নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে এগিয়ে না আসায় বিএনপির তীব্র সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দেশের জনগণের প্রতি বিএনপির কোনো দায়বদ্ধতা নেই। দায়বদ্ধতা থাকলে তারা বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্য করা বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষায় এগিয়ে আসতো। তারা এ ধরনের কোনো উদ্যোগ তারা গ্রহণ করেনি।
গতকাল বুধবার গণামাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বিবৃতিতে তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবাজারে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকা-ের দুর্ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ভয়াবহ এ অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। অগ্নিকা- ঘটার পর থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, তদারকি ও নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাঁরই নির্দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং অগ্নিকা- নিয়ন্ত্রণে সরকারি সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা প্রদান করেছে। আগুনের লেলিহান শিখা ৪টি মার্কেটের ৫ হাজার দোকান ভস্মীভূত করার পাশাপাশি পুড়িয়ে ছাই করেছে ব্যবসায়ীদের স্বপ্ন ও ব্যবসায়ী-কর্মচারীদের জীবিকার অবলম্বন। ভয়াবহ এই অগ্নিকা- নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিটের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটসহ সরকারের ৬টি সংস্থা সরাসরি অংশগ্রহণ করে এবং তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। সরকারি সংস্থাসমূহের সদস্যবৃন্দ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষায় প্রাণপণ চেষ্টা করে। অথচ এ রকম ভয়াবহ একটি দুর্ঘটনায় সেখানে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্য করা বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মালামাল রক্ষায় এগিয়ে আসার কোনো উদ্যোগ বিএনপি গ্রহণ করেনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে মানুষের জন্য রাজনীতি করে না; জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব না করে শুধু ঘরে বসে থেকে বিবৃতি প্রদান করে। ফলে এ রকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা নিয়েও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য তাদের চিরাচরিত অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন বিএনপি তামাশার নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তির প্রতিভূ বিএনপি এদেশে বার বার তামাশার নির্বাচন আয়োজন করেছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। দেশে অগণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবর্তক বিএনপির উপর জনগণ আর আস্থা রাখতে চায় না। মির্জা ফখরুল ইসলামের দাবি খালেদা জিয়াকে নাকি সরকার গৃহবন্দি করে রেখেছে এবং তারেক জিয়াকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী ও তারেক রহমানকে নির্বাসনে আওয়ামী লীগ সরকার পাঠায়নি। বিএনপি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য চিৎকার করে ওয়ান-ইলেভেনে সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলায় তারা দুজন আদালত কর্তৃক দ-প্রাপ্ত আসামী। আদালতের রায়ে দ-প্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া সাজা ভোগ করছেন। অন্যদিকে দুর্নীতির দায়ে দ-প্রাপ্ত পলাতক আসামী তারেক রহমান রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়েছিল। তিনি আরও বলেন, বিএনপি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিএনপির আমলে লুটপাটের মাধ্যমে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতিই ছিল তাদের রাজনীতির একমাত্র নীতি। দেশের জনগণ বিএনপির সেই অপশাসনের দুঃসময়ে ফিরে যেতে চায় না। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার গঠিত হবে। সকল সঙ্কট মোকাবিলা করে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুদক্ষ নেতৃত্বের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন বলেই বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে। আমরা আবারও বঙ্গবাজারের এই ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও কর্মজীবী মানুষের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। একইসাথে বলতে চাই, শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বদা তাদের পাশে আছে।