ঢাকা ১২:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

ছায়াপথে ‘গ্রহ খেকো’ তারা দেখাতে সাহায্য করল এআই

  • আপডেট সময় : ১২:৩৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪
  • ৫৭ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মিল্কিওয়ে ছায়াপথে এমন শত শত শ্বেত বামন তারা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন, যেগুলো গ্রহ গ্রাস করে ‘দূষিত’ হয় বলে দাবি তাদের। দূরের, ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন গ্রহের ভেতরের খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে এইসব তারার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এদের খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। নতুন এআই কৌশলের সহায়তায় বিজ্ঞানীরা এখন এইসব অধরা তারা আরও দ্রুত ও নির্ভুল উপায়ে শনাক্ত করার সুযোগ পাচ্ছেন।
‘হোয়াইট ডোয়ার্ফ’ বা শ্বেত বামন এমন ধরনের তারা, যা নিজের জীবনচক্রের শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে, যেখানে এগুলো নিজেদের বাইরের স্তর ফেলে দিয়ে ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। আমাদের সূর্যও একদিন শ্বেত বামনে পরিণত হবে। তবে এর জন্য আরও ছয়শ কোটি বছর অপেক্ষা করতে হবে। কখনও কখনও শ্বেত বামন তারাকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহগুলো তারার নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণের টান অনুভব করে। ফলে, গ্রহগুলো একেবারে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, যার ধ্বংসাবশেষ ‘গিলে খায়’ তারাটি। এমনটি যখন ঘটে, তখন তারার বায়ুমণ্ডল গ্রহগুলোর মূল অংশে থাকা ধাতুর কারণে ‘দূষিত’ হয়ে যায়। “দূষিত শ্বেত বামন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমরা আক্ষরিকভাবেই বিভিন্ন গ্রহের ভেতরের অংশকে তারার পৃষ্ঠে সেদ্ধ হতে দেখেছি,” বলেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও অস্টিনের ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস’র স্নাতক শিক্ষার্থী মালিয়া কাও। “আমাদের সৌরজগতের বাইরের বিভিন্ন গ্রহ কী দিয়ে তৈরি, এইসব দূষিত শ্বেত বামন তা বোঝার সবচেয়ে ভাল উপায় হতে পারে।” তবে, এ ধরনের তারা খুঁজে পাওয়া সহজ বিষয় নয়।
এদের বায়ুমণ্ডলে ভারী ধাতুর অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা বেশ সূক্ষ্ম ও এগুলোকে শুধু অল্প সময়ের জন্যই শনাক্ত করা যায়। তাই প্রচলিত উপায়ে জ্যোতির্বিদদের এগুলো খুঁজে পেতে জরিপ থেকে বিশাল সংখ্যক তথ্য ঘেঁটে দেখতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং কাজ। এ প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে কাওয়ের গবেষণা দলটি ‘ম্যানিফোল্ড লার্নিং’ নামের এআই কৌশল ব্যবহার করেছে, যার অ্যালগরিদম দিয়ে বিশাল ডেটাসেটে স্ক্যান করার ও একই ধরনের বিভিন্ন বস্তু সমন্বয় করার সুযোগ মেলে। ফলে, গবেষকরা এমন সম্ভাব্য তারা সহজেই শনাক্ত করতে পেরেছেন, যেগুলো নিয়ে আরও গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে। গবেষণা দলটি ‘গাইয়া’ নামের স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া ডেটায় এ কৌশল প্রয়োগ করেছে, যা এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি সম্ভাব্য শ্বেত বামনের তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। কম রেজুলিউশনের ডেটা থাকা সত্ত্বেও এআই কৌশলটি ৩৭৫টি তারা শনাক্ত করেছে, যার মধ্যে ভারী ধাতুর মাধ্যমে দূষণ ঘটার চিহ্ন দেখা গেছে। পরবর্তীতে ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস’-এর ‘ম্যাকডোনাল্ড অবজারভেটরি’তে অবস্থিত ‘হবি-এবারলি’ টেলিস্কোপের বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করেছে, এইসব তারা আসলে দূষিত শ্বেত বামন ছিল।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছায়াপথে ‘গ্রহ খেকো’ তারা দেখাতে সাহায্য করল এআই

আপডেট সময় : ১২:৩৮:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মিল্কিওয়ে ছায়াপথে এমন শত শত শ্বেত বামন তারা খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন, যেগুলো গ্রহ গ্রাস করে ‘দূষিত’ হয় বলে দাবি তাদের। দূরের, ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন গ্রহের ভেতরের খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে এইসব তারার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তবে এদের খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। নতুন এআই কৌশলের সহায়তায় বিজ্ঞানীরা এখন এইসব অধরা তারা আরও দ্রুত ও নির্ভুল উপায়ে শনাক্ত করার সুযোগ পাচ্ছেন।
‘হোয়াইট ডোয়ার্ফ’ বা শ্বেত বামন এমন ধরনের তারা, যা নিজের জীবনচক্রের শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে, যেখানে এগুলো নিজেদের বাইরের স্তর ফেলে দিয়ে ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। আমাদের সূর্যও একদিন শ্বেত বামনে পরিণত হবে। তবে এর জন্য আরও ছয়শ কোটি বছর অপেক্ষা করতে হবে। কখনও কখনও শ্বেত বামন তারাকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহগুলো তারার নিজস্ব মাধ্যাকর্ষণের টান অনুভব করে। ফলে, গ্রহগুলো একেবারে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, যার ধ্বংসাবশেষ ‘গিলে খায়’ তারাটি। এমনটি যখন ঘটে, তখন তারার বায়ুমণ্ডল গ্রহগুলোর মূল অংশে থাকা ধাতুর কারণে ‘দূষিত’ হয়ে যায়। “দূষিত শ্বেত বামন নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আমরা আক্ষরিকভাবেই বিভিন্ন গ্রহের ভেতরের অংশকে তারার পৃষ্ঠে সেদ্ধ হতে দেখেছি,” বলেন এ গবেষণার প্রধান লেখক ও অস্টিনের ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস’র স্নাতক শিক্ষার্থী মালিয়া কাও। “আমাদের সৌরজগতের বাইরের বিভিন্ন গ্রহ কী দিয়ে তৈরি, এইসব দূষিত শ্বেত বামন তা বোঝার সবচেয়ে ভাল উপায় হতে পারে।” তবে, এ ধরনের তারা খুঁজে পাওয়া সহজ বিষয় নয়।
এদের বায়ুমণ্ডলে ভারী ধাতুর অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা বেশ সূক্ষ্ম ও এগুলোকে শুধু অল্প সময়ের জন্যই শনাক্ত করা যায়। তাই প্রচলিত উপায়ে জ্যোতির্বিদদের এগুলো খুঁজে পেতে জরিপ থেকে বিশাল সংখ্যক তথ্য ঘেঁটে দেখতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং কাজ। এ প্রক্রিয়ার গতি বাড়াতে কাওয়ের গবেষণা দলটি ‘ম্যানিফোল্ড লার্নিং’ নামের এআই কৌশল ব্যবহার করেছে, যার অ্যালগরিদম দিয়ে বিশাল ডেটাসেটে স্ক্যান করার ও একই ধরনের বিভিন্ন বস্তু সমন্বয় করার সুযোগ মেলে। ফলে, গবেষকরা এমন সম্ভাব্য তারা সহজেই শনাক্ত করতে পেরেছেন, যেগুলো নিয়ে আরও গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে। গবেষণা দলটি ‘গাইয়া’ নামের স্পেস টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া ডেটায় এ কৌশল প্রয়োগ করেছে, যা এখন পর্যন্ত এক লাখের বেশি সম্ভাব্য শ্বেত বামনের তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। কম রেজুলিউশনের ডেটা থাকা সত্ত্বেও এআই কৌশলটি ৩৭৫টি তারা শনাক্ত করেছে, যার মধ্যে ভারী ধাতুর মাধ্যমে দূষণ ঘটার চিহ্ন দেখা গেছে। পরবর্তীতে ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস’-এর ‘ম্যাকডোনাল্ড অবজারভেটরি’তে অবস্থিত ‘হবি-এবারলি’ টেলিস্কোপের বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করেছে, এইসব তারা আসলে দূষিত শ্বেত বামন ছিল।