ঢাকা ০৭:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
১৩ নভেম্বর কী হবে?

জনমনে আতঙ্ক, সতর্ক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

  • আপডেট সময় : ০৯:১১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

কোলাজ ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহজুড়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে স্কুলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। এসব ঘটনায় চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচি কেন্দ্র করে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কে বা কারা এ অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে সেটা জানা যায়নি। গাজীপুরে আলাদা তিন স্থানে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত জেলার শ্রীপুর, মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস ও চক্রবর্তী এলাকায় এসব অগ্নিসংযোগ করা হয়। তিনটি ঘটনায় বাসগুলো পুড়ে গেলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে মঙ্গলবার ময়মনসিংহে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দিলে চালক নিহত হন। গত দু-তিনদিনে ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রাজনৈতিক কার্যালয় লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে ককটেল। এসব ঘটনায় দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।

গত দেড় বছর ধরে আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতারা হয় দেশের বাইরে, না হয় কারাগারে অবস্থান করছেন। নির্বাহী আদেশের মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে দলটির কার্যক্রম। সেই আওয়ামী লীগ হুট করে ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করায় নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসন। কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে প্রথমে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিলেন এবং তারপর পরই ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ ডাকলেন। আজ তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন একটি মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ হওয়া কথা।

রাজনীতিবিদ ও রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের কর্মসূচি পালনে খুব বেশি প্রভাব না পড়লেও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা বাড়বে। তবে জ্বালাও-পোড়াও করে এখন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সমর্থন পাওয়া যাবে না। আর গত তিন দিনে যেখানে-সেখানে ককটেল বিস্ফোরণ এবং আগুনের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবার মনে প্রশ্ন- আসলে ১৩ নভেম্বর কী হতে যাচ্ছে। নাগরিকদের দুশ্চিন্তা- আবারো কি রাস্তায় নাশকতার ভয় নিয়ে চলাচল করতে হবে? পরিস্থিতি এড়াতে তারা নিজেরাই বাসা থেকে বের না হওয়া, অতি প্রয়োজন ছাড়া কোথাও না যাওয়া, গাড়ি বের না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে- নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন।

গত সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম দেখা গেছে। সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যমতে, ১ থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ও গত দুই দিনে ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১৭টি মামলা দায়ের ও ৫০ জন গ্রেফতার করা হয়েছে।

ছবি সংগৃহীত

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ১২টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ি এলাকায় আলম পরিবহন নামে একটি বাসে আগুনের ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় এক হেলপারের মৃত্যু হয়েছে।

সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুন দেওয়ার প্রেক্ষাপটে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিজিবির দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’
এর আগে গত ৮ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে রাজধানীর ১৪২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যাপক ও সমন্বিত নিরাপত্তা মহড়া চালিয়েছে। ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিটের প্রায় ৭ হাজার পুলিশ সদস্য এই মহড়ায় অংশ নেন, যা বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলে। এতে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন, বাংলাদেশ সচিবালয়, হাইকোর্ট, বঙ্গভবন এবং তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ডিএমপি ১০ নভেম্বর থেকে ধীরে ধীরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান ও আদালতের আশপাশে সব ধরনের র‌্যালি, সভা, মানববন্ধন, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। পরিবার, হোটেল, মেস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তল্লাশি অভিযান ও চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ছবি সংগৃহীত

স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে অথবা বন্ধ: কখন কোথায় ককটেল বিস্ফারণ হচ্ছে, আগুনে পুড়ে যাচ্ছে বাস, সেই শঙ্কায় গত দুদিন ধরেই অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। তারা বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত চান। কারণ তারা জেনেছেন, রাজধানীতে যখন-তখন ককটেল বিস্ফারণ ঘটছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসও। বুধবার (১২ নভেম্বর) প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জরুরি ক্লাস অনলাইনে করার কথা জানিয়ে দেয়। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো ছুটির নোটিশ পাঠিয়ে দেয়। যদিও সরকারি কোনো স্কুলে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে অনলাইনে ক্লাস বাতিল করার নোটিশ জারি করা হয়।

‘লকডাউন’ ঘিরে জনমনে আতঙ্ক: ও লেভেলের এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘অভিভাবকরা সন্তানকে রাস্তায় এসব দিনে কিসের ভরসায় পাঠাবে। আমি ছেলের স্কুল যাওয়া নিজে থেকে বন্ধ করেছি। জন্ম-মৃত্যু আল্লাহর হাতে, তাই বলে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে না, এমন কথা কোথায় লেখা আছে।’ বাসায় বসে থাকলে লকডাউন পালন করা হয়ে যাবে কিনা, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার নিরাপত্তা আমাকেই নিশ্চিত করতে হবে।’

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘অবশ্যই আমরা শঙ্কিত। তবে আমরা মনে করি না এটি বড় আকারের কোনো সমস্যা হবে। আমরা আশাবাদী যে সরকার এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবে। আমরা কিছুটা কাজও করছি। আমি আশা করি সব রাজনৈতিক দল বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি রাখবে, যেন কেউ এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। আমরা সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করি। ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য অন্তত শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ব্যবসায়ী নেতা বলেন ‘ব্যবসায়ী হিসেবে আমরা দেশের মানুষকে বিপদে ফেলতে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনোই সমর্থন করি না। অতীতে আমরা সমর্থন করিনি, এখনো করি না এবং ভবিষ্যতেও করবো না। এটি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।’

ছবি সংগৃহীত

গাড়ি কোথায় রাখবো সেই চিন্তাতেই দুইদিন কোথাও যেতে পারছি না উল্লেখ করে নাম প্রকাশ না করে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার গাড়ি আমি নিজে চালাই। আমাদের এখানে বেশিরভাগ জায়গায় পার্কিং নাই, বাধ্য হয়ে রাস্তায় গাড়ি রাখতে হয়। এখানে-সেখানে আগুন লাগাতে দেখে ভয়েই মরে যাচ্ছি। গাড়ি কোথায় রাখবো, আর কী দুর্ঘটনা ঘটবে কে জানে। তাই দুদিন হলো মেট্রোতে যাতায়াত করছি।’

১৩ নভেম্বর কী হবে প্রশ্নে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ চেষ্টা করবে নাশকতা করার। তবে যতটুকু তারা নাশকতা করবে, তার চেয়ে বেশি তারা এটা নিয়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। আপাতত ভীতি ছড়াতে পারলেও তাদের বেশ ফায়দা। অপরদিকে, এটা সত্য যে, অনেক আগে থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন অবস্থান করছে। কিন্তু তাদেরকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে সরকারের গাফিলতি ও পিছুটান আছে বলে মনে হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান এটাকে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা জাগানোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যা যা ঘটছে এসব চাইলে ঘটানো যায়। আপনি অর্থ বরাদ্দ দিয়ে, লোক ভাড়া করে এসব করাতে পারবেন। ২০১৩-১৪ সালের দিকে আওয়ামী লীগ সরকার শক্ত অবস্থায় থাকার পরেও অগ্নিসন্ত্রাস মোকাবিলা করতে পেরেছিল, থামাতে পেরেছিল? আওয়ামী লীগ আসলে তাদের উপস্থিতি প্রমাণ করতে চাইছে। কারণ, এক বছরেরও বেশি হলো তারা কোথাও নেই। শেখ হাসিনার যে বক্তৃতা, সাক্ষাৎকারগুলো সাম্প্রতিক দেখা যাচ্ছে- সেখানেও এই ‘দেখিয়ে দেওয়ার’ বিষয়টা আছে।’ জাহেদ উর রহমান আরো বলেন, ‘এই কর্মসূচির বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। তবে দলের লোকজনের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ, তাদের মধ্যে সাহস সঞ্চার হবে। লক্ষ্য করে দেখবেন, মিছিলের স্থায়িত্ব কাল একটু একটু করে বাড়ছে, মানুষ একটু হলেও বাড়ছে।’
এই যে আওয়ামী লীগ বেরিয়ে আসতে চাইছে- সেটা নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগেও এই সাহস ছিল না, সত্য। অনেকগুলো বিষয় সম্পৃক্ত থাকলেও থাকতে পারে। আবার আন্তর্জাতিক পরিসর থেকে আওয়ামী লীগকে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে দেওয়ার ন্যারেটিভ তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। সেই চাপটা আছে। রাজনীতি করতে না দেওয়ার কারণে নানা সংকট তৈরি হচ্ছে এবং আগামীতেও হবে বলে শঙ্কা আছে।’

 

রাজধানী ফাঁকা: রাজধানীজুড়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক দিনের তুলনায় বুধবার অনেক কম দেখা গেছে। সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে। রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রমও জোরদার করা হয়।

রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও থানায়-থানায় নিরাপত্তা জোরদার: কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বর লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই।

গত কয়েক দিনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে, ডিএমপির ৫০টি থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বিশেষ নজর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে: পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসব রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়াও রাজধানীর বনানী, উত্তরা, বাড্ডা, পল্টন ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সম্পূর্ণ ধানমন্ডি এলাকায়।

সানা/আপ্র/১২/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

১৩ নভেম্বর কী হবে?

জনমনে আতঙ্ক, সতর্ক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী

আপডেট সময় : ০৯:১১:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহজুড়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে স্কুলসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে। এসব ঘটনায় চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচি কেন্দ্র করে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কে বা কারা এ অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছে সেটা জানা যায়নি। গাজীপুরে আলাদা তিন স্থানে তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত জেলার শ্রীপুর, মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস ও চক্রবর্তী এলাকায় এসব অগ্নিসংযোগ করা হয়। তিনটি ঘটনায় বাসগুলো পুড়ে গেলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে মঙ্গলবার ময়মনসিংহে দাঁড়িয়ে থাকা বাসে আগুন দিলে চালক নিহত হন। গত দু-তিনদিনে ঢাকায় বেশ কয়েকটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রাজনৈতিক কার্যালয় লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে ককটেল। এসব ঘটনায় দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।

গত দেড় বছর ধরে আওয়ামী লীগের শীর্ষনেতারা হয় দেশের বাইরে, না হয় কারাগারে অবস্থান করছেন। নির্বাহী আদেশের মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে দলটির কার্যক্রম। সেই আওয়ামী লীগ হুট করে ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করায় নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসন। কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ভারতে বসে প্রথমে বেশ কয়েকটি পশ্চিমা পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিলেন এবং তারপর পরই ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ ডাকলেন। আজ তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন একটি মামলার রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ হওয়া কথা।

রাজনীতিবিদ ও রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের কর্মসূচি পালনে খুব বেশি প্রভাব না পড়লেও আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা বাড়বে। তবে জ্বালাও-পোড়াও করে এখন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সমর্থন পাওয়া যাবে না। আর গত তিন দিনে যেখানে-সেখানে ককটেল বিস্ফোরণ এবং আগুনের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সবার মনে প্রশ্ন- আসলে ১৩ নভেম্বর কী হতে যাচ্ছে। নাগরিকদের দুশ্চিন্তা- আবারো কি রাস্তায় নাশকতার ভয় নিয়ে চলাচল করতে হবে? পরিস্থিতি এড়াতে তারা নিজেরাই বাসা থেকে বের না হওয়া, অতি প্রয়োজন ছাড়া কোথাও না যাওয়া, গাড়ি বের না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে- নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন।

গত সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক দিনের তুলনায় অনেক কম দেখা গেছে। সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্যমতে, ১ থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ও গত দুই দিনে ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১৭টি মামলা দায়ের ও ৫০ জন গ্রেফতার করা হয়েছে।

ছবি সংগৃহীত

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ১২টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ি এলাকায় আলম পরিবহন নামে একটি বাসে আগুনের ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থায় এক হেলপারের মৃত্যু হয়েছে।

সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুন দেওয়ার প্রেক্ষাপটে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিজিবির দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’
এর আগে গত ৮ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে রাজধানীর ১৪২টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ব্যাপক ও সমন্বিত নিরাপত্তা মহড়া চালিয়েছে। ডিএমপির বিভিন্ন ইউনিটের প্রায় ৭ হাজার পুলিশ সদস্য এই মহড়ায় অংশ নেন, যা বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলে। এতে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন, বাংলাদেশ সচিবালয়, হাইকোর্ট, বঙ্গভবন এবং তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ডিএমপি ১০ নভেম্বর থেকে ধীরে ধীরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান ও আদালতের আশপাশে সব ধরনের র‌্যালি, সভা, মানববন্ধন, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। পরিবার, হোটেল, মেস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তল্লাশি অভিযান ও চেকপোস্ট বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ছবি সংগৃহীত

স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে অথবা বন্ধ: কখন কোথায় ককটেল বিস্ফারণ হচ্ছে, আগুনে পুড়ে যাচ্ছে বাস, সেই শঙ্কায় গত দুদিন ধরেই অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করছিলেন। তারা বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত চান। কারণ তারা জেনেছেন, রাজধানীতে যখন-তখন ককটেল বিস্ফারণ ঘটছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসও। বুধবার (১২ নভেম্বর) প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জরুরি ক্লাস অনলাইনে করার কথা জানিয়ে দেয়। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো ছুটির নোটিশ পাঠিয়ে দেয়। যদিও সরকারি কোনো স্কুলে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি। এদিকে, বুধবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে অনলাইনে ক্লাস বাতিল করার নোটিশ জারি করা হয়।

‘লকডাউন’ ঘিরে জনমনে আতঙ্ক: ও লেভেলের এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘অভিভাবকরা সন্তানকে রাস্তায় এসব দিনে কিসের ভরসায় পাঠাবে। আমি ছেলের স্কুল যাওয়া নিজে থেকে বন্ধ করেছি। জন্ম-মৃত্যু আল্লাহর হাতে, তাই বলে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে না, এমন কথা কোথায় লেখা আছে।’ বাসায় বসে থাকলে লকডাউন পালন করা হয়ে যাবে কিনা, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমার নিরাপত্তা আমাকেই নিশ্চিত করতে হবে।’

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘অবশ্যই আমরা শঙ্কিত। তবে আমরা মনে করি না এটি বড় আকারের কোনো সমস্যা হবে। আমরা আশাবাদী যে সরকার এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হবে। আমরা কিছুটা কাজও করছি। আমি আশা করি সব রাজনৈতিক দল বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি রাখবে, যেন কেউ এ ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে। আমরা সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করি। ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির জন্য অন্তত শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় থাকে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেকজন ব্যবসায়ী নেতা বলেন ‘ব্যবসায়ী হিসেবে আমরা দেশের মানুষকে বিপদে ফেলতে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনোই সমর্থন করি না। অতীতে আমরা সমর্থন করিনি, এখনো করি না এবং ভবিষ্যতেও করবো না। এটি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।’

ছবি সংগৃহীত

গাড়ি কোথায় রাখবো সেই চিন্তাতেই দুইদিন কোথাও যেতে পারছি না উল্লেখ করে নাম প্রকাশ না করে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার গাড়ি আমি নিজে চালাই। আমাদের এখানে বেশিরভাগ জায়গায় পার্কিং নাই, বাধ্য হয়ে রাস্তায় গাড়ি রাখতে হয়। এখানে-সেখানে আগুন লাগাতে দেখে ভয়েই মরে যাচ্ছি। গাড়ি কোথায় রাখবো, আর কী দুর্ঘটনা ঘটবে কে জানে। তাই দুদিন হলো মেট্রোতে যাতায়াত করছি।’

১৩ নভেম্বর কী হবে প্রশ্নে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগ চেষ্টা করবে নাশকতা করার। তবে যতটুকু তারা নাশকতা করবে, তার চেয়ে বেশি তারা এটা নিয়ে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়। আপাতত ভীতি ছড়াতে পারলেও তাদের বেশ ফায়দা। অপরদিকে, এটা সত্য যে, অনেক আগে থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের লোকজন অবস্থান করছে। কিন্তু তাদেরকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে সরকারের গাফিলতি ও পিছুটান আছে বলে মনে হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান এটাকে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা জাগানোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যা যা ঘটছে এসব চাইলে ঘটানো যায়। আপনি অর্থ বরাদ্দ দিয়ে, লোক ভাড়া করে এসব করাতে পারবেন। ২০১৩-১৪ সালের দিকে আওয়ামী লীগ সরকার শক্ত অবস্থায় থাকার পরেও অগ্নিসন্ত্রাস মোকাবিলা করতে পেরেছিল, থামাতে পেরেছিল? আওয়ামী লীগ আসলে তাদের উপস্থিতি প্রমাণ করতে চাইছে। কারণ, এক বছরেরও বেশি হলো তারা কোথাও নেই। শেখ হাসিনার যে বক্তৃতা, সাক্ষাৎকারগুলো সাম্প্রতিক দেখা যাচ্ছে- সেখানেও এই ‘দেখিয়ে দেওয়ার’ বিষয়টা আছে।’ জাহেদ উর রহমান আরো বলেন, ‘এই কর্মসূচির বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না। তবে দলের লোকজনের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ, তাদের মধ্যে সাহস সঞ্চার হবে। লক্ষ্য করে দেখবেন, মিছিলের স্থায়িত্ব কাল একটু একটু করে বাড়ছে, মানুষ একটু হলেও বাড়ছে।’
এই যে আওয়ামী লীগ বেরিয়ে আসতে চাইছে- সেটা নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগেও এই সাহস ছিল না, সত্য। অনেকগুলো বিষয় সম্পৃক্ত থাকলেও থাকতে পারে। আবার আন্তর্জাতিক পরিসর থেকে আওয়ামী লীগকে নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতে দেওয়ার ন্যারেটিভ তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। সেই চাপটা আছে। রাজনীতি করতে না দেওয়ার কারণে নানা সংকট তৈরি হচ্ছে এবং আগামীতেও হবে বলে শঙ্কা আছে।’

 

রাজধানী ফাঁকা: রাজধানীজুড়ে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিক দিনের তুলনায় বুধবার অনেক কম দেখা গেছে। সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, বিজিবি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে আছে। রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রমও জোরদার করা হয়।

রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও থানায়-থানায় নিরাপত্তা জোরদার: কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বর লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই।

গত কয়েক দিনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে, ডিএমপির ৫০টি থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বিশেষ নজর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে: পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এসব রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়াও রাজধানীর বনানী, উত্তরা, বাড্ডা, পল্টন ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সম্পূর্ণ ধানমন্ডি এলাকায়।

সানা/আপ্র/১২/১১/২০২৫