প্রত্যাশা ডেস্ক : দেশের বর্তমান মোট জনসংখ্যায় পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা সাড়ে ১৫ লাখেরও বেশি৷ আট কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন নারীর বিপরীতে পুরুষের সংখ্যা আট কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার তিনজন৷ তৃতীয় লিঙ্গের জনসংখ্যা আট হাজার ৭২৪ জন। সব মিলিয়ে দেশের বর্তমান মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। গত জুলাই মাসে প্রকাশিত জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনের তুলনায় জনসংখ্যা বেড়েছে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন উঠে এসেছে এ তথ্য। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজেদের কার্যালয়ের মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর আগে গত জুলাইয়ে বিবিএস প্রকাশিত জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই সংখ্যা পাওয়া গেছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১। অর্থাৎ যাচাই-বাছাইয়ে করে নতুন যুক্ত হয়েছেন আরও প্রায় ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ২৯৫ জন। প্রাথমিক হিসাবে বিভিন্ন কারণে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ বাদ পড়েছিলেন। জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে নারী মহিলা আট কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন, পুরুষ আট কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার তিনজন। সে হিসাবে দেশে পুরুষের তুলনায় নারী বেশি ১৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৮১ জন। ২০১১ সালে দেশের জনসংখ্যার ধর্মভিত্তিক বিভাজনে দেখা যায়, মুসলিম জনগোষ্ঠী ছিল ৯০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই হার বেড়ে হয়েছে ৯১ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১১ সালে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশে। এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশে। আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা আগে ছিল শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ। এখন তা কমে হয়েছে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এ ছাড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনসংখ্যা ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন।
বেশি বসবাস ঢাকা বিভাগে, সবচেয়ে কম বরিশালে
জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের মোট জনসংখ্যার মধ্যে গ্রামে বসবাস করে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৬৫ হাজার ৮০৪ জন, শহরে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ ৬৩ হাজার ১০৭ জন। সে হিসাবে গ্রামের জনসংখ্যা শহরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। বিভাগভিত্তিক জনসংখ্যা বিভাজনে দেখা যায়, বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা সবচেয়ে কম ৯৩ লাখ ২৫ হাজার ৮২০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে তিন কোটি ৪১ লাখ ৭৮ হাজার ৬১২ জন, ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ চার কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৬ জন। এছাড়া খুলনা বিভাগে এক কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ২১৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে এক কোটি ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭২ জন, রাজশাহী বিভাগে দুই কোটি সাত লাখ ৯৪ হাজার ১৯ জন, রংপুর বিভাগে এক কোটি ৮০ লাখ ২০ হাজার ৭১ জন এবং সিলেট বিভাগে এক কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার ১১৩ জন বসবাস করছেন। দেশে বস্তি এলাকায় মোট জনসংখ্যা ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৩০২ জন। এর মধ্যে পুরুষ আট লাখ ৯৭ হাজার ৪০৩ জন, নারী আট লাখ ৩৮ হাজার ৪৪৩ জন। এ ছাড়া ভাসমান জনসংখ্যা ২২ হাজার ১৮৫ জন। এদিকে দেশে মোট ৩৯ লাখ ৫০ হাজার ১৫৫টি পরিবার প্রবাসী আয় গ্রহণ করে। রেমিট্যান্স গ্রহণে এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগ। এই বিভাগের ৪২ দশমিক ৪৩ শতাংশ খানা রেমিট্যান্স গ্রহণ করে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে দেশে প্রথম জনশুমারি করা হয়। সে সময় জনসংখ্যা পাওয়া গিয়েছিল ছিল সাত কোটি ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৭১ জন। ১৯৮১ সালের শুমারিতে তা বেড়ে হয় আট কোটি ৭১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ জন। ১৯৯১ সালের শুমারিতে জনসংখ্যা পাওয়া যায় ১০ কোটি ৬৩ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২ জন। সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৪৩ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৩ জন।
দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বী কমেছে
দেশের বর্তমান মোট জনসংখ্যায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা কমেছে। জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন উঠে এসেছে এ তথ্য। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নিজেদের কার্যালয়ের মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০১১ সালে দেশের জনসংখ্যার ধর্মভিত্তিক বিভাজনে দেখা যায়, ২০১১ সালে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ছিল ৮.৫৪ শতাংশ। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৯৬ শতাংশে। অন্যদিকে মুসলিম জনগোষ্ঠী ছিল ৯০.৩৯ শতাংশ। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই হার বেড়ে হয়েছে ৯১.০৮ শতাংশ। এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৩১ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশে। আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা আগে ছিল শূন্য দশমিক ১৪ শতাংশ। এখন তা কমে হয়েছে শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এছাড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী জনসংখ্যা ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের আট কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন নারীর বিপরীতে পুরুষের সংখ্যা আট কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার তিনজন। তৃতীয় লিঙ্গের জনসংখ্যা আট হাজার ৭২৪ জন। সব মিলিয়ে দেশের বর্তমান মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন।