নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু রাজধানীবাসীর অভিযোগ, পানি দূষিত ও দুর্গন্ধ। ওয়াসার পানি শোধন করে এটিএম কার্ড আর বুথের মাধ্যমে বিক্রি করছে বেসরকারি সংস্থা ড্রিংকওয়েল। তাতেই ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে এটিএম বুথের পানি। সংস্থাটির গ্রাহকরা বলছেন, পানিতে দুর্গন্ধ নেই, তাই ফুটিয়ে পান করার বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না। খেতেও ভালো আর দামও কম। ড্রিংকওয়েলের গ্রাহকের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। সংস্থাটি বলছে, যেসব এলাকায় পানির সংকট আর পানিতে গন্ধ ও দূষণ রয়েছে, সেসব এলাকা গ্রাহক বেশি। এসব এলাকার মধ্যে রয়েছে শ্যাওড়াপাড়া, মুগদা, কদমতলা, ফকিরাপুল ও পুরনো ঢাকা। ২০১৭ সালের মে মাসে প্রথম এটিএমটি উদ্বোধন হয় মুগদায়। ড্রিংকওয়েল ঢাকায় ২২৬টি বুথের মাধ্যমে ২ লাখ ৮৪ হাজার গ্রাহককে পানি সরবরাহ করছে। প্রতিদিন গড়ে ১০.১২ লাখ লিটার পানির বিক্রি হচ্ছে, যার প্রতি লিটার পানির দাম ৪০ পয়সা। সবচেয়ে বেশি গ্রাহক ৫,১১২ জন শ্যাওড়াপাড়ায়, এরপর ফকিরাপুলে ৩,৬৯৯ জন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যেকোনও নাগরিক তার জাতীয় পরিচয়পত্র, দুই কপি ছবি ও ৫০ টাকা জমা দিয়ে যেকোনও বুথ থেকে একটি এটিএম কার্ড নিতে পারবেন। আর এটিএম কার্ডে সর্বোচ্চ ৯৯৯ টাকা আর সর্বনি¤œ ১০ টাকা রিচার্জ করে পানি নিতে পারবেন। রাজধানীর বারিধারার জে ব্লকে অবস্থিত পানির এটিএম বুথ পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকার মানুষ এসেছেন পানি নিতে। তাদের মধ্যে একজন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র মোস্তাক আহম্মেদ টিপু। তিনি বলেন, আমি পাশের এলাকা ফাসেরটেকের একটি মেসে থাকি। কার্ডের মাধ্যমে এটিএম বুথ থেকে পানি নেই। এই পানি ওয়াসার পানির মতো ফুটিয়ে খেতে হয় না। খেতেও ভালো।
বারিধারা জে ব্লকের এটিএম বুথের কর্মী মাহফুজা আক্তার জানান, ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক, আয়রন ও অদৃশ্য ব্যাকটেরিয়া থাকে। এছাড়াও পানির পিএইচ এলাকাভেদে কমবেশি থাকে। এছাড়াও নদীর শোধিত পানিতে অনেক সময় ক্লোরিন, অ্যামোনিয়া ও অন্যান্য রাসায়নিকের গন্ধ পাওয়া যায়। এজন্য এগুলো আমাদের এখানে ফিল্টারে শোধন করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের বুথে দুটো বড় ভেসেল থাকে। প্রথমটায় আয়রন ও আর্সেনিক ও দ্বিতীয়টায় পানির রাসায়নিকের গন্ধ বা ময়লা শোধন করা হয়। মাইক্রন নামে আরেকটা ফিল্টার থাকে। প্রথম দুই ফিল্টারের পরও কোনও ময়লা থাকলে এখানে ধরা পড়ে। এছাড়া অদৃশ্য ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করার জন্য আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ব্যবহার করা হয়।
বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকার এটিএম বুথের কর্মী রুমা আক্তার পায়েল জানান, সকাল ছয়টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত পানি নেয় স্থানীয় বাসিন্দারা। তিনি বলেন, এ এলাকায় আমাদের ২,৯৩৩ জন কার্ডধারী গ্রাহক আছেন। প্রতিদিন গড়ে ৭০০০-১০,০০০ টাকার পানি বিক্রি হয়। আর প্রতিদিন আমরা ৫-১০ জন নতুন গ্রাহক হওয়ার জন্য আসেন।
জনপ্রিয় হচ্ছে এটিএম বুথের পানি
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ