ঢাকা ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

চ্যাটজিপিটির পৃথিবীতে চাকরি ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ কী

  • আপডেট সময় : ১০:০৮:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

মাহবুবা ইয়াসমিন তুরাবা : পৃথিবীর ইতিহাসে কোনও সার্ভিস চালুর মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী পাওয়ার ঘটনা বিশ্বে প্রথম ঘটেছে। ওপেনএআই কোম্পানির চ্যাটজিপিটি সার্ভিসকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটলো। এমনকি টুইটার, টিকটক, ইন্সটাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোও এত অল্প সময়ে এই পরিমাণ ব্যবহারকারী তৈরি করতে পারেনি।
চ্যাটজিপিটি এক ধরনের চ্যাটবট, যা সাধারণ মানুষের মতোই চ্যাটের উত্তর দিতে সক্ষম। তবে কেবল যে প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দিয়ে একে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে, সেগুলোর উত্তর দক্ষতার সঙ্গে লিখে দিতে পারে। একে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং ফ্রম হিউম্যান ফিডব্যাক দিয়ে। তাই, প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ ব্যবহার করছে বলে এটি শিখছে এবং নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলছে। চ্যাটজিপিটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে প্রোগ্রামসহ গল্প, হোমওয়ার্ক, কবিতা, কনটেন্ট তৈরি করা, রান্নার রেসিপি লিখে দেওয়ার কাজ করতে পারে। বর্তমানে এটি অনেক ধরনের প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে প্রোগ্রাম লিখতে পারে। তবে এটি সবসময় প্রশ্নের নিরিখে যথাযথ উত্তর কিংবা প্রোগ্রাম লিখতে পারে না। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়-এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে চ্যাটজিপিটি ক্রমাগত লার্নিংয়ের মাধ্যমে পরিণত পর্যায়ে চলে গেলে ছোট-বড় সব ধরনের প্রোগ্রাম সঠিকভাবে লিখতে পারবে বলে আশা করা যায়।
অপরদিকে, গুগল ও চ্যাটজিপিটির মধ্যে অন্যতম পার্থক্য-গুগল একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের অনেকগুলো উত্তর দিতে পারে। কিন্ত চ্যাটজিপিটি কেবল একটি মাত্র উত্তর দিতে পারে। কিছুদিন আগে মাইক্রোসফট কোম্পানি সার্চ ইঞ্জিন বিং’র সঙ্গে চ্যাটজিপিটিকে সংযুক্ত করেছে। ফলাফল নতুন প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছে, যা প্রযুক্তি দুনিয়ায় অভাবনীয় এক ঘটনা।
২০৩০ সাল পর্যন্ত সময়কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বর্ণযুগ বলে অভিহিত করা যায়। নেটিজেনরা বলছেন, চ্যাটজিপিটির অভাবনীয় উন্নতি অনেকের চাকরি কেড়ে নেবে। এখন প্রশ্ন হলো, চ্যাটজিপিটি প্রোগ্রামারদের চাকরি কেড়ে নেবে কিনা। ভবিষ্যতে এআই অটোমেশনের কারণে জুনিয়র প্রোগ্রামারদের সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর আর প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু অবশ্যই দক্ষ প্রোগ্রামাররা চাকরি হারাবে না। বরং আগামী দিনে সুদক্ষ প্রোগ্রামারদের আরও বেশি প্রয়োজন হবে। কারণ, প্রজেক্ট রিকয়ারমেন্ট অনুযায়ী সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে এবং একে পরিচালনা করতে হবে। সেজন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ জ্ঞান প্রয়োজন। সেই জ্ঞান প্রয়োগ করে নিজেদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে হবে। টাইপরাইটিং যেমন কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন হয়েছে, তেমনই বিপুল সংখ্যক স্বল্প দক্ষ মানুষের কাজগুলো আগামী ১০-১৫ বছরে প্রতিস্থাপিত হবে। এআই অটোমেশনের মাধ্যমে মানুষ একদিকে যেমন চাকরি হারাবে, অপর দিকে নতুন চাকরির সম্ভাবনা তৈরি হবে। তাই নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারের উচ্ছ্বাস উল্লাসের সঙ্গে সঙ্গে শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
লেখক: লেকচারার, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ঢাকা

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

এক নারীকে দুই ভাই বিয়ে করে বললেন- আমরা গর্বিত

চ্যাটজিপিটির পৃথিবীতে চাকরি ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ কী

আপডেট সময় : ১০:০৮:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মাহবুবা ইয়াসমিন তুরাবা : পৃথিবীর ইতিহাসে কোনও সার্ভিস চালুর মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী পাওয়ার ঘটনা বিশ্বে প্রথম ঘটেছে। ওপেনএআই কোম্পানির চ্যাটজিপিটি সার্ভিসকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মতো এমন ঘটনা ঘটলো। এমনকি টুইটার, টিকটক, ইন্সটাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোও এত অল্প সময়ে এই পরিমাণ ব্যবহারকারী তৈরি করতে পারেনি।
চ্যাটজিপিটি এক ধরনের চ্যাটবট, যা সাধারণ মানুষের মতোই চ্যাটের উত্তর দিতে সক্ষম। তবে কেবল যে প্রশ্ন ও উত্তরগুলো দিয়ে একে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে, সেগুলোর উত্তর দক্ষতার সঙ্গে লিখে দিতে পারে। একে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে রিইনফোর্সমেন্ট লার্নিং ফ্রম হিউম্যান ফিডব্যাক দিয়ে। তাই, প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ ব্যবহার করছে বলে এটি শিখছে এবং নিজেকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলছে। চ্যাটজিপিটি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে প্রোগ্রামসহ গল্প, হোমওয়ার্ক, কবিতা, কনটেন্ট তৈরি করা, রান্নার রেসিপি লিখে দেওয়ার কাজ করতে পারে। বর্তমানে এটি অনেক ধরনের প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজে প্রোগ্রাম লিখতে পারে। তবে এটি সবসময় প্রশ্নের নিরিখে যথাযথ উত্তর কিংবা প্রোগ্রাম লিখতে পারে না। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়-এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে চ্যাটজিপিটি ক্রমাগত লার্নিংয়ের মাধ্যমে পরিণত পর্যায়ে চলে গেলে ছোট-বড় সব ধরনের প্রোগ্রাম সঠিকভাবে লিখতে পারবে বলে আশা করা যায়।
অপরদিকে, গুগল ও চ্যাটজিপিটির মধ্যে অন্যতম পার্থক্য-গুগল একটি নির্দিষ্ট প্রশ্নের অনেকগুলো উত্তর দিতে পারে। কিন্ত চ্যাটজিপিটি কেবল একটি মাত্র উত্তর দিতে পারে। কিছুদিন আগে মাইক্রোসফট কোম্পানি সার্চ ইঞ্জিন বিং’র সঙ্গে চ্যাটজিপিটিকে সংযুক্ত করেছে। ফলাফল নতুন প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী যুক্ত হয়েছে, যা প্রযুক্তি দুনিয়ায় অভাবনীয় এক ঘটনা।
২০৩০ সাল পর্যন্ত সময়কে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার স্বর্ণযুগ বলে অভিহিত করা যায়। নেটিজেনরা বলছেন, চ্যাটজিপিটির অভাবনীয় উন্নতি অনেকের চাকরি কেড়ে নেবে। এখন প্রশ্ন হলো, চ্যাটজিপিটি প্রোগ্রামারদের চাকরি কেড়ে নেবে কিনা। ভবিষ্যতে এআই অটোমেশনের কারণে জুনিয়র প্রোগ্রামারদের সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর আর প্রয়োজন পড়বে না। কিন্তু অবশ্যই দক্ষ প্রোগ্রামাররা চাকরি হারাবে না। বরং আগামী দিনে সুদক্ষ প্রোগ্রামারদের আরও বেশি প্রয়োজন হবে। কারণ, প্রজেক্ট রিকয়ারমেন্ট অনুযায়ী সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে এবং একে পরিচালনা করতে হবে। সেজন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞ জ্ঞান প্রয়োজন। সেই জ্ঞান প্রয়োগ করে নিজেদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে হবে। টাইপরাইটিং যেমন কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন হয়েছে, তেমনই বিপুল সংখ্যক স্বল্প দক্ষ মানুষের কাজগুলো আগামী ১০-১৫ বছরে প্রতিস্থাপিত হবে। এআই অটোমেশনের মাধ্যমে মানুষ একদিকে যেমন চাকরি হারাবে, অপর দিকে নতুন চাকরির সম্ভাবনা তৈরি হবে। তাই নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারের উচ্ছ্বাস উল্লাসের সঙ্গে সঙ্গে শঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
লেখক: লেকচারার, সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ঢাকা