ঢাকা ১২:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় জনসমুদ্র

  • আপডেট সময় : ০৬:১৮:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় শুক্রবার ছুটির দিনে ভিড় জমিয়েছিলেন লাখো মানুষ। জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এই মেলার পর্দা নামবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। শেষ সময়ে এসে মেলা জমে উঠেছে পুরোপুরি। মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে যেন নেমেছে উৎসবের আমেজ। নানা বয়সী মানুষের ভিড়ে পুরো এলাকা মুখরিত। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ আবার ব্যস্ত গৃহস্থালির পণ্য কেনায়। কারো আগ্রহ আইসক্রিমের দোকানে তো কারও ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের স্টলে। মেলায় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটনের ৩২ ইঞ্চি অ্যান্ড্রয়েড ডিসপ্লের ডবল ডোর ফ্রিজ বেশ সাড়া ফেলেছে।

ফ্রিজটি ঘিরে ক্রেতাদের বেশ ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানীর বাড্ডা থেকে আসা রাশেদ হাসান বলেন, ‘এইরকম ফ্রিজ আজই প্রথম দেখলাম। ফ্রিজের দরজাটা মিরর হিসেবে যেমন কাজ করবে, তেমনি ইউটিউব ব্যবহার করে গান চালানো বা গুগল ব্যবহার করে কোনো কিছু ব্রাউজও করা যাবে।’ ওয়ালটনের কাস্টমার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা স্বপন আলী বলেন, “এই স্মার্ট ফ্রিজে একটি ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে, যেখানে অ্যান্ড্রোয়েড-১৩ ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে সাত থেকে আটটি মোড দেওয়া আছে। ফোন দিয়েও ফ্রিজটা কন্ট্রোল করা যাবে। ফোনের সব ফিচারই আপনি এখানে ব্যবহার করতে পারবেন, কল দেওয়া ছাড়া।

ডোর অ্যালার্ম, বিল্ট ইন ইনভারটারসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। বাণিজ্য মেলায় হরেক রকমের পণ্যের দোকানের মধ্যে গৃহস্থালির পণ্যের দোকানগুলোতে কম-বেশি ভিড় দেখা গেছে। মেলা উপলক্ষে দোকানগুলোতেও দেওয়া হয়েছে নানা রকম ‘অফার’, যা ক্রেতাদের বেশি আকৃষ্ট করে। মেলায় ‘আল্লাহর দান ক্রোকারিজ কর্নার’-এ যে কোনো গৃহস্থালি পণ্য মিলছিল ১৩০ টাকায়। সেখানে টিফিন বক্স কিনছিলেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা গৃহিনী সাদিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘মেলায় কিছু-কিছু জিনিস অফারে পাওয়া যায়। যেমন এখানে ১৩০ টাকায় নানা ধরনের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেজন্যই আসা। এমনিতে তো বাজার থেকেই কেনা যায়।

আরেকটা জিনিস হল, এখানে একই ধরনের অনেকগুলো দোকান থাকে। ফলে, ঘুরে-ফিরে পছন্দ করে কেনা যায়। বাণিজ্যমেলায় জামা-জুতা আর খাবারের দোকানও ক্রেতা দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে। মেলায় ‘আয়াত’ নামে একটি দোকান থেকে আচার কিনে বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছিলেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আসা ফারিয়া রেশমি নামের একজন। বেসরকারি এই চাকরিজীবী বলেন, “রসুনের আচার নিলাম। এটা আমার প্রিয়। জামা নিলাম নিজের জন্য। বাচ্চাকে জুতা কিনে দিয়েছি। সব মিলিয়ে ভালো একটা সময় কাটল। একটা উৎসব-উৎসব ব্যাপার আছে এখানে।” পাশেই দোকানে জুতা দেখছিলেন ধানমণ্ডি-২৭ থেকে আসা মীর হেলাল।

বেসরকারি এই চাকুরে বলেন, ‘বউ-বাচ্চা নিয়ে এসেছি ছুটির দিনে। আসলে আমাদের তো আনন্দের উপলক্ষ কমে যাচ্ছে। তার মধ্যে এই মেলায় এসে একটু আনন্দ হল, এইত।’ এদিকে মেলার ভেন্যু- পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার এলাকার সড়কের অবস্থা তথৈবচ। পুরো এলাকা জুড়ে ধুলাবালির রাজত্ব। প্রচুর লোক সমাগমের কারণে সরু বাঁশের বেড়া দিয়ে ঢুকতেও বেগ পেতে হয়েছে। বাড্ডার আলতাফ হোসেন বলেন, ‘মেলার পুরো এলাকাজুড়ে ধুলাবালি।

এসেই হাঁচি আর কাশি দেওয়ার মধ্যে আছি। এখানে মেলা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে যদি পানি ছিটানো যেত, ভালো হত।’ মেলায় সোর্সিং কর্নারে বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে ছয়টি চা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এগুলো হল- মেঘনা, কাজী অ্যান্ড কাজী, ইস্পাহানি, আবুল খায়ের, ফিনলে ও সিটি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মেলার যৌথ আয়োজক। এবারের মেলার বর্ষপণ্য ফার্নিচার। মেলায় এবার ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। আর বাকি ১১টি স্টল সাতটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। মেলায় অংশ নেওয়া সাতটি দেশ হল- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া। মাসব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলে রাত ৯টা পর্যন্ত ; আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় জনসমুদ্র

আপডেট সময় : ০৬:১৮:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় শুক্রবার ছুটির দিনে ভিড় জমিয়েছিলেন লাখো মানুষ। জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এই মেলার পর্দা নামবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। শেষ সময়ে এসে মেলা জমে উঠেছে পুরোপুরি। মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে যেন নেমেছে উৎসবের আমেজ। নানা বয়সী মানুষের ভিড়ে পুরো এলাকা মুখরিত। কেউ ছবি তুলছেন, কেউ আবার ব্যস্ত গৃহস্থালির পণ্য কেনায়। কারো আগ্রহ আইসক্রিমের দোকানে তো কারও ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের স্টলে। মেলায় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটনের ৩২ ইঞ্চি অ্যান্ড্রয়েড ডিসপ্লের ডবল ডোর ফ্রিজ বেশ সাড়া ফেলেছে।

ফ্রিজটি ঘিরে ক্রেতাদের বেশ ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে। রাজধানীর বাড্ডা থেকে আসা রাশেদ হাসান বলেন, ‘এইরকম ফ্রিজ আজই প্রথম দেখলাম। ফ্রিজের দরজাটা মিরর হিসেবে যেমন কাজ করবে, তেমনি ইউটিউব ব্যবহার করে গান চালানো বা গুগল ব্যবহার করে কোনো কিছু ব্রাউজও করা যাবে।’ ওয়ালটনের কাস্টমার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা স্বপন আলী বলেন, “এই স্মার্ট ফ্রিজে একটি ডিসপ্লে দেওয়া হয়েছে, যেখানে অ্যান্ড্রোয়েড-১৩ ভার্সন ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে সাত থেকে আটটি মোড দেওয়া আছে। ফোন দিয়েও ফ্রিজটা কন্ট্রোল করা যাবে। ফোনের সব ফিচারই আপনি এখানে ব্যবহার করতে পারবেন, কল দেওয়া ছাড়া।

ডোর অ্যালার্ম, বিল্ট ইন ইনভারটারসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। বাণিজ্য মেলায় হরেক রকমের পণ্যের দোকানের মধ্যে গৃহস্থালির পণ্যের দোকানগুলোতে কম-বেশি ভিড় দেখা গেছে। মেলা উপলক্ষে দোকানগুলোতেও দেওয়া হয়েছে নানা রকম ‘অফার’, যা ক্রেতাদের বেশি আকৃষ্ট করে। মেলায় ‘আল্লাহর দান ক্রোকারিজ কর্নার’-এ যে কোনো গৃহস্থালি পণ্য মিলছিল ১৩০ টাকায়। সেখানে টিফিন বক্স কিনছিলেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা গৃহিনী সাদিয়া সুলতানা। তিনি বলেন, ‘মেলায় কিছু-কিছু জিনিস অফারে পাওয়া যায়। যেমন এখানে ১৩০ টাকায় নানা ধরনের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। সেজন্যই আসা। এমনিতে তো বাজার থেকেই কেনা যায়।

আরেকটা জিনিস হল, এখানে একই ধরনের অনেকগুলো দোকান থাকে। ফলে, ঘুরে-ফিরে পছন্দ করে কেনা যায়। বাণিজ্যমেলায় জামা-জুতা আর খাবারের দোকানও ক্রেতা দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রে। মেলায় ‘আয়াত’ নামে একটি দোকান থেকে আচার কিনে বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছিলেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আসা ফারিয়া রেশমি নামের একজন। বেসরকারি এই চাকরিজীবী বলেন, “রসুনের আচার নিলাম। এটা আমার প্রিয়। জামা নিলাম নিজের জন্য। বাচ্চাকে জুতা কিনে দিয়েছি। সব মিলিয়ে ভালো একটা সময় কাটল। একটা উৎসব-উৎসব ব্যাপার আছে এখানে।” পাশেই দোকানে জুতা দেখছিলেন ধানমণ্ডি-২৭ থেকে আসা মীর হেলাল।

বেসরকারি এই চাকুরে বলেন, ‘বউ-বাচ্চা নিয়ে এসেছি ছুটির দিনে। আসলে আমাদের তো আনন্দের উপলক্ষ কমে যাচ্ছে। তার মধ্যে এই মেলায় এসে একটু আনন্দ হল, এইত।’ এদিকে মেলার ভেন্যু- পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার এলাকার সড়কের অবস্থা তথৈবচ। পুরো এলাকা জুড়ে ধুলাবালির রাজত্ব। প্রচুর লোক সমাগমের কারণে সরু বাঁশের বেড়া দিয়ে ঢুকতেও বেগ পেতে হয়েছে। বাড্ডার আলতাফ হোসেন বলেন, ‘মেলার পুরো এলাকাজুড়ে ধুলাবালি।

এসেই হাঁচি আর কাশি দেওয়ার মধ্যে আছি। এখানে মেলা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে যদি পানি ছিটানো যেত, ভালো হত।’ মেলায় সোর্সিং কর্নারে বাংলাদেশ চা বোর্ডের উদ্যোগে ছয়টি চা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এগুলো হল- মেঘনা, কাজী অ্যান্ড কাজী, ইস্পাহানি, আবুল খায়ের, ফিনলে ও সিটি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মেলার যৌথ আয়োজক। এবারের মেলার বর্ষপণ্য ফার্নিচার। মেলায় এবার ৩৬২টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫১টিই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের স্টল-প্যাভিলিয়ন। আর বাকি ১১টি স্টল সাতটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। মেলায় অংশ নেওয়া সাতটি দেশ হল- ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়া। মাসব্যাপী এ মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে চলে রাত ৯টা পর্যন্ত ; আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেলা চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।