো নিঃসরণের হার কমাবে এবং নির্গত হওয়া কার্বন শুষে নেবে। আর এই কাজের জন্য চীন আরও বেশি সবুজায়ন ঘটাতে চায়। আরও বেশি এলাকাজুড়ে গাছপালা লাগানোর মধ্য দিয়েও সুবিধা পাওয়া যাবে। কারণ, গাছপালা কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে।
বনায়ন কর্মসূচির বদৌলতে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় দ্রুত সবুজ হচ্ছে চীন। মাটির ক্ষয়রোধ ও দূষণ কমানোর লক্ষ্যে এ বনায়ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া বছরে একাধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে বারবার আবাদ করার কারণে জমিগুলো অনেক বেশি সময় ধরে সবুজ গাছে ছেয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে চাইলে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে চীনের সফলতা জরুরি। ল্যানকাস্টার এনভায়রনমেন্ট সেন্টারের অধ্যাপক ডেভিড টাইফিল্ড বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না চীনে কার্বন নিঃসরণের হার কমানো যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে পারব না।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের কিছু বড় সুবিধা রয়েছে। বিশেষ করে, দীর্ঘমেয়াদি কৌশল বাস্তবায়নের জন্য লেগে থাকা এবং বড় আকারে বিনিয়োগের সক্ষমতা রয়েছে দেশটির। তবে নানামুখী পদক্ষেপের মধ্যে থাকা দেশটির পরবর্তী অগ্রাধিকারের বিষয় কী হবে, তা বলা মুশকিল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কী ভাবছে চীন

আপডেট সময় : ১১:৩০:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কার্বন নিঃসরণের হারে এগিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। চীনে মাথাপিছু কার্বন নিঃসরণের হার যুক্তরাষ্ট্রে মাথাপিছু নিঃসরণ হারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। ২০০৬ সালে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমণকারী দেশ ছিল চীন। বর্তমানে বিশ্বে যে পরিমাণ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গত হয়, তার এক–চতুর্থাংশের বেশির জন্য দায়ী করা হয় চীনকে।
স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে চীন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জানান, ২০৬০ সাল নাগাদ দেশটি কার্বন ডাই–অক্সাইড নির্গমন ধীরে ধীরে কমিয়ে আনবে। তবে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানী ও নীতিমালাবিষয়ক বিজ্ঞানীদের দল ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্র্যাকার বলছে, সে লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে চীন এখনো যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।
চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জানান, ২০২৬ সাল থেকে কয়লার ব্যবহার কমিয়ে আনবে চীন। দেশটি বিদেশে নতুন কোনো কয়লাচালিত প্রকল্প নির্মাণ করবে না বলেও আশ্বাস দেন তিনি। তবে বিভিন্ন দেশের সরকার ও পরিবেশবিদদের অভিযোগ, পরিকল্পনা মাফিক এগোচ্ছে না চীন।
বেইজিংভিত্তিক টিসিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে চীনকে। এর বদলে পারমাণবিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর উৎপাদন বাড়াতে হবে।
প্যারিসভিত্তিক ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট সায়েন্সের গবেষক ফিলিপ সিয়াইস জানান, নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত সক্রিয় থাকে। কার্বন নিঃসরণের হার কমাতে হলে চীনকে পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার পাশাপাশি নতুন কেন্দ্রের সক্ষমতা কমাতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
এই শীতে বিদ্যুৎ–ঘাটতি এড়াতে স্বল্প মেয়াদে কয়লাখনিগুলোকে উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে বেইজিং। টিসিংঘুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলেন, চীনে ২০৫০ সাল নাগাদ পারমাণবিক ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৯০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়া উচিত। আর সে লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে সৌর প্যানেলসহ পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উৎপাদনে চীন যেভাবে এগিয়ে রয়েছে, তা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। বায়ুদূষণ মোকাবিলায় সবুজ প্রযুক্তির ব্যবহারকে স্বাগত জানিয়েছিল বেইজিং। বায়ুদূষণ ইস্যুটি চীনের বিভিন্ন শহরে গুরুতর সমস্যা বলে বিবেচিত।
চীন সরকার আরও বিশ্বাস করে তাদের বিপুল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটি লাখো নাগরিকের জন্য চাকরি ও আয় নিশ্চিত করতে পারবে, পাশাপাশি বিদেশের তেল ও গ্যাসের ওপর চীনের নির্ভরতা কমবে। ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের ইয়ে চাও বলেন, ‘বৈশ্বিকভাবে জ্বালানি রূপান্তর প্রক্রিয়ায় চীন এরই মধ্যে এগিয়ে রয়েছে। যেসব কারণগুলোর বদৌলতে আমরা অত্যন্ত সস্তায় সবুজ প্রযুক্তি কিনতে পারছি তার একটি চীন।’
অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি পরিমাণে সৌরশক্তি উৎপাদন করে চীন। তাদের বিপুলসংখ্যক জনসংখ্যার তুলনায় এ পরিমাণটা বেশি নয়। তবে দেশটি কোন পথে এগোচ্ছে, তা বোঝার একটি সংকেত এটি।
২০২০ সালে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় তিন গুণের বেশি বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়িয়েছে চীন। দেশটি বলছে, ২০৩০ সাল নাগাদ অজীবাশ্ম জ্বালানি উৎস থেকে তাদের জ্বালানি উৎপাদনের পরিমাণ ২৫ শতাংশ হওয়া উচিত। তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করেন, আরও আগেই দেশটির সে লক্ষ্যে পৌঁছানো উচিত।
চীনে এখন কেনা গাড়িগুলোর প্রতি ২০টির একটি বিদ্যুৎচালিত। চীনা কর্মকর্তা ও গাড়ি শিল্প প্রতিনিধিরা আভাস দিয়েছেন, ২০৩৫ সাল নাগাদ চীনে যতগুলো নতুন গাড়ি বিক্রি হবে, তার প্রায় সব কটি পুরোপুরি বিদ্যুৎচালিত নয়তো একাধিক জ্বালানিচালিত হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেট্রল ও ডিজেলচালিত গাড়ির তুলনায় বিদ্যুৎচালিত গাড়িতে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ প্রত্যাশিতভাবে কম। এটিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, মোট কার্বন নিঃসরণের এক–চতুর্থাংশ হয় পরিবহন জ্বালানি থেকে। এর মধ্যে সড়কপথে চলা পরিবহনগুলো সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গত করে থাকে।
২০২৫ সাল নাগাদ ব্যাটারির ধারণক্ষমতাও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে চীনের। বাকি বিশ্ব সমন্বিতভাবে যে ধারণ ক্ষমতার ব্যাটারি উৎপাদন করে, তার চেয়ে দ্বিগুণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারি উৎপাদন করবে বেইজিং। পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, এর মধ্য দিয়ে চীন নবায়নযোগ্য উৎস থেকে এমন মাত্রায় জ্বালানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে পারবে, যা অতীতে অসম্ভব মনে করা হতো।
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের হার শূন্যে নামিয়ে আনার মানে এই নয় যে চীন কার্বন নিঃসরণ একেবারে বন্ধ করে দিয়ে তা করবে। বরং ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতির সমন্বয় ঘটিয়ে সাধ্যমতো নিঃসরণের হার কমাবে এবং নির্গত হওয়া কার্বন শুষে নেবে। আর এই কাজের জন্য চীন আরও বেশি সবুজায়ন ঘটাতে চায়। আরও বেশি এলাকাজুড়ে গাছপালা লাগানোর মধ্য দিয়েও সুবিধা পাওয়া যাবে। কারণ, গাছপালা কার্বন ডাই–অক্সাইড শোষণ করে।
বনায়ন কর্মসূচির বদৌলতে অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় দ্রুত সবুজ হচ্ছে চীন। মাটির ক্ষয়রোধ ও দূষণ কমানোর লক্ষ্যে এ বনায়ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া বছরে একাধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে বারবার আবাদ করার কারণে জমিগুলো অনেক বেশি সময় ধরে সবুজ গাছে ছেয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে চাইলে কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে চীনের সফলতা জরুরি। ল্যানকাস্টার এনভায়রনমেন্ট সেন্টারের অধ্যাপক ডেভিড টাইফিল্ড বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না চীনে কার্বন নিঃসরণের হার কমানো যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে পারব না।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের কিছু বড় সুবিধা রয়েছে। বিশেষ করে, দীর্ঘমেয়াদি কৌশল বাস্তবায়নের জন্য লেগে থাকা এবং বড় আকারে বিনিয়োগের সক্ষমতা রয়েছে দেশটির। তবে নানামুখী পদক্ষেপের মধ্যে থাকা দেশটির পরবর্তী অগ্রাধিকারের বিষয় কী হবে, তা বলা মুশকিল।