ঢাকা ১২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

ছাত্রলীগের পর ৯ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি

  • আপডেট সময় : ০১:৪৯:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির অনুমোদন নেই। তা সত্ত্বেও গত সেপ্টেম্বরে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। এবার ৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল।
গত রোববার বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ শাখা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি ঘোষণা করেছেন সংগঠনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. আবু হোরায়রা ও সাধারণ সম্পাদক এম রাজীবুল ইসলাম তালুকদার।
গত সেপ্টেম্বরে যখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়, তখন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি না রাখার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য ও উদ্যোক্তারা। তখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি থাকা উচিত। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্ররাজনীতিকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশে বলব, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দয়া করে জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেবেন না।’
সেপ্টেম্বরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানদের একটি চিঠি দিয়েছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি)। এতে বলা হয়েছিল, ট্রাস্টের অধীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত সেশনজটমুক্ত অলাভজনক ও অরাজনৈতিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পলিসি (নীতি), শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনৈতিক কর্মকা- চলবে কি না, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম দিয়ে নির্ধারিত। অর্থাৎ, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি করা যাবে কি না, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে নির্ধারিত হবে। এপিইউবি মনে করে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নীতি, শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে।
সংগঠনের পক্ষে ওই চিঠি দিয়েছিলেন এপিইউবির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবার একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির সুযোগ নেই। আমরা ইতিমধ্যে আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি। ছাত্রলীগের কমিটির ক্ষেত্রে আমরা যে অবস্থান নিয়েছিলাম, ছাত্রদলের ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থান একই। যারাই কমিটি ঘোষণা করুক না কেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কেউ এ রাজনীতির চর্চা করতে পারবে না। যেহেতু আমরা আগেই বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি, এর ফলে নতুন করে আর চিঠি দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না।’
ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর অন্তত পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছিলেন, শুধু ছাত্রলীগ নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনেরই রাজনীতি করার অনুমোদন নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। বর্তমান ছাত্ররাজনীতি কোনো সুফল বয়ে আনবে বলে তাঁরা মনে করেন না। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ৯ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করল ছাত্রদল।
ছাত্রদলের প্রতি শিক্ষার্থীরা সহানুভূতিশীল বলে দাবি করেছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের অপরাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্ররাজনীতির প্রতি একধরনের ভয়, ক্ষোভ ও ঘৃণা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এর দায় ছাত্রদল বহন করবে না। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতোই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন ও ছাত্রদলের প্রতি সহানুভূতিশীল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছাত্রলীগের পর ৯ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি

আপডেট সময় : ০১:৪৯:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির অনুমোদন নেই। তা সত্ত্বেও গত সেপ্টেম্বরে ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। এবার ৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল।
গত রোববার বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এবং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ শাখা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি ঘোষণা করেছেন সংগঠনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. আবু হোরায়রা ও সাধারণ সম্পাদক এম রাজীবুল ইসলাম তালুকদার।
গত সেপ্টেম্বরে যখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়, তখন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি না রাখার বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য ও উদ্যোক্তারা। তখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের জন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি থাকা উচিত। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্ররাজনীতিকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করছে। তাদের উদ্দেশে বলব, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দয়া করে জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেবেন না।’
সেপ্টেম্বরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানদের একটি চিঠি দিয়েছিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি)। এতে বলা হয়েছিল, ট্রাস্টের অধীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত সেশনজটমুক্ত অলাভজনক ও অরাজনৈতিক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পলিসি (নীতি), শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনৈতিক কর্মকা- চলবে কি না, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম দিয়ে নির্ধারিত। অর্থাৎ, কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি করা যাবে কি না, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে নির্ধারিত হবে। এপিইউবি মনে করে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নীতি, শৃঙ্খলা ও নিয়মকানুন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার উপযুক্ত পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে।
সংগঠনের পক্ষে ওই চিঠি দিয়েছিলেন এপিইউবির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবার একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির সুযোগ নেই। আমরা ইতিমধ্যে আমাদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি। ছাত্রলীগের কমিটির ক্ষেত্রে আমরা যে অবস্থান নিয়েছিলাম, ছাত্রদলের ক্ষেত্রেও আমাদের অবস্থান একই। যারাই কমিটি ঘোষণা করুক না কেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কেউ এ রাজনীতির চর্চা করতে পারবে না। যেহেতু আমরা আগেই বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি, এর ফলে নতুন করে আর চিঠি দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না।’
ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর অন্তত পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছিলেন, শুধু ছাত্রলীগ নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনেরই রাজনীতি করার অনুমোদন নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। বর্তমান ছাত্ররাজনীতি কোনো সুফল বয়ে আনবে বলে তাঁরা মনে করেন না। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ৯ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করল ছাত্রদল।
ছাত্রদলের প্রতি শিক্ষার্থীরা সহানুভূতিশীল বলে দাবি করেছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের অপরাজনীতির কারণে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্ররাজনীতির প্রতি একধরনের ভয়, ক্ষোভ ও ঘৃণা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এর দায় ছাত্রদল বহন করবে না। অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মতোই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন ও ছাত্রদলের প্রতি সহানুভূতিশীল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।