ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

চীনের সঙ্গে উত্তেজনা না বাড়াতে জাপানকে ট্রাম্পের অনুরোধ

  • আপডেট সময় : ০৩:২২:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • ৩৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচিকে চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা আর না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আলোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দুই জাপানি সরকারি কর্মকর্তার বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সম্প্রতি জাপানের পার্লামেন্টে তাকাইচি মন্তব্য করেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, তবে জাপান সামরিকভাবে জবাব দিতে পারে। এই মন্তব্যেই চীনের তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং দুই দেশের সম্পর্ক নতুন করে সংকটে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপানি কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার ট্রাম্প-তাকাইচির ফোনালাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তেজনা আর না বাড়ানোর অনুরোধ জানান। তবে তিনি কোনো নির্দিষ্ট দাবি করেননি এবং চীনের মতো মন্তব্য প্রত্যাহারের চাপও দেননি। জাপান সরকারও মন্তব্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে।

জাপানের মন্ত্রিসভার প্রধান সচিব মিনোরু কিহারা এ বিষয়ে রয়টার্সের কাছে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

টোকিওর কিছু নীতিনির্ধারক মনে করছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি রক্ষায় ট্রাম্প হয়তো তাইওয়ান ইস্যুতে তুলনামূলক নরম অবস্থান নিতে চান। এতে জাপানের নিরাপত্তা উদ্বেগ আরো বাড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।

রাজনীতি বিশ্লেষক কাজুহিরো মায়েজিমা বলেন, “ট্রাম্পের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্ক। জাপানকে সব সময়ই সেই সম্পর্ক পরিচালনার একটি ‘কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।”

ট্রাম্প-তাকাইচির কথোপকথনের ঠিক আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। সেখানে শি জানান, বিশ্বব্যবস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তাইওয়ানের ‘চীনে ফিরে আসা’ একটি মূল লক্ষ্য।

তবে স্বাধীনভাবে পরিচালিত তাইওয়ান এতদিন ধরে বলে আসছে, তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার একমাত্র তাইওয়ানিজ জনগণের।

হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের হয়ে এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ এবং সেটি জাপানের জন্যও ‘খুব ভালো খবর’। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে দুর্দান্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছি। বিশ্ব শান্তিতে রয়েছে—আসুন আমরা একে এভাবেই চালাই।’

জাপানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির সমালোচনা করে চীনের সরকারি দৈনিক পিপলস ডেইলি যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়, জাপানকে ‘আবার সামরিকতাবাদী পথে’ হাঁটা থেকে বিরত রাখতে।

তাকাইচির মন্তব্যকে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’ থেকে সরে আসা বলে মনে করছে চীন। টোকিওর কর্মকর্তারা বলছেন, মন্তব্যটি তিনি প্রত্যাহার করতে পারবেন না, ফলে সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

টোকিওতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, জাপানের প্রতি চীনের ‘জবরদস্তির’ বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের পাশে আছে। তবে জাপানের ক্ষমতাসীন দলের দুই জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা মনে করছেন, ট্রাম্পের সরাসরি বক্তব্য না আসায় টোকিওর উদ্বেগ আরো বাড়ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প আপাতত চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের নাজুক যুদ্ধবিরতি ধরে রাখায় বেশি মনোযোগী। পাশাপাশি আগামী এপ্রিলের বেইজিং সফরের আগে কোনো বড় উত্তেজনা চান না তিনি।

ওআ/আপ্র/২৭/১১/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

চীনের সঙ্গে উত্তেজনা না বাড়াতে জাপানকে ট্রাম্পের অনুরোধ

আপডেট সময় : ০৩:২২:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচিকে চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা আর না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আলোচনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দুই জাপানি সরকারি কর্মকর্তার বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সম্প্রতি জাপানের পার্লামেন্টে তাকাইচি মন্তব্য করেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা চালায়, তবে জাপান সামরিকভাবে জবাব দিতে পারে। এই মন্তব্যেই চীনের তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং দুই দেশের সম্পর্ক নতুন করে সংকটে পড়ে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপানি কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার ট্রাম্প-তাকাইচির ফোনালাপে মার্কিন প্রেসিডেন্ট উত্তেজনা আর না বাড়ানোর অনুরোধ জানান। তবে তিনি কোনো নির্দিষ্ট দাবি করেননি এবং চীনের মতো মন্তব্য প্রত্যাহারের চাপও দেননি। জাপান সরকারও মন্তব্য প্রত্যাহারের পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে।

জাপানের মন্ত্রিসভার প্রধান সচিব মিনোরু কিহারা এ বিষয়ে রয়টার্সের কাছে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

টোকিওর কিছু নীতিনির্ধারক মনে করছেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি রক্ষায় ট্রাম্প হয়তো তাইওয়ান ইস্যুতে তুলনামূলক নরম অবস্থান নিতে চান। এতে জাপানের নিরাপত্তা উদ্বেগ আরো বাড়তে পারে বলে তাদের আশঙ্কা।

রাজনীতি বিশ্লেষক কাজুহিরো মায়েজিমা বলেন, “ট্রাম্পের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র–চীন সম্পর্ক। জাপানকে সব সময়ই সেই সম্পর্ক পরিচালনার একটি ‘কার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।”

ট্রাম্প-তাকাইচির কথোপকথনের ঠিক আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। সেখানে শি জানান, বিশ্বব্যবস্থার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তাইওয়ানের ‘চীনে ফিরে আসা’ একটি মূল লক্ষ্য।

তবে স্বাধীনভাবে পরিচালিত তাইওয়ান এতদিন ধরে বলে আসছে, তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার একমাত্র তাইওয়ানিজ জনগণের।

হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের হয়ে এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক ‘অত্যন্ত শক্তিশালী’ এবং সেটি জাপানের জন্যও ‘খুব ভালো খবর’। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে দুর্দান্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছি। বিশ্ব শান্তিতে রয়েছে—আসুন আমরা একে এভাবেই চালাই।’

জাপানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির সমালোচনা করে চীনের সরকারি দৈনিক পিপলস ডেইলি যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়, জাপানকে ‘আবার সামরিকতাবাদী পথে’ হাঁটা থেকে বিরত রাখতে।

তাকাইচির মন্তব্যকে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’ থেকে সরে আসা বলে মনে করছে চীন। টোকিওর কর্মকর্তারা বলছেন, মন্তব্যটি তিনি প্রত্যাহার করতে পারবেন না, ফলে সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

টোকিওতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, জাপানের প্রতি চীনের ‘জবরদস্তির’ বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জাপানের পাশে আছে। তবে জাপানের ক্ষমতাসীন দলের দুই জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা মনে করছেন, ট্রাম্পের সরাসরি বক্তব্য না আসায় টোকিওর উদ্বেগ আরো বাড়ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প আপাতত চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধের নাজুক যুদ্ধবিরতি ধরে রাখায় বেশি মনোযোগী। পাশাপাশি আগামী এপ্রিলের বেইজিং সফরের আগে কোনো বড় উত্তেজনা চান না তিনি।

ওআ/আপ্র/২৭/১১/২০২৫