প্রত্যাশা ডেস্ক: চীনের সুবিশাল তাকলামাকান মরুভূমি একসময় ছিল ‘মৃত্যুর সাগর’। এখন সেখানে বিশেষ ব্যবস্থায় চাষ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের সামুদ্রিক মাছ।
সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের ছিয়েমো কাউন্টির এক চাষকেন্দ্রে এখন হাজার হাজার মিউলেট, গ্রুপারসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের পোনা ছুটে বেড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম দফার মাছ বাজারেও এসেছে। এই পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি হলো মরুভূমির লবণাক্ত পানিকে ব্যবহার করে সামুদ্রিক মাছ চাষ, যার আরেক নাম এখন ডেজার্ট সিফুড।
‘গত বছরের পরীক্ষামূলক চাষ বেশ সফল হয়েছিল, তাই এ বছর পরিধি বেড়েছে চাষের,’ জানালেন ছিয়েমোর একটি সিফুড কোম্পানির প্রধান কং ইয়োংহং। তার প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি আরো ৬০ হাজার ডোরাকাটা স্ক্যাট মাছের পোনা ছেড়েছে। এটি হবে মরুতে স্থাপিত তৃতীয় দফার সামুদ্রিক চাষ প্রকল্প।
দক্ষিণ চীনের কুয়াংতোং প্রদেশে পোশাকশিল্পে কর্মরত থাকা কং ২০২৩ সালে সিনচিয়াং আসেন। গোবি মরুভূমিতে গ্রুপার ও গোল্ডেন পম্পানোর মতো সামুদ্রিক মাছের সাফল্য দেখে তিনি বুঝতে পারেন এখানকার সম্ভাবনা, এবং ছিয়েমোতেই গড়ে তোলেন নিজস্ব উদ্যোগ। ২০২৪ সালের বসন্তে তিনি ও তার দল মাত্র তিন মাসে ২০ মু জায়গায় একটি ফার্ম গড়ে তোলেন। সেখানে দুটি মাছের পুকুর, একটি ব্রিডিং পুল ও একটি আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র রয়েছে। কং বলেন, ‘মরুভূমির আধা-লবণাক্ত পানি ব্যবহার করে মাইক্রোঅর্গানিজমের মাধ্যমে সমুদ্রজলের পরিবেশ তৈরি করি।’
২০২৪ সালের জুনে উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ১ লাখ সামুদ্রিক মাছের পোনা আনা হয়। নিবিড় তত্ত্বাবধানে ফার্মে তৈরি করা হয় প্রায় সমুদ্রের মতো পরিবেশ। প্রথম ব্যাচের মাছের বেঁচে থাকার হার ছিল ৯৯ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া কং পরীক্ষামূলকভাবে ২০ লাখ মুক্তো-ঝিনুক ও ঝিনুকের পোনা ছাড়েন-যা এখন মরুভূমি জুড়ে এক নতুন প্রবণতা হয়ে উঠছে। মাকিত কাউন্টিতে চাষ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান লবস্টার। হোতানের এক ফার্ম বছরে ২৮০ টন লবস্টার উৎপাদনের আশা করছে।
চীনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সিনচিয়াংয়ের জলজ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৫০০ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ৬.৮ শতাংশ বেশি। এখন এখানকার সিফুড যাচ্ছে সিঙ্গাপুরসহ আরো আন্তর্জাতিক বাজারে। কং জানান, পরবর্তী ধাপে তারা মাছ, চিংড়ি ও শামুকসহ আরো নতুন প্রজাতি আনবেন এবং একটি মান নিয়ন্ত্রণ সিস্টেম চালু করবেন। সূত্র: সিএমজি
সানা/আপ্র/১৪/১০/২০২৫