ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

ছয় মাসে সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকার সিগারেট বিক্রি বিএটিবিসির

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি বা বিএটিবিসির মুনাফায় ধস নেমেছে। গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফা অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। যদিও এ সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির সিগারেট বিক্রি ৫ শতাংশ বা এক হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়েছে।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার (২৭ জুলাই) কোম্পানিটি তাদের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করে। সেই আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিএবিটিসির মুনাফা, আয়, ব্যয় ও করসংক্রান্ত নানা বিষয়ে জানা যায়। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো সিগারেট বিক্রি করে আয় করেছে ২৩ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি বাবদ আয় ছিল ২২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সিগারেট বিক্রি করে আয় বেড়েছে ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা বা ৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৪১৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৯২৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর মুনাফা অর্ধেকের বেশি বা ৫১০ কোটি টাকা কমে গেছে।
আয় বৃদ্ধির পরও মুনাফা এতটা কমে গেল কেন? আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে সেই তথ্য পাওয়া গেছে। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট, পরিচালন খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে। এসব কারণে আয় বাড়লেও সেই তুলনায় মুনাফা বাড়েনি। উল্টো গত বছরের বাড়তি খরচ সংকুলান হয়নি বাড়তি আয়ে। তাতে টান পড়েছে মুনাফায়। কোম্পানির মুনাফা কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে রোববার ডিএসিতে জানানো হয়েছে, গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিগারেট বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। বিক্রি না বাড়লেও মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত বছরের চেয়ে আয় বেড়েছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার কারণে চলতি বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির পরিচালন খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। যার কারণে শেষ পর্যন্ত মুনাফায় টান লাগে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই থেকে বিএটির কারখানা রাজধানীর মহাখালী থেকে সরিয়ে আশুলিয়ায় নেওয়া হয়। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর পরিচালন বাবদ খরচ হয়েছে ৬৫৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩৮৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া গত জানুয়ারি থেকে জুন-এই ছয় মাসে বিএটিবিসি সরকারকে সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ পরিশোধ করেছে ১৯ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি এই বাবদ সরকারকে দিয়েছিল ১৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার মতো কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা কমে যাওয়ার খবরে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে রোববার ঢাকার বাজারে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রায় ২৬ টাকা বা ৮ শতাংশের মতো কমে গেছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ে এক দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতন। লেনদেন শেষে ডিএসইতে এটির শেয়ারের দাম কমে দাঁড়ায় ২৯৬ টাকা ২০ পয়সায়। চেয়ারের দাম কমলেও শনিবার ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছিল কোম্পানিটি। এদিন ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির প্রায় ৩৯ কোটি টাকার সমমূল্যের সোয়া ১৩ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ছয় মাসে সাড়ে ২৩ হাজার কোটি টাকার সিগারেট বিক্রি বিএটিবিসির

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি বা বিএটিবিসির মুনাফায় ধস নেমেছে। গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানিটির মুনাফা অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। যদিও এ সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির সিগারেট বিক্রি ৫ শতাংশ বা এক হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়েছে।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার (২৭ জুলাই) কোম্পানিটি তাদের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য প্রকাশ করে। সেই আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে বিএবিটিসির মুনাফা, আয়, ব্যয় ও করসংক্রান্ত নানা বিষয়ে জানা যায়। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো সিগারেট বিক্রি করে আয় করেছে ২৩ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির বিক্রি বাবদ আয় ছিল ২২ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সিগারেট বিক্রি করে আয় বেড়েছে ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা বা ৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথমার্ধে সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৪১৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৯২৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর মুনাফা অর্ধেকের বেশি বা ৫১০ কোটি টাকা কমে গেছে।
আয় বৃদ্ধির পরও মুনাফা এতটা কমে গেল কেন? আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে সেই তথ্য পাওয়া গেছে। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট, পরিচালন খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে গেছে। এসব কারণে আয় বাড়লেও সেই তুলনায় মুনাফা বাড়েনি। উল্টো গত বছরের বাড়তি খরচ সংকুলান হয়নি বাড়তি আয়ে। তাতে টান পড়েছে মুনাফায়। কোম্পানির মুনাফা কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে রোববার ডিএসিতে জানানো হয়েছে, গত বছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর সিগারেট বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। বিক্রি না বাড়লেও মূল্যবৃদ্ধির কারণে গত বছরের চেয়ে আয় বেড়েছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার কারণে চলতি বছরের প্রথমার্ধে কোম্পানিটির পরিচালন খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। যার কারণে শেষ পর্যন্ত মুনাফায় টান লাগে।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই থেকে বিএটির কারখানা রাজধানীর মহাখালী থেকে সরিয়ে আশুলিয়ায় নেওয়া হয়। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর পরিচালন বাবদ খরচ হয়েছে ৬৫৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩৮৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া গত জানুয়ারি থেকে জুন-এই ছয় মাসে বিএটিবিসি সরকারকে সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ পরিশোধ করেছে ১৯ হাজার ৪০৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি এই বাবদ সরকারকে দিয়েছিল ১৭ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে, এক বছরের ব্যবধানে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার মতো কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে।
এদিকে মুনাফা কমে যাওয়ার খবরে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে রোববার ঢাকার বাজারে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর প্রতিটি শেয়ারের দাম প্রায় ২৬ টাকা বা ৮ শতাংশের মতো কমে গেছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ে এক দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতন। লেনদেন শেষে ডিএসইতে এটির শেয়ারের দাম কমে দাঁড়ায় ২৯৬ টাকা ২০ পয়সায়। চেয়ারের দাম কমলেও শনিবার ঢাকার বাজারে লেনদেনের শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছিল কোম্পানিটি। এদিন ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির প্রায় ৩৯ কোটি টাকার সমমূল্যের সোয়া ১৩ লাখের বেশি শেয়ারের হাতবদল হয়।