ঢাকা ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কথাকে কাজে পরিণত করার আহ্বান জাতিসংঘের

  • আপডেট সময় : ০২:১৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশেলে।
গতকাল বুধবার ঢাকায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এখন সময় উদ্যোগ নেওয়ার। আমি বোঝাতে চাইছি, আমরা অনেক কথাই বলেছি, এখন কথাকে কাজে পরিণত করতে হবে। বাংলাদেশের মত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কর্ণপাত করতে হবে।”
আর সেজন্য প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্দ দেওয়ার ওপর জোর দেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘ইয়াং স্কলার্স মিট’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বাংলাদেশ সফররত মিশেল ব্যাশেলে। তিনি বলেন, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে এখন বিশ্ব সবচেয়ে বড় যে ঝুঁকির মোকাবেলা করছে, তা হল জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশের ওপর এর সুগভীর প্রভাব। এক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে মিশেল ব্যাশেলে বলেন, ”এখন আমরা জানি, আমাদের কী করতে হবে। এখন চ্যালেঞ্জ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের সামনে, তাদের বুঝতে হবে যে কোনো উদ্যোগ নিতে যত খরচ, উদ্যোগ না নিলে তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্য চুকাতে হবে।”
রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর গুরুত্ব দিয়ে চিলির সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, অধিকারহীনদের কথা শোনা; সরকার, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের সাথে কাজ করা এবং গঠনমূলক সম্পৃক্ততা জলবায়ু পরিবর্তনের উদ্যোগকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের পেছনে যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি দায়ী, সেসব দেশকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার। তিনি বলেন, ”এটা নাটকীয় শোনালেও সত্যি যে, কিছু দেশ এক্ষেত্রে বেশি দায়ী। সুতরাং আমাদের সবারই দায়িত্ব রয়েছে।
”যেসব দেশ বেশি দায়ী, তারা কম দায়ী কিন্তু বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে সহায়তা কীভাবে করবে, সেজন্য মেকানিজম দরকার, যাতে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো অভিযোজন ও মিটিগেশনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারে, কারণ এটাই করতে হবে দেশগুলোকে।”
বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে বৈষম্যের চিত্র কোভিড মহামারী স্পষ্ট করে দিয়েছে মন্তব্য করে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, “সেই বাস্তবতায় আমরা আর যেতে চাই না, যা আমাদেরকে এখানে নিয়ে এসেছে। সেই পরিস্থিতি, অর্থনীতির সেই দশা ছিল খুবই বৈষম্যের।
“কোভিড-১৯ আমাদের দেখিয়েছে, মহামারী এই বৈষম্যের জন্য দায়ী নয়। সেটা আগে থেকে ওরকমেই ছিল। এটা আমাদের দেখিয়েছে, কেবল উন্নয়নশীল বা গরীব দেশ নয়, ধনী দেশগুলোও এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিল না।”
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানকে কার্যকর করার ওপরও গুরুত্ব দেন মিশেল ব্যাশেলে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা হতে হবে এসডিজি-১৬ এর সাথে সংগতি রেখে, যেখানে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
”জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা, অনলাইন ও অফলাইনে মানুষের মতপ্রকাশের সুযোগ বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির বিষয়গুলোও থাকতে হবে এর মধ্যে।”

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কথাকে কাজে পরিণত করার আহ্বান জাতিসংঘের

আপডেট সময় : ০২:১৭:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাশেলে।
গতকাল বুধবার ঢাকায় এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “এখন সময় উদ্যোগ নেওয়ার। আমি বোঝাতে চাইছি, আমরা অনেক কথাই বলেছি, এখন কথাকে কাজে পরিণত করতে হবে। বাংলাদেশের মত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কর্ণপাত করতে হবে।”
আর সেজন্য প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্দ দেওয়ার ওপর জোর দেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘ইয়াং স্কলার্স মিট’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বাংলাদেশ সফররত মিশেল ব্যাশেলে। তিনি বলেন, মানবাধিকারের ক্ষেত্রে এখন বিশ্ব সবচেয়ে বড় যে ঝুঁকির মোকাবেলা করছে, তা হল জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশের ওপর এর সুগভীর প্রভাব। এক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে মিশেল ব্যাশেলে বলেন, ”এখন আমরা জানি, আমাদের কী করতে হবে। এখন চ্যালেঞ্জ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের সামনে, তাদের বুঝতে হবে যে কোনো উদ্যোগ নিতে যত খরচ, উদ্যোগ না নিলে তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্য চুকাতে হবে।”
রাজনৈতিক সদিচ্ছার উপর গুরুত্ব দিয়ে চিলির সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, অধিকারহীনদের কথা শোনা; সরকার, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের সাথে কাজ করা এবং গঠনমূলক সম্পৃক্ততা জলবায়ু পরিবর্তনের উদ্যোগকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের পেছনে যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি দায়ী, সেসব দেশকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার। তিনি বলেন, ”এটা নাটকীয় শোনালেও সত্যি যে, কিছু দেশ এক্ষেত্রে বেশি দায়ী। সুতরাং আমাদের সবারই দায়িত্ব রয়েছে।
”যেসব দেশ বেশি দায়ী, তারা কম দায়ী কিন্তু বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশকে সহায়তা কীভাবে করবে, সেজন্য মেকানিজম দরকার, যাতে ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো অভিযোজন ও মিটিগেশনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে পারে, কারণ এটাই করতে হবে দেশগুলোকে।”
বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে বৈষম্যের চিত্র কোভিড মহামারী স্পষ্ট করে দিয়েছে মন্তব্য করে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান বলেন, “সেই বাস্তবতায় আমরা আর যেতে চাই না, যা আমাদেরকে এখানে নিয়ে এসেছে। সেই পরিস্থিতি, অর্থনীতির সেই দশা ছিল খুবই বৈষম্যের।
“কোভিড-১৯ আমাদের দেখিয়েছে, মহামারী এই বৈষম্যের জন্য দায়ী নয়। সেটা আগে থেকে ওরকমেই ছিল। এটা আমাদের দেখিয়েছে, কেবল উন্নয়নশীল বা গরীব দেশ নয়, ধনী দেশগুলোও এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত ছিল না।”
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানকে কার্যকর করার ওপরও গুরুত্ব দেন মিশেল ব্যাশেলে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা হতে হবে এসডিজি-১৬ এর সাথে সংগতি রেখে, যেখানে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজকে উৎসাহিত করতে হবে এবং সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
”জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে নির্বাচন কমিশন ও বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা, অনলাইন ও অফলাইনে মানুষের মতপ্রকাশের সুযোগ বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির বিষয়গুলোও থাকতে হবে এর মধ্যে।”