ড. নিজামউদ্দিন জামি : শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের স্থপতি, কর্মবীর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইমামুল কবীর শান্ত’র প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালনের অন্যতম অনুসঙ্গ ছিল চিত্রপ্রদর্শনী। উল্লেখ্য, দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল খতমে কোরআন, কবর জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ, স্মৃতিচারণ ও দোয়া মাহফিল। ৩০ মে তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে রাজধানীর উত্তরা ৪৫ সোনারগাঁও রোডে শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন ভবনে প্রদর্শিত হয় তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের নানা কর্মযঞ্জের স্থিরচিত্র প্রদর্শন। কর্মমুখী সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি অসামান্য অবদান রাখেন। আলোকচিত্রগুলিতে তার ধারাভাষ্যও বিদ্যমান।
বিকেল ৫টায় প্রদর্শনীটি সর্বসাধারণের জন্যে অবমুক্ত করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান শিল্পী অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. আহসানুল কবীর, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস প্রা. লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ তানভীর আহমেদ, বিশ^বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর শামসুন নাহার, রেজিস্ট্রার ড. পার মশিউর রহমান, সাবেক রেজিস্ট্রার স্থপতি হোসনে আরা রহমান, রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী পরিচালক (গণযোগাযোগ) লিলি ইসলামসহ শান্ত-মারিয়াম পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মোট ছয়টি ক্যাটাগরিতে ১১২টি ছবি এতে স্থান পায়। এক. রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী ও অ্যাম্বেসেডর। দুই. বিশিষ্টজনদের সাথে। তিন. পরিবারের সাথে। চার. শান্ত-মারিয়াম পরিবারের সাথে। পাঁচ. শিশুদের সান্নিধ্যে। ছয়. একান্ত আলোয়।
প্রত্যেকটি ছবি যেন কথা বলে। এ ছবির সাথে জড়িয়ে আছে মো. ইমামুল কবীর শান্ত’র জীবন ও কর্মের নানাদিক। রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে দেশের সাধারণ মানুষের সাথেও তাঁর সম্পর্ক ও সখ্যের ছবিগুলি বেশ অর্থবোধক। ছবি দিয়েও যে জীবনের ইতিহাস রচনা করা যায়, প্রদর্শনীটি সে-কথা নতুন করে আবার প্রমাণ করেছে। প্রত্যেকটি ছবি ধরে ধরে যদি আলোচনা করা যায়, তবে সমৃদ্ধ আর্কাইভ বা তথ্যভা-ার সংগৃহীত হবে, সন্দেহ নেই।
ছবিগুলির সাথে অনেক বক্তব্য-ইতিহাস জড়িয়ে লুকিয়ে আছে। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-ধর্ম-দর্শন-সমাজ-অর্থনীতি-রাজনীতির খ- খ- দৃশ্যগুলি মিলে জনাব শান্তর অখ- মানসপ্রকৃতি ভাস্বর হয়ে উঠেছে। এটি ইতিহাসের অংশ যেমন, তেমনি জাদুঘরের মূল্যবান উপাদানও। যা সমকাল ও পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে অনুপ্রেরণা হতে পারে। জনাব শান্তর মানবতাবোধ, বহুমাত্রিক প্রতিভা, এবং রুচির সাজুয্য আছে ছবিগুলিতে। প্রদর্শনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক চিত্রশিল্পী দেওয়ান মিজান রহমান, সহকারী অধ্যাপক চিত্রশিল্পী মো. রেজওয়ানুর রহমান ও চিত্রশিল্পী মো. মেহেদী হাসান। একদিনে প্রায় চার শতাধিক দর্শক প্রদর্শনীটি উপভোগ করে।
লেখক : শিক্ষক, বাংলা বিভাগ, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি।
ছবিচিত্রে মো. ইমামুল কবীর শান্ত : প্রথম মৃত্যুবার্ষিক শ্রদ্ধা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ