ঢাকা ১০:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

জনগণ ভোট দিতে পারলেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০৪:২০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৩
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারে সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জনগণ ভালো পরিবেশে ভোট দিয়েছে, আগামীতেও ভালোভাবে ভোট দিতে পারবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে, এটাই বিশ্বাস করি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সম্পর্কে অবহিত করতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, এই দলটি ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি করে কিছু টাকা যাবে গুলশানে, কিছু যাবে হাওয়া ভবনে, বাকিটা যাবে লন্ডনে। নিজেরা নিজেরা মারামারি করবে, দুর্নীতি করতে করতে এক সময় তারা বলবে আমরা পারব না। সেই দলকে জনগণ ভোট দেবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত উন্নয়নের পর জনগণকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী চায়। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি, কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। যা কিছু করেছি, সব তো জনগণের কাজে লাগছে। সবই তো জনগণ ভোগ করছে। মেট্রোরেল করতে গিয়ে আমাদের নানা কথা শুনতে হয়েছে। সব জায়গায় কথা শুনতে হচ্ছে। আর উন্নয়ন করে সবার প্রশংসা পাব, এটা আশা করিও না। আশা করাও ঠিক হবে না। যাদের এক সময় জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা তো এখন সমালোচনা করবেই। শেখ হাসিনা আরও বলেন, জনগণের জন্য কাজ করছি, জনগণের জন্য আছি, ১৪ বছরের মধ্যে দেশকে কোথায় নিয়ে এসেছি, সেটাও দেখতে হবে। টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের দ্রুত একটি পরিবর্তন আনা সহজ হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সুদূরপ্রসারী প্ল্যান করে রাখে। যখনই ক্ষমতায় আসি সেগুলো নিয়ে কাজ করি। ডিজিটাল রূপকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশে গরীব মানুষ একটাও থাকবে না। পাঁচ দেশের জোট ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান শেখ হাসিনা। জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দা সিলভা। সম্মেলন শেষে ২৭ আগস্ট দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।
কে কত বড় শক্তিশালী সিন্ডিকেট আমি দেখবো: দেশে সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে কত বড় শক্তিশালী আমি দেখবো।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিকস সম্মেলনে যোগদান পরবর্তী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সিন্ডিকেট নিয়ে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এটা কোনো কথা নয়। কে কত বড় শক্তিশালী আমি দেখবো। সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এমন কিছু বাণিজ্যমন্ত্রী বললে তাকে আমি ধরবো। উৎপাদন বাড়িয়ে এবং বিকল্প ব্যবস্থা করে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ইউনূসের জন্য বিবৃতি না দিয়ে আইনজীবী পাঠান: শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার আসামি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তাদের বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ আইনবিদ পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাতে তারা দেখতে পারেন, এখানে কোনো অন্যায় হয়েছে কি না। তিনি বলেছেন, “আমার খুব অবাক লাগছে, ভদ্রলোকের যদি এতই আত্মবিশ্বাস থাকত, যে তিনি কোনো অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।” শ্রম আদালতে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে চলার প্রেক্ষাপটে ১০০ নোবেল বিজয়ী এবং বিভিন্ন দেশের ৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিক একটি বিবৃতি দিয়েছেন, যেখানে ইউনূস ‘কারারুদ্ধ হতে পারেন’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তাকে ‘হয়রানি’ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। সিভিক কারেজ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে সোমবার ওই বিবৃতি আসে। ‘প্রটেক্ট ইউনূস’ নামে একটি প্রচারাভিযানও শুরু করেছে সংগঠনটি। ব্রিকস সম্মেলনের অভিজ্ঞতা জানাতে প্রধানমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এলে অন্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে সেখানে ইউনূসকে নিয়ে বিবৃতির বিষয়টিও আসে। একজন সাংবাদিক জানতে চান, ওই বিবৃতির প্রেক্ষাপটে সরকার কোনো নমনীয়তা দেখাবে কি না। ওই বিবৃতির কারণে বিচারে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তাও জানতে চান আরেক সাংবাদিক। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তাছাড়া আমাদের দেশে সবকিছু একটা আইনমত চলে। কেউ যদি ট্যাক্স না দেয়, আর যদি শ্রমিকের অর্থ আত্মসাত করে, আর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শ্রম আদালতে যদি মামলা করা হয়, সেখানে আমাদের কি হাত আছে? আমরা মামলা বন্ধ করে দেব? আপনারাই বিচার করেন।”
সরকার যে শ্রম আদালতের ওই মামলা করেনি, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা চলমান মামলা, আমাদের দেশে তো চলমান মামলা নিয়ে আলোচনাও করি না। কারণ এটা বিচারাধীন। যেখানে বিচারাধীন হিসেবে নিজের দেশেই কথা বলা বন্ধ করা হয়। সেখানে বাইরে দেশ থেকে বিবৃতি এনে মামলা প্রত্যাহারের কথা, আমি কে মামলা প্রত্যাহারের? এখানে আমার কোন অধিকারটা আছে, সেই অধিকারটা দিয়েছেন আমাকে? জুডিশিয়ারি তো সম্পূর্ণ স্বাধীন। “একটা দেশে জুডিশিয়ারি, লেজিসলেটিভ এবং এক্সিকিউটিভ তিনটা অঙ্গ একসঙ্গে চলে। কিন্তু একটা আরেকটার প্রতি হস্তক্ষেপ আমরা করতে পারি না।” ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ আইনজীবী পাঠানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা এই বিবৃতি দিয়েছেন, তাদেরকে আমি আহ্বান করি, তারা এক্সপার্ট পাঠাক। তাদের যদি এত দরদ থাকে তারা আইনজীবী পাঠাক এবং যার বিরুদ্ধে মামলা তার সমস্ত দলিল দস্তবেজ খতিয়ে দেখুক। তারাই এসে দেখুক কোনো অন্যায় আছে কি না। “বিবৃতি দিয়ে কীভাবে একটা মামলা তোলে, তা তো আমরা জানি না। কিন্তু তাদের এসে দেখা দরকার এখানে কি কি অসঙ্গতি আছে, অসম্ঞ্জস্যতা আছে।” ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টাকে ‘শান্তি স্থাপন’ বিবেচনা করে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে। ১৯৮৩ সালে একটি সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনা হওয়ার পর থেকেই এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ইউনূস। বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালে তাকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে হেরে যান ইউনূস। শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগে একটি মামলায় গত জুন মাসে ইউনূসের বিচার শুরু করে শ্রম আদালত। সর্বশেষ গত সোমবার গ্রামীণ টেলিকমের ১৮ জন কর্মচারী তাদের পাওনা মুনাফা না দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন, সেখানে কোম্পানির চেয়ারম্যান ইউনূসকে আসামি করা হয়। ইউনূসের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে দুইশর মত মামলা রয়েছে বলে তার আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। সিভিক কারেজের ব্যানারে নোবেলজয়ীদের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ঘটনাগুলো খুব দ্রুত ঘটে যাচ্ছে এবং মনে হয়, আগামী নির্বাচনের আগেই ড. ইউনূসকে কারারুদ্ধ করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।” ইউনূসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনো ‘আইনি সারবত্তা নেই’ এবং ‘আইনি প্রক্রিয়ারও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করা হয় সেখানে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “শ্রমিকদের জন্য জন্য তো আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়, আন্তর্জাতিক বিশ্বে শুধু নালিশ আর নাশিল। এই দেশের কোম্পানি আইনে আছে, প্রফিটের শতকরা পাঁচ ভাগ লেবার ওয়েল ফেয়ারে দিতে হবে। এখন যদি কেউ না দেয়, লেবাররা মামলা করে, মামলা করার ফলে তাদের ছাঁটাই করা হয়, তারা যদি আবার মামলা করে, সে দায়িত্ব তো আমাদের না। “আবার এই মামলা যাতে না হয়, তার জন্য ঘুষ দেওয়া হয়। সেই ঘুষের টাকা পর্যন্ত যাওয়া, সেই নেতারা যে ঘুষ খেয়েছে সেই টাকা ব্যাংকে ফ্রিজ করা।ৃ যারা বিবৃতি দিয়েছে তাদের আহ্বান জানাই, বিবৃতিটা না দিয়ে তার এক্সপার্ট পাঠাক, তাদের ক্লায়েন্টের জন্য, আইনজীবী পাঠাক এবং তারা এসে দলিল দস্তবেজ কাগজপত্র সব দেখুক যে সেখানে কোনো অন্যায় আছে, না তাকে অন্যায়ভাবে কোনো মামলা দেওয়া হয়েছে।”
পৃথিবীর কোনো দেশে কর ফাঁকি দিলে ছাড় দেওয়া হয় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এখানে ট্যাক্স ফাঁকিতে যদি কেউ ধরা পড়ে, তাকে তো সেই ট্যাক্স ফেরত দিতে হবে, কিছু কিছু ফেরত দিয়েছেও। এনবিআর থেকে যেটা বলা হয়েছে,পাঁচ হাজার কোটিই উচ্চ আদালতের নির্দেশে সেগুলো স্থগিত হয়ে আছে। “স্বাভাবিকভাবেই সারা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফতি, অর্থনৈতিক একটা চাপ, যেখানে সরকারের অর্থ পাওনা, সেখান থেকে তো অর্থ আদায় করতেই হবে। যারা ট্যাক্স দেয় না এনবিআর তাদের অর্থ ছাড়বে কেন। ট্যাক্স দেওয়া তো সকল নাগরিকের দায়িত্ব। যদি আপনার বিদেশে, আমেরিকা বলেন ইংল্যান্ড বলেন, ইউরোপ বলেন, কেউ যদি তাদের দেশের ট্যাক্স ফাঁকি দেয়, তাদেরকে কি কোলে তুলে নাচে তাদের সরকার? না তাদের মামলা দেয়।” বিশ্বে ‘বহু নোবেলজয়ীকে বিভিন্ন অপকর্মের জন্য জেলে যেতে হয়েছে’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলে, “ফিলিপাইনের নবেলজয়ী, তার বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার মামলায় দিনের পর দিন, সেই মামলা তাকে চালাতে হয়েছে। এইরকম বহু নবেলজয়ী আছে, তারা কারাগারে বন্দিও আছে পরবর্তীতে অনেক কাজের জন্য। এখন একজনের জন্য এত এত বিবৃতি না দিয়ে তারা একটা এক্সপার্ট পাঠিয়ে দেখুক।” বিশেষজ্ঞা পাঠালে ‘আরও অনেক কিছু’ বেরিয়ে আসতে পারে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি তারা যদি একবার পাঠায় তাহলে, আরও অনেক কিছু বের হবে, যেটা আমরা হাতই দিইনি। এমন অনেক কিছু বের হবে। সেটা করা দরকার, বিবৃতি না দিয়ে আসেন, এক্সপার্ট পাঠান এবং সবকিছু যাচাই করে দেখেন সেই আহ্বান জানাই।” ইউনূস ছিলেন সরকারি মালিকানার একটি ব্যাংকের এমডি, সেই পদে থেকে তিনি কী করে বিদেশে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করলেন, সেই প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সরকারি বেতনভোগী একজন এমডি বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কীভাবে ইনভেষ্ট করে? বাণিজ্য করে? এই যে শত ইন্টেলেকচুয়াল যারা বিবৃতি দিলেন, তারা কি জিজ্ঞাসা করেছেন, একটি ব্যাংকে চাকরি করা অবস্থায় কীভাবে বিদেশে এত টাকা বিনিয়োগ করলেন। ব্যবসা করলেন, আসা যাওয়া করেন, এত কিছু করেন কোনো নিয়ম নাই।” কোথা থেকে টাকাটা এল, কীভাবে টাকাটা উপার্জন করা হল, সে কথা সাংবাদিকরা কখনো ইউনূসকে জিজ্ঞাসা করেছেন কিনা, সেই প্রশ্নও তোলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমাদের একজন রাজনীতিবীদ করলে লিখতে লিখতে কলম শেষ হয়ে যেত। দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছেন, দুর্নীতিবাজ পছন্দ না হলে কোনো দোষ নাই, আর পছন্দ হলে তারে ভালো করে আচ্ছা মত, এটা অবস্থান অপনাদের?” বিবৃতিদাতাদের উদ্দেশে তিনি আবারও বলেন, “তারা এক্সপার্ট পাঠাবে, সমস্ত দলির দস্তখত দেখবেন এবং তারাই বিচার করে যাক এখানে কোনো অপরাধ আছে কি নাই। আর নয়তো আমাদের দেশে আইন আছে, আদালত আছে, শ্রম আইন আছে, শ্রম কোর্ট আছে। আইন তার নিজের গতিতে চলবে।”
চাইলে পাবো না সেই অবস্থাটা আর নাই: ব্রিকসের সদস্য পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারই ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে হবে এমন কোনো চেষ্টা বাংলাদেশের ছিল না এবং বাংলাদেশ কাউকে সেটা বলেওনি। “চাইলে পাব না সেই অবস্থাটা আর নাই। কিন্তু প্রত্যেক কাজটারই একটা নিয়ম থাকে, আমরা সেই নিয়ম মেনেই চলি,” বলেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় পঞ্চদশ ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন সরকারপ্রধান। সেখানেই ব্রিকস নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন। বিশ্ব অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশের নিয়ন্ত্রণকারী পাঁচ দেশের জোট ব্রিকসের সম্মেলনে যোগ দিতে এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেন শেখ হাসিনা। এবারের সম্মেলনের আগেই বাংলাদেশের সদস্য হওয়ার আবেদনের বিষয়টি আলোচনায় ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এর আগে এ বিষয়ে আগ্রহের কথা বলেছিলেন। সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত ৬ দেশকে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ সেই তালিকায় নেই, যা নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। বিএনপি বিষয়টিকে বর্ণনা করেছে সরকারের ‘কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ হিসেবে। সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক ব্রিকসে বাংলাদেশের সুযোগ না পাওয়া এবং এ বিষয়ে চলমান আলোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী গত জুন মাসে তার ইতালি সফরের সময় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্রিকসে নতুন সদস্য নেওয়ার আলোচনার বিষয়টি তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, “আমার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হল, তখন আমন্ত্রণ জানালেন, ব্রিকস সম্মেলন করবে, আমাকে আসতে বললেন এবং সে সময় আমাকে জানালেন যে, তারা কিছু সদস্যপদ বাড়াবেনও এবং সেটাতে আমার মতামত জানতে চাইলেন। “আমি বললাম যে, এটা খুবই ভালো হবে। কারণ ব্রিকস যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন থেকে এই পাঁচটা দেশের সরকারের প্রধানের সঙ্গে আমার যোগাযোগ সবসময় ছিল এবং আছে।” গত জুন মাসে জেনিভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্রিকসের সভাপতি দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, বাংলাদেশের ব্রিকসে যোগদানের বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। এরপর জুনের মাঝামাঝিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসের সদস্যপদের জন্য আবেদন করে সরকার। চলতি মাসের ২৪ তারিখ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমন্ত্রিত হয়ে যোগ দেন। এই সম্মেলনেই ছয়টি দেশকে নতুন করে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেগুলো হল- আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জুনে যে আলোচনা হয়, সেই পর্যায়েই বিষয়টি ছিল বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, “ব্রিকসের সদস্য হওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট আমাকে তখনই বলেছিলেন যে, ধাপে ধাপে নেবেন, তারা ওই ভৌগোলিক অবস্থানকে বিবেচনা করে যে দেশগুলি তাদেরকে নেবেন এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে তারা সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন। “আমরা ঠিক ওইভাবেৃ হ্যাঁ, নিলে আমরা খুব খুশি। কিন্তু আমরা ঠিক ওইভাবে ব্রিকসে এখনই সদস্যপদ পাব, এই প্রথমবারই যে সদস্যপদ পাব, এ ধরনের চিন্তা আমাদের মাথায় ছিলও না, আর সেই রকম চেষ্টাও কিন্তু আমরা করিও নাই বা কাউকে আমরা বলিও নাই।” ব্রাজিল ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা কিন্তু কাউকে কিছু বলতে যাইনি যে, এখনি মেম্বার করেন। তখন থেকে আমরা জানি যে তারা কয়েকটা দেশ নেবেন।” ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অন্য সরকারপ্রধানদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজেও সদস্যপদ নিয়ে আলোচনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “ওই সময় আলোচনা হয়, ‘এখন আমরা এই কয়জন নেব। এরপরে ধাপে ধাপে আমরা আরও সদস্য সংখ্যা বাড়াব’; এই।”
বিরোধীদলের সমালোচনার জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা জানি, এই ইস্যুটা আসবে বা আমাদের অপজিশান থেকে খুব হুতাশ, যে আমরা নাকি চেয়েছি, পাইনি, হেনতেন। “বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না এটা কিন্তু ঠিক না। অন্তত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের যে মর্যাদাটা আমরা তুলে ধরেছি, সেখানে আমাদের সেই সুযোগটা আছে।” তিনি বলেন, “তারা বলতে পারে, কারণ তারা বিএনপির আমলে ওইটাই ছিল। বাংলাদেশের কোনো অবস্থানই ছিল না সারাবিশ্বে। বাংলাদেশ মানেই ছিল দুর্ভিক্ষের দেশ, ঝড়ের দেশ, বন্যার দেশ, হাত পেতে চলার দেশ, ভিক্ষা চাওয়ার দেশ। এখন অন্তত বাংলাদেশ ভিক্ষা চাওয়ার দেশ না, এটা সবাই জানে।” প্রধানমন্ত্রী জানান, ব্রিকস জোটের অধীনে গঠিত নিউ ডেভেলপমন্টে ব্যাংকে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ শুরু থেকেই বাংলাদেশের ছিল এবং বাংলাদেশ ওই ব্যাংকের সদস্য হয়েছে। “আমাদের পক্ষ থেকে আমরা যখন শুনলাম যে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হচ্ছে, ওটার উপরে আমাদের আগ্রহটা বেশি ছিল, সেখানে আমরা যুক্ত হতে চেয়েছিলাম।” ওই ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে দুটি প্রকল্প চালু থাকার কথাও আরেক প্রশ্নে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট মুদ্রার বাধাধরা না কথাও তিনি বলেন।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনগণ ভোট দিতে পারলেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৪:২০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারে সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জনগণ ভালো পরিবেশে ভোট দিয়েছে, আগামীতেও ভালোভাবে ভোট দিতে পারবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে, এটাই বিশ্বাস করি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সম্পর্কে অবহিত করতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, এই দলটি ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি করে কিছু টাকা যাবে গুলশানে, কিছু যাবে হাওয়া ভবনে, বাকিটা যাবে লন্ডনে। নিজেরা নিজেরা মারামারি করবে, দুর্নীতি করতে করতে এক সময় তারা বলবে আমরা পারব না। সেই দলকে জনগণ ভোট দেবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত উন্নয়নের পর জনগণকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী চায়। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি, কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। যা কিছু করেছি, সব তো জনগণের কাজে লাগছে। সবই তো জনগণ ভোগ করছে। মেট্রোরেল করতে গিয়ে আমাদের নানা কথা শুনতে হয়েছে। সব জায়গায় কথা শুনতে হচ্ছে। আর উন্নয়ন করে সবার প্রশংসা পাব, এটা আশা করিও না। আশা করাও ঠিক হবে না। যাদের এক সময় জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা তো এখন সমালোচনা করবেই। শেখ হাসিনা আরও বলেন, জনগণের জন্য কাজ করছি, জনগণের জন্য আছি, ১৪ বছরের মধ্যে দেশকে কোথায় নিয়ে এসেছি, সেটাও দেখতে হবে। টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের দ্রুত একটি পরিবর্তন আনা সহজ হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সুদূরপ্রসারী প্ল্যান করে রাখে। যখনই ক্ষমতায় আসি সেগুলো নিয়ে কাজ করি। ডিজিটাল রূপকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশে গরীব মানুষ একটাও থাকবে না। পাঁচ দেশের জোট ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান শেখ হাসিনা। জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে যোগ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা দা সিলভা। সম্মেলন শেষে ২৭ আগস্ট দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।
কে কত বড় শক্তিশালী সিন্ডিকেট আমি দেখবো: দেশে সিন্ডিকেট করে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কে কত বড় শক্তিশালী আমি দেখবো।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিকস সম্মেলনে যোগদান পরবর্তী এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সিন্ডিকেট নিয়ে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এটা কোনো কথা নয়। কে কত বড় শক্তিশালী আমি দেখবো। সিন্ডিকেট ভাঙা যাবে না এমন কিছু বাণিজ্যমন্ত্রী বললে তাকে আমি ধরবো। উৎপাদন বাড়িয়ে এবং বিকল্প ব্যবস্থা করে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ইউনূসের জন্য বিবৃতি না দিয়ে আইনজীবী পাঠান: শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলার আসামি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে যারা বিবৃতি দিচ্ছেন, তাদের বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ আইনবিদ পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যাতে তারা দেখতে পারেন, এখানে কোনো অন্যায় হয়েছে কি না। তিনি বলেছেন, “আমার খুব অবাক লাগছে, ভদ্রলোকের যদি এতই আত্মবিশ্বাস থাকত, যে তিনি কোনো অপরাধ করেননি, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিবৃতি ভিক্ষা করে বেড়াতেন না।” শ্রম আদালতে ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম এগিয়ে চলার প্রেক্ষাপটে ১০০ নোবেল বিজয়ী এবং বিভিন্ন দেশের ৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিক একটি বিবৃতি দিয়েছেন, যেখানে ইউনূস ‘কারারুদ্ধ হতে পারেন’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তাকে ‘হয়রানি’ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। সিভিক কারেজ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে সোমবার ওই বিবৃতি আসে। ‘প্রটেক্ট ইউনূস’ নামে একটি প্রচারাভিযানও শুরু করেছে সংগঠনটি। ব্রিকস সম্মেলনের অভিজ্ঞতা জানাতে প্রধানমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এলে অন্য অনেক বিষয়ের সঙ্গে সেখানে ইউনূসকে নিয়ে বিবৃতির বিষয়টিও আসে। একজন সাংবাদিক জানতে চান, ওই বিবৃতির প্রেক্ষাপটে সরকার কোনো নমনীয়তা দেখাবে কি না। ওই বিবৃতির কারণে বিচারে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তাও জানতে চান আরেক সাংবাদিক। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তাছাড়া আমাদের দেশে সবকিছু একটা আইনমত চলে। কেউ যদি ট্যাক্স না দেয়, আর যদি শ্রমিকের অর্থ আত্মসাত করে, আর শ্রমিকদের পক্ষ থেকে শ্রম আদালতে যদি মামলা করা হয়, সেখানে আমাদের কি হাত আছে? আমরা মামলা বন্ধ করে দেব? আপনারাই বিচার করেন।”
সরকার যে শ্রম আদালতের ওই মামলা করেনি, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটা চলমান মামলা, আমাদের দেশে তো চলমান মামলা নিয়ে আলোচনাও করি না। কারণ এটা বিচারাধীন। যেখানে বিচারাধীন হিসেবে নিজের দেশেই কথা বলা বন্ধ করা হয়। সেখানে বাইরে দেশ থেকে বিবৃতি এনে মামলা প্রত্যাহারের কথা, আমি কে মামলা প্রত্যাহারের? এখানে আমার কোন অধিকারটা আছে, সেই অধিকারটা দিয়েছেন আমাকে? জুডিশিয়ারি তো সম্পূর্ণ স্বাধীন। “একটা দেশে জুডিশিয়ারি, লেজিসলেটিভ এবং এক্সিকিউটিভ তিনটা অঙ্গ একসঙ্গে চলে। কিন্তু একটা আরেকটার প্রতি হস্তক্ষেপ আমরা করতে পারি না।” ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি না দিয়ে বিশেষজ্ঞ আইনজীবী পাঠানোর জন্য পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “যারা এই বিবৃতি দিয়েছেন, তাদেরকে আমি আহ্বান করি, তারা এক্সপার্ট পাঠাক। তাদের যদি এত দরদ থাকে তারা আইনজীবী পাঠাক এবং যার বিরুদ্ধে মামলা তার সমস্ত দলিল দস্তবেজ খতিয়ে দেখুক। তারাই এসে দেখুক কোনো অন্যায় আছে কি না। “বিবৃতি দিয়ে কীভাবে একটা মামলা তোলে, তা তো আমরা জানি না। কিন্তু তাদের এসে দেখা দরকার এখানে কি কি অসঙ্গতি আছে, অসম্ঞ্জস্যতা আছে।” ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টাকে ‘শান্তি স্থাপন’ বিবেচনা করে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ইউনূস ও গ্রামীণ ব্যাংককে। ১৯৮৩ সালে একটি সামরিক অধ্যাদেশের মাধ্যমে গ্রামীণ ব্যাংকের সূচনা হওয়ার পর থেকেই এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ইউনূস। বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালে তাকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে হেরে যান ইউনূস। শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগে একটি মামলায় গত জুন মাসে ইউনূসের বিচার শুরু করে শ্রম আদালত। সর্বশেষ গত সোমবার গ্রামীণ টেলিকমের ১৮ জন কর্মচারী তাদের পাওনা মুনাফা না দেওয়ার অভিযোগে মামলা করেন, সেখানে কোম্পানির চেয়ারম্যান ইউনূসকে আসামি করা হয়। ইউনূসের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে দুইশর মত মামলা রয়েছে বলে তার আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। সিভিক কারেজের ব্যানারে নোবেলজয়ীদের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে ঘটনাগুলো খুব দ্রুত ঘটে যাচ্ছে এবং মনে হয়, আগামী নির্বাচনের আগেই ড. ইউনূসকে কারারুদ্ধ করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।” ইউনূসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনো ‘আইনি সারবত্তা নেই’ এবং ‘আইনি প্রক্রিয়ারও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করা হয় সেখানে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “শ্রমিকদের জন্য জন্য তো আমাদের অনেক কথা শুনতে হয়, আন্তর্জাতিক বিশ্বে শুধু নালিশ আর নাশিল। এই দেশের কোম্পানি আইনে আছে, প্রফিটের শতকরা পাঁচ ভাগ লেবার ওয়েল ফেয়ারে দিতে হবে। এখন যদি কেউ না দেয়, লেবাররা মামলা করে, মামলা করার ফলে তাদের ছাঁটাই করা হয়, তারা যদি আবার মামলা করে, সে দায়িত্ব তো আমাদের না। “আবার এই মামলা যাতে না হয়, তার জন্য ঘুষ দেওয়া হয়। সেই ঘুষের টাকা পর্যন্ত যাওয়া, সেই নেতারা যে ঘুষ খেয়েছে সেই টাকা ব্যাংকে ফ্রিজ করা।ৃ যারা বিবৃতি দিয়েছে তাদের আহ্বান জানাই, বিবৃতিটা না দিয়ে তার এক্সপার্ট পাঠাক, তাদের ক্লায়েন্টের জন্য, আইনজীবী পাঠাক এবং তারা এসে দলিল দস্তবেজ কাগজপত্র সব দেখুক যে সেখানে কোনো অন্যায় আছে, না তাকে অন্যায়ভাবে কোনো মামলা দেওয়া হয়েছে।”
পৃথিবীর কোনো দেশে কর ফাঁকি দিলে ছাড় দেওয়া হয় না মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “এখানে ট্যাক্স ফাঁকিতে যদি কেউ ধরা পড়ে, তাকে তো সেই ট্যাক্স ফেরত দিতে হবে, কিছু কিছু ফেরত দিয়েছেও। এনবিআর থেকে যেটা বলা হয়েছে,পাঁচ হাজার কোটিই উচ্চ আদালতের নির্দেশে সেগুলো স্থগিত হয়ে আছে। “স্বাভাবিকভাবেই সারা বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফতি, অর্থনৈতিক একটা চাপ, যেখানে সরকারের অর্থ পাওনা, সেখান থেকে তো অর্থ আদায় করতেই হবে। যারা ট্যাক্স দেয় না এনবিআর তাদের অর্থ ছাড়বে কেন। ট্যাক্স দেওয়া তো সকল নাগরিকের দায়িত্ব। যদি আপনার বিদেশে, আমেরিকা বলেন ইংল্যান্ড বলেন, ইউরোপ বলেন, কেউ যদি তাদের দেশের ট্যাক্স ফাঁকি দেয়, তাদেরকে কি কোলে তুলে নাচে তাদের সরকার? না তাদের মামলা দেয়।” বিশ্বে ‘বহু নোবেলজয়ীকে বিভিন্ন অপকর্মের জন্য জেলে যেতে হয়েছে’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলে, “ফিলিপাইনের নবেলজয়ী, তার বিরুদ্ধে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার মামলায় দিনের পর দিন, সেই মামলা তাকে চালাতে হয়েছে। এইরকম বহু নবেলজয়ী আছে, তারা কারাগারে বন্দিও আছে পরবর্তীতে অনেক কাজের জন্য। এখন একজনের জন্য এত এত বিবৃতি না দিয়ে তারা একটা এক্সপার্ট পাঠিয়ে দেখুক।” বিশেষজ্ঞা পাঠালে ‘আরও অনেক কিছু’ বেরিয়ে আসতে পারে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমি মনে করি তারা যদি একবার পাঠায় তাহলে, আরও অনেক কিছু বের হবে, যেটা আমরা হাতই দিইনি। এমন অনেক কিছু বের হবে। সেটা করা দরকার, বিবৃতি না দিয়ে আসেন, এক্সপার্ট পাঠান এবং সবকিছু যাচাই করে দেখেন সেই আহ্বান জানাই।” ইউনূস ছিলেন সরকারি মালিকানার একটি ব্যাংকের এমডি, সেই পদে থেকে তিনি কী করে বিদেশে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করলেন, সেই প্রশ্নও তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সরকারি বেতনভোগী একজন এমডি বিদেশে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার কীভাবে ইনভেষ্ট করে? বাণিজ্য করে? এই যে শত ইন্টেলেকচুয়াল যারা বিবৃতি দিলেন, তারা কি জিজ্ঞাসা করেছেন, একটি ব্যাংকে চাকরি করা অবস্থায় কীভাবে বিদেশে এত টাকা বিনিয়োগ করলেন। ব্যবসা করলেন, আসা যাওয়া করেন, এত কিছু করেন কোনো নিয়ম নাই।” কোথা থেকে টাকাটা এল, কীভাবে টাকাটা উপার্জন করা হল, সে কথা সাংবাদিকরা কখনো ইউনূসকে জিজ্ঞাসা করেছেন কিনা, সেই প্রশ্নও তোলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “আমাদের একজন রাজনীতিবীদ করলে লিখতে লিখতে কলম শেষ হয়ে যেত। দুর্নীতি খুঁজে বেড়াচ্ছেন, দুর্নীতিবাজ পছন্দ না হলে কোনো দোষ নাই, আর পছন্দ হলে তারে ভালো করে আচ্ছা মত, এটা অবস্থান অপনাদের?” বিবৃতিদাতাদের উদ্দেশে তিনি আবারও বলেন, “তারা এক্সপার্ট পাঠাবে, সমস্ত দলির দস্তখত দেখবেন এবং তারাই বিচার করে যাক এখানে কোনো অপরাধ আছে কি নাই। আর নয়তো আমাদের দেশে আইন আছে, আদালত আছে, শ্রম আইন আছে, শ্রম কোর্ট আছে। আইন তার নিজের গতিতে চলবে।”
চাইলে পাবো না সেই অবস্থাটা আর নাই: ব্রিকসের সদস্য পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারই ব্রিকসের সদস্যপদ পেতে হবে এমন কোনো চেষ্টা বাংলাদেশের ছিল না এবং বাংলাদেশ কাউকে সেটা বলেওনি। “চাইলে পাব না সেই অবস্থাটা আর নাই। কিন্তু প্রত্যেক কাজটারই একটা নিয়ম থাকে, আমরা সেই নিয়ম মেনেই চলি,” বলেছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় পঞ্চদশ ব্রিকস সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা জানাতে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আসেন সরকারপ্রধান। সেখানেই ব্রিকস নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন। বিশ্ব অর্থনীতির এক-চতুর্থাংশের নিয়ন্ত্রণকারী পাঁচ দেশের জোট ব্রিকসের সম্মেলনে যোগ দিতে এবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেন শেখ হাসিনা। এবারের সম্মেলনের আগেই বাংলাদেশের সদস্য হওয়ার আবেদনের বিষয়টি আলোচনায় ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এর আগে এ বিষয়ে আগ্রহের কথা বলেছিলেন। সম্মেলনে শেষ পর্যন্ত ৬ দেশকে ব্রিকসে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলেও বাংলাদেশ সেই তালিকায় নেই, যা নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। বিএনপি বিষয়টিকে বর্ণনা করেছে সরকারের ‘কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ হিসেবে। সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক ব্রিকসে বাংলাদেশের সুযোগ না পাওয়া এবং এ বিষয়ে চলমান আলোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী গত জুন মাসে তার ইতালি সফরের সময় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতে ব্রিকসে নতুন সদস্য নেওয়ার আলোচনার বিষয়টি তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, “আমার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হল, তখন আমন্ত্রণ জানালেন, ব্রিকস সম্মেলন করবে, আমাকে আসতে বললেন এবং সে সময় আমাকে জানালেন যে, তারা কিছু সদস্যপদ বাড়াবেনও এবং সেটাতে আমার মতামত জানতে চাইলেন। “আমি বললাম যে, এটা খুবই ভালো হবে। কারণ ব্রিকস যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন থেকে এই পাঁচটা দেশের সরকারের প্রধানের সঙ্গে আমার যোগাযোগ সবসময় ছিল এবং আছে।” গত জুন মাসে জেনিভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্রিকসের সভাপতি দেশ দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, বাংলাদেশের ব্রিকসে যোগদানের বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। এরপর জুনের মাঝামাঝিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসের সদস্যপদের জন্য আবেদন করে সরকার। চলতি মাসের ২৪ তারিখ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আমন্ত্রিত হয়ে যোগ দেন। এই সম্মেলনেই ছয়টি দেশকে নতুন করে ব্রিকসের সদস্য হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেগুলো হল- আর্জেন্টিনা, মিশর, ইথিওপিয়া, ইরান, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে জুনে যে আলোচনা হয়, সেই পর্যায়েই বিষয়টি ছিল বলে জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, “ব্রিকসের সদস্য হওয়ার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট আমাকে তখনই বলেছিলেন যে, ধাপে ধাপে নেবেন, তারা ওই ভৌগোলিক অবস্থানকে বিবেচনা করে যে দেশগুলি তাদেরকে নেবেন এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে তারা সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন। “আমরা ঠিক ওইভাবেৃ হ্যাঁ, নিলে আমরা খুব খুশি। কিন্তু আমরা ঠিক ওইভাবে ব্রিকসে এখনই সদস্যপদ পাব, এই প্রথমবারই যে সদস্যপদ পাব, এ ধরনের চিন্তা আমাদের মাথায় ছিলও না, আর সেই রকম চেষ্টাও কিন্তু আমরা করিও নাই বা কাউকে আমরা বলিও নাই।” ব্রাজিল ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা কিন্তু কাউকে কিছু বলতে যাইনি যে, এখনি মেম্বার করেন। তখন থেকে আমরা জানি যে তারা কয়েকটা দেশ নেবেন।” ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ অন্য সরকারপ্রধানদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজেও সদস্যপদ নিয়ে আলোচনার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “ওই সময় আলোচনা হয়, ‘এখন আমরা এই কয়জন নেব। এরপরে ধাপে ধাপে আমরা আরও সদস্য সংখ্যা বাড়াব’; এই।”
বিরোধীদলের সমালোচনার জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা জানি, এই ইস্যুটা আসবে বা আমাদের অপজিশান থেকে খুব হুতাশ, যে আমরা নাকি চেয়েছি, পাইনি, হেনতেন। “বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না এটা কিন্তু ঠিক না। অন্তত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের যে মর্যাদাটা আমরা তুলে ধরেছি, সেখানে আমাদের সেই সুযোগটা আছে।” তিনি বলেন, “তারা বলতে পারে, কারণ তারা বিএনপির আমলে ওইটাই ছিল। বাংলাদেশের কোনো অবস্থানই ছিল না সারাবিশ্বে। বাংলাদেশ মানেই ছিল দুর্ভিক্ষের দেশ, ঝড়ের দেশ, বন্যার দেশ, হাত পেতে চলার দেশ, ভিক্ষা চাওয়ার দেশ। এখন অন্তত বাংলাদেশ ভিক্ষা চাওয়ার দেশ না, এটা সবাই জানে।” প্রধানমন্ত্রী জানান, ব্রিকস জোটের অধীনে গঠিত নিউ ডেভেলপমন্টে ব্যাংকে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ শুরু থেকেই বাংলাদেশের ছিল এবং বাংলাদেশ ওই ব্যাংকের সদস্য হয়েছে। “আমাদের পক্ষ থেকে আমরা যখন শুনলাম যে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হচ্ছে, ওটার উপরে আমাদের আগ্রহটা বেশি ছিল, সেখানে আমরা যুক্ত হতে চেয়েছিলাম।” ওই ব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে দুটি প্রকল্প চালু থাকার কথাও আরেক প্রশ্নে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বিনিময়ের ক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট মুদ্রার বাধাধরা না কথাও তিনি বলেন।