ঢাকা ০৩:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

চীনের পরিকল্পনায় যুদ্ধ শেষ হতে পারে, বললেন পুতিন

  • আপডেট সময় : ০২:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩
  • ৭৬ বার পড়া হয়েছে

প্রত্যাশা ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চীন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি যুদ্ধ বন্ধের ভিত্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তিনি জানিয়েছেন, এ শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তখনই আগানো যাবে যখন ‘পশ্চিমা ও ইউক্রেন এ নিয়ে প্রস্তুত হবে।’
গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) মস্কোতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা। এরপরই এমন কথা বলেন পুতিন। তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধ বন্ধে গত মাসে ১২ দফার একটি শান্তি প্রস্তাব দেয় বেইজিং। তবে ওই প্রস্তাবে ইউক্রেন থেকে রুশ সেনাদের প্রত্যাহারের ব্যাপারে বলা হয়নি। ওই প্রস্তাবে শান্তি আলোচনা ও জাতীয় সার্বভৌমতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তবে ইউক্রেন বলেছে, শান্তি আলোচনায় বসার পূর্ব শর্ত হলো- রুশ সেনাদের ইউক্রেন ছাড়তে হবে। আর আলোচনার জন্য রাশিয়া এ শর্ত মেনে নেবে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবারের বৈঠকের পর একসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হন পুতিন ও শি জিনপিং। সেখানে পুতিন বলেছেন, ‘ইউক্রেন দ্বন্দ্ব নিরসনে চীনের শান্তি প্রস্তাবের কিছু অংশকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া যায়, যখনই পশ্চিমা ও কিয়েভ এরজন্য প্রস্তুত হবে।’
কিন্তু রাশিয়া এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো ‘প্রস্তুতি’ দেখেনি বলে উল্লেখ করেছেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শি জিনপিং বলেছেন, তার সরকার শান্তি ও আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছে এবং চীন ‘ইতিহাসের সঠিক দিকে আছে।’ জিনপিং আরও দাবি করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চীন ‘নিরপেক্ষ অবস্থানে’ আছে। এর মাধ্যমে মূলত নিজেকে একজন শান্তিস্থাপক হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার বাণিজ্য নিয়েও কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর দুই দেশের মধ্যে যে পরিমাণ বাণিজ্য হয়েছে, তারা চান এ বছর সেটি ছাড়িয়ে যাক। সূত্র: বিবিসি
জোরদার হচ্ছে চীন-রাশিয়া বন্ধন: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাণিজ্য, শিল্প, বিজ্ঞান ও সামরিক খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এক ডজনেরও বেশি নথিতে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে মস্কো-বেইজিং বন্ধুত্ব জোরদার করেছেন। মঙ্গলবার ক্রেমলিনে কয়েক ঘন্টব্যাপী শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতা ইউক্রেইনের শান্তির সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম আরটি।
বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে পুতিন বলেছেন, “বিশ্ব শক্তিগুলো যারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং যাদের এই গ্রহের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে, তারা কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে এটি তার একটি উদাহরণ।” দু’জনের যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়, রাশিয়া ও চীন ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব ও কৌশলগত মিথস্ক্রিয়ার একটি নতুন যুগে প্রবেশের মাধ্যমে সম্পর্ক গভীর’ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। তারা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক সহয়োগিতার মূল ক্ষেত্রগুলির জন্য একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করবে বলেও জানিয়েছে। এর পাশাপাশি পুতিন ও শি পশ্চিমা দেশগুলোর কড়া সমালোচনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের নেতার মস্কো সফরকে ক্রেমলিন তাদের প্রতি সবচেয়ে প্রভাবশালী বন্ধুর সমর্থন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে। সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবারও নানান অনুষ্ঠানে ছিল দুই দেশের মধ্যকার বর্তমানের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের প্রদর্শনী। শি আর পুতিন একে অপরকে ‘প্রিয় বন্ধু’ সম্বোধন করেছেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ‘যে কোনো সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ বলে অভিহিত করেছেন। যৌথ ঘোষণায় তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করছে, নেটো তাদের এখতিয়ারে বাইরে গিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নাক গলাচ্ছে। ইউক্রেইন নিয়ে শান্তি প্রস্তাব দেওয়ায় শি-র প্রশংসা করেছেন পুতিন; ইউক্রেইন ও পশ্চিমা দেশগুলো এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাদের দোষারোপ করেছেন তিনি। তবে শি ইউক্রেইন সংঘাত নিয়ে খুব কমই মুখ খুলেছেন; জানিয়েছেন, এই ইস্যুতে ‘চীনের অবস্থান নিরপেক্ষ’। সফর শেষে বুধবার মস্কো ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে যান চীনের প্রেসিডেন্ট। এ দুই বিশ্ব নেতার বৈঠক নিয়ে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউস চীনের অবস্থান ‘মোটেও নিরপেক্ষ নয়’ বলে দাবি করেছে। রাশিয়াকে ইউক্রেইনের সার্বভৌম অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করানোসহ যুদ্ধ বন্ধে মস্কোকে চাপ দিতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চীনের পরিকল্পনায় যুদ্ধ শেষ হতে পারে, বললেন পুতিন

আপডেট সময় : ০২:১৪:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩

প্রত্যাশা ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চীন যে প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি যুদ্ধ বন্ধের ভিত্তি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তিনি জানিয়েছেন, এ শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তখনই আগানো যাবে যখন ‘পশ্চিমা ও ইউক্রেন এ নিয়ে প্রস্তুত হবে।’
গত মঙ্গলবার (২১ মার্চ) মস্কোতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো বৈঠকে বসেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা। এরপরই এমন কথা বলেন পুতিন। তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধ বন্ধে গত মাসে ১২ দফার একটি শান্তি প্রস্তাব দেয় বেইজিং। তবে ওই প্রস্তাবে ইউক্রেন থেকে রুশ সেনাদের প্রত্যাহারের ব্যাপারে বলা হয়নি। ওই প্রস্তাবে শান্তি আলোচনা ও জাতীয় সার্বভৌমতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তবে ইউক্রেন বলেছে, শান্তি আলোচনায় বসার পূর্ব শর্ত হলো- রুশ সেনাদের ইউক্রেন ছাড়তে হবে। আর আলোচনার জন্য রাশিয়া এ শর্ত মেনে নেবে এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবারের বৈঠকের পর একসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হন পুতিন ও শি জিনপিং। সেখানে পুতিন বলেছেন, ‘ইউক্রেন দ্বন্দ্ব নিরসনে চীনের শান্তি প্রস্তাবের কিছু অংশকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া যায়, যখনই পশ্চিমা ও কিয়েভ এরজন্য প্রস্তুত হবে।’
কিন্তু রাশিয়া এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো ‘প্রস্তুতি’ দেখেনি বলে উল্লেখ করেছেন পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্টের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শি জিনপিং বলেছেন, তার সরকার শান্তি ও আলোচনার ওপর জোর দিচ্ছে এবং চীন ‘ইতিহাসের সঠিক দিকে আছে।’ জিনপিং আরও দাবি করেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে চীন ‘নিরপেক্ষ অবস্থানে’ আছে। এর মাধ্যমে মূলত নিজেকে একজন শান্তিস্থাপক হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার বাণিজ্য নিয়েও কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর দুই দেশের মধ্যে যে পরিমাণ বাণিজ্য হয়েছে, তারা চান এ বছর সেটি ছাড়িয়ে যাক। সূত্র: বিবিসি
জোরদার হচ্ছে চীন-রাশিয়া বন্ধন: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও সফররত চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাণিজ্য, শিল্প, বিজ্ঞান ও সামরিক খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এক ডজনেরও বেশি নথিতে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে মস্কো-বেইজিং বন্ধুত্ব জোরদার করেছেন। মঙ্গলবার ক্রেমলিনে কয়েক ঘন্টব্যাপী শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতা ইউক্রেইনের শান্তির সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছে রুশ গণমাধ্যম আরটি।
বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে পুতিন বলেছেন, “বিশ্ব শক্তিগুলো যারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং যাদের এই গ্রহের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে, তারা কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে এটি তার একটি উদাহরণ।” দু’জনের যৌথ ঘোষণায় জানানো হয়, রাশিয়া ও চীন ‘ব্যাপক অংশীদারিত্ব ও কৌশলগত মিথস্ক্রিয়ার একটি নতুন যুগে প্রবেশের মাধ্যমে সম্পর্ক গভীর’ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। তারা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থনৈতিক সহয়োগিতার মূল ক্ষেত্রগুলির জন্য একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করবে বলেও জানিয়েছে। এর পাশাপাশি পুতিন ও শি পশ্চিমা দেশগুলোর কড়া সমালোচনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের নেতার মস্কো সফরকে ক্রেমলিন তাদের প্রতি সবচেয়ে প্রভাবশালী বন্ধুর সমর্থন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে। সফরের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবারও নানান অনুষ্ঠানে ছিল দুই দেশের মধ্যকার বর্তমানের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের প্রদর্শনী। শি আর পুতিন একে অপরকে ‘প্রিয় বন্ধু’ সম্বোধন করেছেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ককে ‘যে কোনো সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ’ বলে অভিহিত করেছেন। যৌথ ঘোষণায় তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্ন করছে, নেটো তাদের এখতিয়ারে বাইরে গিয়ে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নাক গলাচ্ছে। ইউক্রেইন নিয়ে শান্তি প্রস্তাব দেওয়ায় শি-র প্রশংসা করেছেন পুতিন; ইউক্রেইন ও পশ্চিমা দেশগুলো এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাদের দোষারোপ করেছেন তিনি। তবে শি ইউক্রেইন সংঘাত নিয়ে খুব কমই মুখ খুলেছেন; জানিয়েছেন, এই ইস্যুতে ‘চীনের অবস্থান নিরপেক্ষ’। সফর শেষে বুধবার মস্কো ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে যান চীনের প্রেসিডেন্ট। এ দুই বিশ্ব নেতার বৈঠক নিয়ে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউস চীনের অবস্থান ‘মোটেও নিরপেক্ষ নয়’ বলে দাবি করেছে। রাশিয়াকে ইউক্রেইনের সার্বভৌম অঞ্চল থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করানোসহ যুদ্ধ বন্ধে মস্কোকে চাপ দিতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।