ঢাকা ০৭:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

জরায়ু অপারেশন করতে এসে কিডনি হারালেন তাহমিনা

  • আপডেট সময় : ০৮:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

শয্যাশায়ী তাহমিনা বেগম -ছবি: সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: জরায়ু অপারেশন করতে এসে অনভিজ্ঞ ডাক্তারের ভুলে কিডনি হারিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের তাহমিনা বেগম (৩৮) নামের এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় তাহমিনার বাবা হতদরিদ্র মো. কামরুল আলম এবং মা কহিনুর বেগম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, রামগঞ্জে পূর্ব দেহলা গ্রামের হায়দার আলী মুন্সী বাড়ির মো. কামরুল আলমের মেয়ে তাহমিনা বেগম তার জরায়ু অপারেশনের জন্য গত ৩ জানুয়ারি রামগঞ্জের কেয়ার হাসপাতালে এলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রামগঞ্জের পার্শ্ববর্তী চাটখিল উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক আহম্মেদকে খবর দেন। পরে ২৫ হাজার টাকা চুক্তিতে অ্যানেস্থেসিয়ার ডা. মোস্তাক তাহমিনার জরায়ু অপারেশন করেন। এর ৩ দিন পর তাহমিনা রিলিজ পেয়ে বাড়িতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপারেশনের জায়গায় চরম ব্যথা শুরু হয়।

এরপর ডা. মোস্তাকের পরামর্শে তাহমিনাকে রামগঞ্জ শহরের ফেমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান জরায়ু অপারেশনের ফলে তাহমিনার কিডনি ব্লক হয়ে গেছে। এতে প্রথমে তার কাছ থেকে নেওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা এবং পরে নেওয়া হয় ২০ হাজার টাকা। এরপর ফেমাস হাসপাতালের এমডি ডা. সফিকুর রহমান তাহমিনার আগের অপারেশনের জায়গায় এবং অন্যস্থানে চারবার অপারেশন করেন।

বিষয়টি জানতে একাধিকবার ডা. সফিকুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ফেমাস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঈদুল ফিতরের আগের দিন হাসপাতাল খরচ বাবদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মওকুফ করে তাহমিনাকে রিলিজ দেয়। বর্তমানে তাহমিনা নিজ পিত্রালয়ে শয্যাশায়ী।

গত ৬ এপ্রিল (রোববার) তাহমিনাকে দেখতে গেলে তার বাবা মো. কামরুল আলম মেয়ে কিডনি হারিয়েছেন বলে স্বীকার করেন এবং এমন ভুল চিকিৎসার জন্য বিচারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালের গাইনি সার্জন ডা. নাজমুল হকসহ কয়েকজন অভিজ্ঞ ডাক্তার জানান, তাদের জানামতে মোস্তাক আহম্মেদ সরকারিভাবে একজন অ্যানেস্থেসিয়ার ডাক্তার। তিনি কখনোই জরায়ু কিংবা সিজার অপারেশন করতে পারেন না।

এ ব্যাপারে ডা. মোস্তাক আহম্মেদ জানান, বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে তিনি অপারেশনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তাহমিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাজ করতে গেলে মাঝেমধ্যে ভুলভ্রান্তি হয়।’ লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘জরায়ু কিংবা সিজার অপারেশন করতে হলে অবশ্যই গাইনি সার্জন হতে হবে। ডা. মোস্তাক কীভাবে জরায়ু অপারেশন করেছেন সেটা আমার জানা নেই।’

 

 

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জরায়ু অপারেশন করতে এসে কিডনি হারালেন তাহমিনা

আপডেট সময় : ০৮:১৮:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: জরায়ু অপারেশন করতে এসে অনভিজ্ঞ ডাক্তারের ভুলে কিডনি হারিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের তাহমিনা বেগম (৩৮) নামের এক গৃহবধূ। এ ঘটনায় তাহমিনার বাবা হতদরিদ্র মো. কামরুল আলম এবং মা কহিনুর বেগম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, রামগঞ্জে পূর্ব দেহলা গ্রামের হায়দার আলী মুন্সী বাড়ির মো. কামরুল আলমের মেয়ে তাহমিনা বেগম তার জরায়ু অপারেশনের জন্য গত ৩ জানুয়ারি রামগঞ্জের কেয়ার হাসপাতালে এলে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রামগঞ্জের পার্শ্ববর্তী চাটখিল উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাক আহম্মেদকে খবর দেন। পরে ২৫ হাজার টাকা চুক্তিতে অ্যানেস্থেসিয়ার ডা. মোস্তাক তাহমিনার জরায়ু অপারেশন করেন। এর ৩ দিন পর তাহমিনা রিলিজ পেয়ে বাড়িতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অপারেশনের জায়গায় চরম ব্যথা শুরু হয়।

এরপর ডা. মোস্তাকের পরামর্শে তাহমিনাকে রামগঞ্জ শহরের ফেমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান জরায়ু অপারেশনের ফলে তাহমিনার কিডনি ব্লক হয়ে গেছে। এতে প্রথমে তার কাছ থেকে নেওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা এবং পরে নেওয়া হয় ২০ হাজার টাকা। এরপর ফেমাস হাসপাতালের এমডি ডা. সফিকুর রহমান তাহমিনার আগের অপারেশনের জায়গায় এবং অন্যস্থানে চারবার অপারেশন করেন।

বিষয়টি জানতে একাধিকবার ডা. সফিকুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়ার পরও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ফেমাস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঈদুল ফিতরের আগের দিন হাসপাতাল খরচ বাবদ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মওকুফ করে তাহমিনাকে রিলিজ দেয়। বর্তমানে তাহমিনা নিজ পিত্রালয়ে শয্যাশায়ী।

গত ৬ এপ্রিল (রোববার) তাহমিনাকে দেখতে গেলে তার বাবা মো. কামরুল আলম মেয়ে কিডনি হারিয়েছেন বলে স্বীকার করেন এবং এমন ভুল চিকিৎসার জন্য বিচারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালের গাইনি সার্জন ডা. নাজমুল হকসহ কয়েকজন অভিজ্ঞ ডাক্তার জানান, তাদের জানামতে মোস্তাক আহম্মেদ সরকারিভাবে একজন অ্যানেস্থেসিয়ার ডাক্তার। তিনি কখনোই জরায়ু কিংবা সিজার অপারেশন করতে পারেন না।

এ ব্যাপারে ডা. মোস্তাক আহম্মেদ জানান, বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে তিনি অপারেশনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তাহমিনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাজ করতে গেলে মাঝেমধ্যে ভুলভ্রান্তি হয়।’ লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু হাসান শাহীন বলেন, ‘জরায়ু কিংবা সিজার অপারেশন করতে হলে অবশ্যই গাইনি সার্জন হতে হবে। ডা. মোস্তাক কীভাবে জরায়ু অপারেশন করেছেন সেটা আমার জানা নেই।’