কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কিশোরগঞ্জে হামলা ও গুলির ঘটনায় এবার সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে।
মামলায় তিনি ছাড়াও আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রীসহ ১২৪ জনকে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, মঙ্গলবার রাতে তহমুল ইসলাম মাজহারুল নামে এক ব্যক্তি কিশোরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
২৭ বছরের তহমুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ সদরের উত্তর লতিবাবাদ এলাকার আবু তাহের ভূঁইয়ার ছেলে।
মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তহমুল ইসলাম নিজেকে বিএনপির একজন কর্মী পরিচয় দিয়ে বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের তালিকায় তার নাম রয়েছে।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার পতনে সংগঠিত ছাত্র-জনতার গড়ে ওঠা ঐক্য-আন্দোলনকে দমন করতে আসামি তালিকায় থাকা সাবেক রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নেতারা সারা দেশে গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা কিশোরগঞ্জে যাতে কোনো আন্দোলন হতে না পারে সেজন্য বাকি আসামিদের নির্দেশ দেন।
এ নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য আসামিরা শটগান, বন্দুক, পিস্তল, ককটেল, বোমা ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে গত বছরের ৪ আগস্ট বেলা ১২টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় ছাত্র–জনতার মিছিলে হামলা চালায়।
তাদের গুলিতে মামলার বাদী মাথা-হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন। একইসঙ্গে তার সাক্ষীরাও অসংখ্য গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। এ ছাড়া আসামিরা গ্রেনেড, ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেন।
আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কারণে মামলাটি করতে দেরি হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদি।
ওসি জানান, মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আর সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদর নাম রয়েছে আসামি তালিকার তিন নম্বরে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিয়ে কিশোরগঞ্জে এই প্রথম কোনো মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতিকে আসামি করা হলো।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিদের মধ্যে আছেন- শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ (জয়), মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), রাদওয়ান সিদ্দিক ববি, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, হাসান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, শেখ ফজলে নূর তাপস, শামীম ওসমান, কবির বিন আনোয়ার, তারিক আহমেদ সিদ্দীক এবং নাজমুল হাসান পাপন ও রাষ্ট্রপতির ছেলে রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক।
এছাড়া জেলার পাঁচজন সংসদ সদস্যসহ অন্য আসামিরা জেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটির নেতা-কর্মী। ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মামলাটি তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।