ঢাকা ১২:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫

চোরা শিকারির ঝুঁকিতে টাঙ্গুয়ার হাওর

  • আপডেট সময় : ১২:৫০:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমির আধার সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। রামসার সাইট খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওর বর্তমানে পরিবেশগতভাবে সংকটে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারীর অভাবে অবাদে কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাণ হিজল-করচের বাগান। উচ্চ শব্দের মাইক আর নৌকা নিয়ে পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত বিচরণে হাওর হারাচ্ছে তার নিজস্ব জৌলুশ।

টাঙ্গুয়ার হাওর হারাচ্ছে নিজস্ব প্রকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদের ঐশ্বর্য। পর্যটকদের ফেলে যাওয়া ময়ালা আর প্লাস্টিকে সয়লাব টাংগুয়ার হাওরের চারপাশ। গুরুত্বপূর্ণ এই হাওরের এমন বেহালদশা ও অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ, পর্যটক ও হাওর নেতারা। এমন করুণ অবস্থার জন্য প্রশাসন ও পরিবেশ কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন তারা। টাঙ্গুয়ার হাওরকে বাঁচাতে দ্রত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। হাওরে গেলে দেখা মেলে স্বচ্ছ নীল পানি। সেই পানির ওপর হিজল করচের বাঁক। পানিতে নানা বর্ণের পরিযায়ী পাখ-পাখালীর কিচিরমিচির শব্দ। ডালে ডালে সাদা বক। আর এই সবকিছু মিলেই সৌন্দর্য, সম্পদের ঐশ্বর্যের টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ। প্রায় ১০০ কিলোমিটারের অধিক জায়গা জুড়ে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর দেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমি। ১৯৯৯ সালে এই হাওরকে সংকটাপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ৬০ বছরের ইজারা প্রথার অবসান করা হয়। পরে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র হুমকিতে থাকায় ২০০০ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেইজ রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে এই হাওরের রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্ব নেয় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সারাবছরই এই হাওরে বিভিন্নজাতের পাখি স্থায়ীভাবে বসবাস করে। শীত মৌসুম আসলে হাওরে দেখা মিলে মোট ২০৮ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির। আগে টাঙ্গুয়ার হাওরে বিরল প্রজাতির ফিস পেলিসাস ঈগল দেখতে পাওয়া গেলেও এখন আর তা চোখে পড়ে না। নানান প্রজাতির পাখ-পাখালির সাথে এই হাওর জলজ উদ্ভিদের জন্য অন্যতম। হাওরের হিজল-করচের বাগানে বড় বড় হাউজবোট বেঁধে রাখার কারণে বেশিরভাগ গাছ মরে যাচ্ছে। পর্যটকদের ফেলে যাওয়া প্লাস্টিক আর পলিথিনে জড়িয়ে ধ্বংস হওয়ার পথে হাওরের গাছ ও পরিবেশ। বিলের ইজারাদাররা রাতের আঁধারে কেটে নিচ্ছে অবশিষ্ট থাকা এসব গাছ। জীব বৈচিত্রের অপার আধার বিশ্ব ঐতিহ্যের এই বিশেষ অঞ্চলটি দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। টাংগুয়ার হাওর ঘুরতে আসা তামিম আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর। এখানে এসে দেখলাম হাওরের গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত। তাহলে পর্যটক ঘুরতে আসবে, সরকার উপকৃত হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

ইইউ ও মেক্সিকোর ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন ট্রাম্প

চোরা শিকারির ঝুঁকিতে টাঙ্গুয়ার হাওর

আপডেট সময় : ১২:৫০:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২২

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমির আধার সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। রামসার সাইট খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওর বর্তমানে পরিবেশগতভাবে সংকটে পড়েছে। কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারীর অভাবে অবাদে কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাণ হিজল-করচের বাগান। উচ্চ শব্দের মাইক আর নৌকা নিয়ে পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত বিচরণে হাওর হারাচ্ছে তার নিজস্ব জৌলুশ।

টাঙ্গুয়ার হাওর হারাচ্ছে নিজস্ব প্রকৃতিক সৌন্দর্য ও সম্পদের ঐশ্বর্য। পর্যটকদের ফেলে যাওয়া ময়ালা আর প্লাস্টিকে সয়লাব টাংগুয়ার হাওরের চারপাশ। গুরুত্বপূর্ণ এই হাওরের এমন বেহালদশা ও অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ, পর্যটক ও হাওর নেতারা। এমন করুণ অবস্থার জন্য প্রশাসন ও পরিবেশ কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন তারা। টাঙ্গুয়ার হাওরকে বাঁচাতে দ্রত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। হাওরে গেলে দেখা মেলে স্বচ্ছ নীল পানি। সেই পানির ওপর হিজল করচের বাঁক। পানিতে নানা বর্ণের পরিযায়ী পাখ-পাখালীর কিচিরমিচির শব্দ। ডালে ডালে সাদা বক। আর এই সবকিছু মিলেই সৌন্দর্য, সম্পদের ঐশ্বর্যের টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ। প্রায় ১০০ কিলোমিটারের অধিক জায়গা জুড়ে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর দেশের সর্ববৃহৎ জলাভূমি। ১৯৯৯ সালে এই হাওরকে সংকটাপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ৬০ বছরের ইজারা প্রথার অবসান করা হয়। পরে টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র হুমকিতে থাকায় ২০০০ সালে টাঙ্গুয়ার হাওরকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেইজ রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে এই হাওরের রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্ব নেয় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। সারাবছরই এই হাওরে বিভিন্নজাতের পাখি স্থায়ীভাবে বসবাস করে। শীত মৌসুম আসলে হাওরে দেখা মিলে মোট ২০৮ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির। আগে টাঙ্গুয়ার হাওরে বিরল প্রজাতির ফিস পেলিসাস ঈগল দেখতে পাওয়া গেলেও এখন আর তা চোখে পড়ে না। নানান প্রজাতির পাখ-পাখালির সাথে এই হাওর জলজ উদ্ভিদের জন্য অন্যতম। হাওরের হিজল-করচের বাগানে বড় বড় হাউজবোট বেঁধে রাখার কারণে বেশিরভাগ গাছ মরে যাচ্ছে। পর্যটকদের ফেলে যাওয়া প্লাস্টিক আর পলিথিনে জড়িয়ে ধ্বংস হওয়ার পথে হাওরের গাছ ও পরিবেশ। বিলের ইজারাদাররা রাতের আঁধারে কেটে নিচ্ছে অবশিষ্ট থাকা এসব গাছ। জীব বৈচিত্রের অপার আধার বিশ্ব ঐতিহ্যের এই বিশেষ অঞ্চলটি দিন দিন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। টাংগুয়ার হাওর ঘুরতে আসা তামিম আহমেদ বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর। এখানে এসে দেখলাম হাওরের গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে প্রশাসনের নজর দেয়া উচিত। তাহলে পর্যটক ঘুরতে আসবে, সরকার উপকৃত হবে।