নিজস্ব প্রতিবেদক: সকালে ছেলে মেহরাব হোসেন রিমনকে (১২) নিয়ে মাংস কিনতে বেরিয়েছিলেন আবদুর রহিম (৪৮)। ভূমিকম্পের পর রহিমের খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, তাঁদের দুজনেরই মুঠোফোন বন্ধ। পরে সন্দেহ হওয়ায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে গিয়ে বাবা-ছেলের লাশ শনাক্ত করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটের সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার বংশালের কসাইটুলীতে একটি ভবনের নিচতলায় নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তীব্র ঝাঁকুনিতে দোকানের সামনে থাকা ক্রেতাদের ওপর ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হন। নিহত আরেকজন হলেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাফিউল ইসলাম রাফি। গুরুতরভাবে আহত হন রাফিউলের মা নুসরাত। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত আবদুর রহিম বিক্রমপুর গার্ডেন সিটিতে ফেব্রিকসের ব্যবসা করতেন। তাঁর তিন ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট ছেলে মেহরাবকে নিয়ে রাজধানীর সুরিটলা স্কুলের পেছনে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রকোনায়।
শুক্রবার বেলা দুপুর আড়াইটার দিকে মর্গে গিয়ে দুজনের লাশ শনাক্ত করেন নিহত আবদুর রহিমের ছোট ভাই মো. নাছির ও মো. মোস্তফা। ভাই ও ভাতিজার লাশ দেখে মর্গের সামনে আর্তনাদ করে ওঠেন নাছির। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ভাই খুব ভালো মানুষ। দুই বছর আগে হজ করে আসছে। ও আমার ভাই, আমার ভাইকে যেন আল্লাহ জান্নাতবাসী করেন।’
নাছির আরো বলেন, দুপুরে জুমার নামাজের পর মা ফোন করে বলেন, তাঁর ভাই ও ভাতিজা সকালে মাংস কিনতে বের হয়েছিলেন। ভূমিকম্পের পর থেকে তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে তাঁরা মর্গে খুঁজতে গিয়ে ভাই ও ভাতিজার লাশ শনাক্ত করেন। সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী। ভূমিকম্পটিকে মাঝারি মাত্রার বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সানা/ওআ/২১/১১/২০২৫





















