নিজস্ব প্রতিবেদক: সবাইকে শুধু আহ্বান জানিয়ে হবে না, প্রয়োজনে মারধর, এমনকি ‘কতল’ করার কথাও বললেন ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী।
তিনি বলেছেন, এগুলারে পিডান লাগবে, কতল করা লাগবে, এগুলারে মাইর ছাড়া কোনো উপায় নাই। এগুলা দাওয়াতে ফেরবে না।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ।
তিনি বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নর্সের একজন সদস্য এবং বরিশালের চরমোনাই আহছানাবাদ রাশিদিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ১৮ নভেম্বর সরকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্র্নস পুনর্গঠন করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ইসলামের সমুন্নত আর্দশ ও মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসার কার্যক্রমকে বেগবান করার লক্ষ্যে নানা কাজ করে থাকে বলে রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থার ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে।
ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলনের সম্মেলনে সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, হাসিনা ভারত সরকারের পুতুল হিসেবে ছিল। তুমি যেমনে নাচাও তেমনে নাচি পুতুলের কী দোষ। এখন তাদের ফিরিস্তি বাইর হচ্ছে। শেখ হাসিনা কত লক্ষ কোটি টাকা পাচার করছে। তার ছেলে জয়, মেয়ে পুতুল, তার বোন রেহানা লক্ষ লক্ষ টাকা পাচার করছে।
পৃথিবীর ইতিহাসে প্রধানমন্ত্রী, তিনশ এমপি, মন্ত্রী, গুণ্ডা-পাণ্ডাসহ সব ভাগছে। এদের ভারত আশ্রয় দিছে। তাহলে দেখা গেল ভারতই এটার সবকিছু মূল।
সে সময় অনেকেই যে হাসিনার ‘অপেকর্মের পৃষ্ঠপোষক’ ছিল, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই যে অপকর্মগুলো হল, আমরাও তো সাপোর্ট করছি। কীভাবে ভোট হয়ৃ নাই ধরলাম। ১৪, ১৮, ২৪ এ ভোট হয়নি ধরলাম। তারপরও তো আমাদের ছেলে-পেলেরাই, আমাদের লোকজনরাই এই প্রশাসনের লোকসহ সব জায়গায় তারা এই হাসিনার পেছনে থেকে তার অপকর্মগুলোকে সাপোর্ট করে গেছে। এ পর্যায়ে তিনি চিৎকার করে সমবেত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জানতে চান- করছে, কী করে নাই। সমাবেশ থেকে জবাব আসে, করছে।
তারা নিজেরাও দায়ী মন্তব্য করে মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, এখানে আমাদের ভূমিকা আছে না? এখানে আমরাও দায়ী। যখন জঙ্গলে আগুন লাগে তখন কাঁচা-পাকা সব পোড়ে। আমরা সবাই কিন্তু নির্যাতিত, বঞ্চিত, বৈষম্যের শিকার হয়েছি।
সবাইকে শুধু ‘দাওয়াত’ করে পথে আনা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, দাওয়াত দিয়া সব মানুষ হেদায়েত হবে… (আরবিতে কোরআনের আয়াত উল্লেখ করে) তাহলে কেসাসের কথা, খুনের পরিবর্তে খুন- আল্লাহ কেন এই আয়াত নাজিল করল। আল্লাহ জানেন তার কিছু বান্দা আছে এরা চতুস্পদ জানোয়ারের চেয়ে, গরুর দলের চেয়ে খারাপ। এগুলারে পিডান লাগবে, কতল করা লাগবে, এগুলারে মাইর ছাড়া কোনো উপায় নাই। এগুলা দাওয়াতে ফেরবে না। এই যে দলিল।
ইসলামী আন্দোলনের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, যে সমস্ত ইসলামপন্থিরা বলে দাওয়াত দিয়া সব হেদায়েত হবে, এটা সম্পর্ণ কোরআন-হাদিস বিরোধী কথা। আপনাকে প্রয়োজনে মারতে হবে। আপনাকে লড়তে হবে প্রয়োজনে।
সম্প্রতি কদমতলীতে একটি আয়োজন ‘ধ্বংস’ করার উদাহরণ দিয়ে মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, পরশুদিন আমাদের এই কদমতলীতে ওরা বিশাল ডেকপার্টি করছে। যত বলে কেউ শোনে না। শতশত আমাদের মুসল্লি ভাইয়েরা তাওহিদি জনতা যাইয়া পিডাইয়া নাস্তানাবুদ করে, সব ধ্বংস করে দিছে। উলঙ্গ মহিলা প্রায় ২৫ জন ছিল।
কালকে মাদ্রাসায় প্রোগ্রাম করছি। সেখানেও সব পিডাইয়া লড়াইছি। এগুলা এমনে যায়? এগুলারে মারতে হবে। এই যে আমরা এগুলা বাদ দিছি, আমি সেই হাদিসটাই বলছি। যখন তোমরা তোমাদের ঘরে, সমাজে, রাষ্ট্রে অন্যায় দেখবা, প্রথমে শক্তি দিয়া ফিরাইবা। ঈমানের শক্তি না থাকলে তাকে মুখে মুখে বল। খালি মনে মনে ঘৃণা করলে হবে না, সবচেয়ে দুর্বল ঈমান হচ্ছে ওইটা।
দলীয় নেতা-কর্মীদের আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, এখন থেকে প্রস্তুতি নেন নির্বাচন হবেই। আইজ হোক-কাল হোক। আমরা ওয়াদা করি, পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় হাতপাখার দূর্গ গড়ে তুলব। ঘরে ঘরে গিয়ে বলব, আপনারা সব দেখছেন, এবারে ইসলামের বাংলাদেশ দেখেন।