আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের সহায়তা নিয়ে সৌদি আরব নিজেরাই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে বলে অনুমান করছে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। তাদের এ অনুমান সঠিক হলে তা মধ্যপ্রাচ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে এবং ইরানের পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা রোধে জো বাইডেন প্রশাসনের প্রচেষ্টাকে জটিলতার দিকে ঠেলে দেবে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
সৌদি আরব চীনের কাছ থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে বলে আগে শোনা গেলেও নিজেরা এই ধরনের অস্ত্র বানাতে সক্ষম ছিল না; এখন তারা ওই দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে বলে সম্প্রতি পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের সঙ্গে পরিচিত তিনটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে।
মার্কিন এ সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা উপগ্রহের ছবিতেও সৌদি আরব অন্তত একটি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর কাজ করছে- এমন ইঙ্গিত মিলেছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদেরকে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে একাধিকবার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির লেনদেনের বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে সর্বশেষ মূল্যায়ন সম্বন্ধে অবগত দুটি সূত্র জানিয়েছে।
ইরান ও সৌদি আরব একে অপরের ঘোর শত্রু। রিয়াদ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে জানতে পারলে তেহরানও আর এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র বানানো বন্ধ করবে না, যা ইরানকে বশে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। রিয়াদ সত্যি সত্যি নিজেরা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানানো শুরু করলে মধ্যপ্রাচ্য স্থিতিশীল রাখার যে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনায় ইসরায়েল ও সৌদি আরবকেও যুক্ত করা লাগবে, বলেছেন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ এবং মিডেলবুরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক জেফরি লুইস। চীনের সহযোগিতায় সৌদি আরবের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের সম্পর্কে তিক্ততা আরও বাড়াবে বলেও অনুমান বিশ্লেষকদের। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল ও সিআইএ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে সংবেদনশীল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির আদানপ্রদান হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র সিএনএনকে বলেছেন, চীন ও সৌদি আরবের মধ্যে ‘বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ রয়েছে। দুই দেশ সামরিক বাণিজ্যসহ সকল ক্ষেত্রেই দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্কও বিদ্যমান। “এই ধরনের সহযোগিতা কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে না এবং গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিস্তারে জড়িত নয়,” বিবৃতিতে বলেছে তারা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলেও সৌদি সরকার এবং ওয়াশিংটনে অবস্থিত দেশটির দূতাবাস কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে সিএনএন।
চীনের সহায়তায় ‘নিজেরাই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে’ সৌদি আরব
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ