ঢাকা ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

ছাত্র সংগঠনের পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অচল হবে কেন?

  • আপডেট সময় : ১০:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ অগাস্ট ২০২২
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

রেজানুর রহমান : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ বঞ্চিত নেতা কর্মীরা কার্যত বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে দিয়েছিল। চট্টগ্রাম শহর থেকে যে শাটল ট্রেনটি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসা করে সেই ট্রেনটিও বন্ধ করে দিয়েছিল ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ বঞ্চিত নেতা কর্মীরা। তারা ট্রেনের চালককে জোর পূর্বক আটকেও রাখেন। ফলে শাটল ট্রেন ছাড়েনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি গেটে পাহারা দেয় বিক্ষোভকারীরা। কোথাও কোথাও টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। কার্যত দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। যদিও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। তবুও প্রশ্ন থেকে যায়- এ ধরনের আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার দায় কার?
ছাত্রলীগের কমিটি কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৈরি করে? নিশ্চয়ই না। এটি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ছাত্রলীগের কমিটিতে কে থাকবেন কে থাকবেন না তা নির্ধারণ করার দায়-দায়িত্ব সংগঠনের সংশ্লিষ্ট নেতা-নেত্রীর ওপর। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও ভূমিকা থাকার কথা নয়। অথচ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম অচল করে দেওয়া হয়েছে। একটি ছাত্র সংগঠনের কমিটি গঠনে যদি অনিয়ম হয়েই থাকে তাহলে সে ব্যাপারে সাংগঠনিক পর্যায়ে প্রতিবাদ জানানোই কার্যকর প্রক্রিয়া। কিন্তু কোন যুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হলো? কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন এটি মূলত পদ বঞ্চিতদের দাবি আদায়ের একটি প্রক্রিয়া মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিলে পদ বঞ্চিতদের দাবি গুরুত্ব পাবে। উপর মহলে পদ বঞ্চিতদের ব্যাপারে আলোচনা গুরুত্ব পাবে। কিন্তু প্রক্রিয়াটি কি আদৌ শোভন? সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে, বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিয়ে কোনও ছাত্র সংগঠন যদি সাংগঠনিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করে তা কি যুক্তিযুক্ত?
সংগঠনে যোগ্যরা জায়গা পাননি। এজন্য তারা প্রতিবাদ করতেই পারেন। তাই বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হবে?
ধরা যাক, এই যে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হলো, ক্লাস পরীক্ষা হলো না। আজ বা কাল দেখা গেলো পদ বঞ্চিতরা পদ পেয়েছেন। সব কিছু মিটমাট। যারা বিবাদে লিপ্ত হয়েছিলেন তারা সবাই খুশি। সব কিছু আবার আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে গেলো। কিন্তু মাঝখানে যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকল, ক্লাস পরীক্ষা হলো না। এই যে শিক্ষা জীবনের ক্ষতি হলো তার দায় কার? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের? আমরা কি এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করতে পারি? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো বিশ্ববিদ্যালয় অচল করেনি। অচল করেছে একটি ছাত্র সংগঠন। তাও যদি হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে– তাহলে না হয় কথা ছিল। একটি ছাত্র সংগঠনের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব নিরসনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়ার অর্থ কী? এই প্রশ্নই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বহুদিনের। রয়েছে দুটি গ্রুপ। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় দুইজন জনপ্রিয় নেতার কথায় বিবাদমান দুটি গ্রুপ পরিচালিত হয়। আবার এই দুটি গ্রুপের ভেতর রয়েছে ১১টিরও বেশি উপদল। ফলে সংগঠনের কমিটিতে স্থান পাওয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে মতবিরোধ চলছিল।
এখন প্রশ্ন হলো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা হওয়ার জন্য কেন এত তোড়জোড়, কেন এত আন্দোলন? সবিনয়ে একটি প্রশ্ন রাখতে চাই– দেশের ছাত্র সংগঠনগুলো আদৌ কি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন উন্নত করার জন্য আন্দোলন করে? আজ না হোক কাল নিশ্চয়ই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পদ বঞ্চিতরা হয়তো কাঙ্ক্ষিত পদ ফিরে পাবেন। এতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আদৌ কি কোনও উপকার হবে? তাহলে কেন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জিম্মি করে এমন আন্দোলন।

একটি ছোট্ট ঘটনা উল্লেখ করে লেখাটি শেষ করি। কয়েক বছর আগের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসিতে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ দেখি একদল শিক্ষার্থী মিছিল করে টিএসসির মূল ফটকের সামনে এসে দুই দিকে লম্বালম্বি দাঁড়িয়ে গেলো। হঠাৎ তারা এভাবে দাঁড়ালো কেন? পাশেই দাঁড়ানো টিএসসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলাম। তিনি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললেন, অপেক্ষা করেন, নিজেই দেখতে পারবেন।
আমাকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। পাঁচ/দশ মিনিটের ব্যবধানে একটি পাজেরো জিপ এসে নামল টিএসসির সামনে। যারা এতক্ষণ দুই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল তারা একজনের নাম ধরে স্লোগান তুললো। যার নামে স্লোগন উটেছে তিনি গাড়ি থেকে নামা মাত্রই তাকে গার্ড অব অনার দিতে দিতে লাইনে দাঁড়ানো তরুণেরা টিএসসির ভেতরে চলে গেলো। খোঁজ নিয়ে জানলাম গাড়ি থেকে যিনি এই মাত্র নেমেছেন তিনি একটি ছাত্র সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক। সেদিনই বুঝেছিলাম ছাত্র সংগঠনের নেতা হওয়ার জন্য কেন এত দৌড়ঝাপ, মারামারি। এই প্রবণতার ভবিষ্যৎ কী?
লেখক: কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, সম্পাদক আনন্দ আলো।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছাত্র সংগঠনের পদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় অচল হবে কেন?

আপডেট সময় : ১০:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ অগাস্ট ২০২২

রেজানুর রহমান : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ বঞ্চিত নেতা কর্মীরা কার্যত বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে দিয়েছিল। চট্টগ্রাম শহর থেকে যে শাটল ট্রেনটি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসা করে সেই ট্রেনটিও বন্ধ করে দিয়েছিল ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ বঞ্চিত নেতা কর্মীরা। তারা ট্রেনের চালককে জোর পূর্বক আটকেও রাখেন। ফলে শাটল ট্রেন ছাড়েনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি গেটে পাহারা দেয় বিক্ষোভকারীরা। কোথাও কোথাও টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। কার্যত দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। যদিও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। তবুও প্রশ্ন থেকে যায়- এ ধরনের আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার দায় কার?
ছাত্রলীগের কমিটি কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৈরি করে? নিশ্চয়ই না। এটি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ছাত্রলীগের কমিটিতে কে থাকবেন কে থাকবেন না তা নির্ধারণ করার দায়-দায়িত্ব সংগঠনের সংশ্লিষ্ট নেতা-নেত্রীর ওপর। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও ভূমিকা থাকার কথা নয়। অথচ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম অচল করে দেওয়া হয়েছে। একটি ছাত্র সংগঠনের কমিটি গঠনে যদি অনিয়ম হয়েই থাকে তাহলে সে ব্যাপারে সাংগঠনিক পর্যায়ে প্রতিবাদ জানানোই কার্যকর প্রক্রিয়া। কিন্তু কোন যুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হলো? কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন এটি মূলত পদ বঞ্চিতদের দাবি আদায়ের একটি প্রক্রিয়া মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিলে পদ বঞ্চিতদের দাবি গুরুত্ব পাবে। উপর মহলে পদ বঞ্চিতদের ব্যাপারে আলোচনা গুরুত্ব পাবে। কিন্তু প্রক্রিয়াটি কি আদৌ শোভন? সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে, বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিয়ে কোনও ছাত্র সংগঠন যদি সাংগঠনিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করে তা কি যুক্তিযুক্ত?
সংগঠনে যোগ্যরা জায়গা পাননি। এজন্য তারা প্রতিবাদ করতেই পারেন। তাই বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ করে দিতে হবে?
ধরা যাক, এই যে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হলো, ক্লাস পরীক্ষা হলো না। আজ বা কাল দেখা গেলো পদ বঞ্চিতরা পদ পেয়েছেন। সব কিছু মিটমাট। যারা বিবাদে লিপ্ত হয়েছিলেন তারা সবাই খুশি। সব কিছু আবার আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে গেলো। কিন্তু মাঝখানে যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকল, ক্লাস পরীক্ষা হলো না। এই যে শিক্ষা জীবনের ক্ষতি হলো তার দায় কার? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের? আমরা কি এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দায়ী করতে পারি? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো বিশ্ববিদ্যালয় অচল করেনি। অচল করেছে একটি ছাত্র সংগঠন। তাও যদি হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে– তাহলে না হয় কথা ছিল। একটি ছাত্র সংগঠনের অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব নিরসনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়ার অর্থ কী? এই প্রশ্নই এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বহুদিনের। রয়েছে দুটি গ্রুপ। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় দুইজন জনপ্রিয় নেতার কথায় বিবাদমান দুটি গ্রুপ পরিচালিত হয়। আবার এই দুটি গ্রুপের ভেতর রয়েছে ১১টিরও বেশি উপদল। ফলে সংগঠনের কমিটিতে স্থান পাওয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে মতবিরোধ চলছিল।
এখন প্রশ্ন হলো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতা হওয়ার জন্য কেন এত তোড়জোড়, কেন এত আন্দোলন? সবিনয়ে একটি প্রশ্ন রাখতে চাই– দেশের ছাত্র সংগঠনগুলো আদৌ কি সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন উন্নত করার জন্য আন্দোলন করে? আজ না হোক কাল নিশ্চয়ই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতির উন্নতি হবে। পদ বঞ্চিতরা হয়তো কাঙ্ক্ষিত পদ ফিরে পাবেন। এতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের আদৌ কি কোনও উপকার হবে? তাহলে কেন সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জিম্মি করে এমন আন্দোলন।

একটি ছোট্ট ঘটনা উল্লেখ করে লেখাটি শেষ করি। কয়েক বছর আগের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসিতে দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ দেখি একদল শিক্ষার্থী মিছিল করে টিএসসির মূল ফটকের সামনে এসে দুই দিকে লম্বালম্বি দাঁড়িয়ে গেলো। হঠাৎ তারা এভাবে দাঁড়ালো কেন? পাশেই দাঁড়ানো টিএসসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলাম। তিনি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললেন, অপেক্ষা করেন, নিজেই দেখতে পারবেন।
আমাকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না। পাঁচ/দশ মিনিটের ব্যবধানে একটি পাজেরো জিপ এসে নামল টিএসসির সামনে। যারা এতক্ষণ দুই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল তারা একজনের নাম ধরে স্লোগান তুললো। যার নামে স্লোগন উটেছে তিনি গাড়ি থেকে নামা মাত্রই তাকে গার্ড অব অনার দিতে দিতে লাইনে দাঁড়ানো তরুণেরা টিএসসির ভেতরে চলে গেলো। খোঁজ নিয়ে জানলাম গাড়ি থেকে যিনি এই মাত্র নেমেছেন তিনি একটি ছাত্র সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক। সেদিনই বুঝেছিলাম ছাত্র সংগঠনের নেতা হওয়ার জন্য কেন এত দৌড়ঝাপ, মারামারি। এই প্রবণতার ভবিষ্যৎ কী?
লেখক: কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, সম্পাদক আনন্দ আলো।