ঢাকা ১০:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চীনের আকাশে পাইলটবিহীন যাত্রীবাহী ড্রোন

  • আপডেট সময় : ০৬:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: এক শহর থেকে অন্য শহরে মানুষ ছাড়া ড্রোন ওড়ানোর স্বপ্ন হয়তো অনেকেই দেখেছেন। কল্পনার মতো শোনালেও যাতায়াতের জন্য চীনে পাইলটবিহীন যাত্রীবাহী ড্রোন এখন বাস্তব বিষয়।

তবে ট্যাক্সির মতো করে এখনই এদের নাগাল না পেলেও চীনের ‘ইহাং’ নামের এক কোম্পানি দেশটির গুয়াংজু শহরের আশপাশে স্বল্প পরিসরে ফ্লাইট পরিচালনা শুরুর জন্য সরকারের বাণিজ্যিক লাইসেন্সের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।

ইহাংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হি তিয়ানশিং বলেছেন, ভবিষ্যতে অবশ্যই আকাশপথে ভ্রমণের সমস্যা কমে আসবে ও প্রতিটি শহর ধীরে ধীরে যাতায়াতের জন্য পাইলটবিহীন যাত্রীবাহী ড্রোনের শহরে পরিণত হবে।

সব মানুষেরই এক জোড়া ডানা থাকার আকাঙ্ক্ষা থাকে এবং প্রত্যেকেই পাখির মতো স্বাধীনভাবে উড়তে চায়।

বর্তমানে দুই আসনের ‘ইএইচ২১৬-এস’ নামের ড্রোনটিকে এর ব্যাটারি প্রায় ২৫ মিনিটের জন্য আকাশে উড়তে সাহায্য করে। এতে কোনও পাইলট নেই ও আগে থেকে ঠিক করা একটি প্রোগ্রামের রুট বা পথ অনুসরণ করে এটি।

কোম্পানিটির প্রথম যাত্রীবাহী মডেলের নাম ছিল ‘ইএইচ১৮৪’। তিয়ানশিং বলেছেন, এটি দেখতে অক্টোপাসের মতো ও খুবই ঠাণ্ডা। কিন্তু এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষ এমন একটি ড্রোন দেখেছে, যা মানুষ বহন করতে পারে।

চীন যে প্রকল্পকে ‘নিম্ন উচ্চতার অর্থনীতি’ বলে বর্ণনা করেছে এটি মূলত তারই অংশ। এ প্রকল্পের আওতায় এক হাজার মিটার পর্যন্ত উচ্চতার আকাশসীমায় যাত্রী ও ডেলিভারি ড্রোন থেকে অর্থ উপার্জন করবে দেশটি। চীনের সরকার এ খাতের উন্নয়নে আর্থিক প্রণোদনা ও লাইসেন্স দিচ্ছে।

গণপরিবহন নিয়ে উহানের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: গুয়াংজু থেকে ৬০০ মাইলেরও বেশি দূরের উহান শহরের গণপরিবহন নিয়ে এক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

চালকবিহীন বিভিন্ন ট্যাক্সির উপর রীতিমতো বাজি ধরেছে শহরটি। এখানে একটি পাইলট প্রোগ্রাম রয়েছে, যেটি প্রায় চারশটি ড্রোন শহরে অপারেট করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ সংখ্যা এক হাজারের ওপরে পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে শহরটির।

প্রক্রিয়াটি এরকম: ব্যবহারকারীর ফোনে একটি অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে ট্যাক্সি অর্ডার করবে, যা কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনার সামনে হাজির হবে। এরপর একটি পিন কোড মিলিয়েই যাত্রা শুরু করতে পারবেন যাত্রী।

চীনা প্রযুক্তি নিয়ে শঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্র: চালক না থাকলেও ট্রাফিকের মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নে চলতে থাকে ট্যাক্সিটি। মাঝে মাঝে একটু ঝাঁকুনি দিলেও সার্বিকভাবে শহর জুড়ে একটি স্বাচ্ছন্দ্যময় যাত্রা হতে পারে এটি।

এদিকে, এ ট্যাক্সির পেছনের প্রযুক্তি এতটাই বুদ্ধিমান ও অত্যাধুনিক যে, নিজেদের দেশ থেকে চীনা ও রাশিয়ান চালকবিহীন প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। কারণ গাড়ির ভেতরে থাকা সেন্সর ও ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

চীন অবশ্য এতে চিন্তিত নয়। কারণ তাদের নিজেদের ঘরেই এ ট্যাক্সির লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছে।

এ বছরের শুরুর দিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বলেছেন, আমরা বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন নতুন শক্তিচালিত যানবাহন ও নিম্ন উচ্চতার অর্থনীতির মতো শিল্পে আমাদের শীর্ষস্থানীয় অবস্থানকে সুসংহত ও উন্নত করব।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চীনের আকাশে পাইলটবিহীন যাত্রীবাহী ড্রোন

আপডেট সময় : ০৬:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: এক শহর থেকে অন্য শহরে মানুষ ছাড়া ড্রোন ওড়ানোর স্বপ্ন হয়তো অনেকেই দেখেছেন। কল্পনার মতো শোনালেও যাতায়াতের জন্য চীনে পাইলটবিহীন যাত্রীবাহী ড্রোন এখন বাস্তব বিষয়।

তবে ট্যাক্সির মতো করে এখনই এদের নাগাল না পেলেও চীনের ‘ইহাং’ নামের এক কোম্পানি দেশটির গুয়াংজু শহরের আশপাশে স্বল্প পরিসরে ফ্লাইট পরিচালনা শুরুর জন্য সরকারের বাণিজ্যিক লাইসেন্সের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ।

ইহাংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট হি তিয়ানশিং বলেছেন, ভবিষ্যতে অবশ্যই আকাশপথে ভ্রমণের সমস্যা কমে আসবে ও প্রতিটি শহর ধীরে ধীরে যাতায়াতের জন্য পাইলটবিহীন যাত্রীবাহী ড্রোনের শহরে পরিণত হবে।

সব মানুষেরই এক জোড়া ডানা থাকার আকাঙ্ক্ষা থাকে এবং প্রত্যেকেই পাখির মতো স্বাধীনভাবে উড়তে চায়।

বর্তমানে দুই আসনের ‘ইএইচ২১৬-এস’ নামের ড্রোনটিকে এর ব্যাটারি প্রায় ২৫ মিনিটের জন্য আকাশে উড়তে সাহায্য করে। এতে কোনও পাইলট নেই ও আগে থেকে ঠিক করা একটি প্রোগ্রামের রুট বা পথ অনুসরণ করে এটি।

কোম্পানিটির প্রথম যাত্রীবাহী মডেলের নাম ছিল ‘ইএইচ১৮৪’। তিয়ানশিং বলেছেন, এটি দেখতে অক্টোপাসের মতো ও খুবই ঠাণ্ডা। কিন্তু এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো মানুষ এমন একটি ড্রোন দেখেছে, যা মানুষ বহন করতে পারে।

চীন যে প্রকল্পকে ‘নিম্ন উচ্চতার অর্থনীতি’ বলে বর্ণনা করেছে এটি মূলত তারই অংশ। এ প্রকল্পের আওতায় এক হাজার মিটার পর্যন্ত উচ্চতার আকাশসীমায় যাত্রী ও ডেলিভারি ড্রোন থেকে অর্থ উপার্জন করবে দেশটি। চীনের সরকার এ খাতের উন্নয়নে আর্থিক প্রণোদনা ও লাইসেন্স দিচ্ছে।

গণপরিবহন নিয়ে উহানের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: গুয়াংজু থেকে ৬০০ মাইলেরও বেশি দূরের উহান শহরের গণপরিবহন নিয়ে এক আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

চালকবিহীন বিভিন্ন ট্যাক্সির উপর রীতিমতো বাজি ধরেছে শহরটি। এখানে একটি পাইলট প্রোগ্রাম রয়েছে, যেটি প্রায় চারশটি ড্রোন শহরে অপারেট করছে। ধারণা করা হচ্ছে, এ সংখ্যা এক হাজারের ওপরে পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে শহরটির।

প্রক্রিয়াটি এরকম: ব্যবহারকারীর ফোনে একটি অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে ট্যাক্সি অর্ডার করবে, যা কয়েক মিনিটের মধ্যে আপনার সামনে হাজির হবে। এরপর একটি পিন কোড মিলিয়েই যাত্রা শুরু করতে পারবেন যাত্রী।

চীনা প্রযুক্তি নিয়ে শঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্র: চালক না থাকলেও ট্রাফিকের মধ্য দিয়ে নির্বিঘ্নে চলতে থাকে ট্যাক্সিটি। মাঝে মাঝে একটু ঝাঁকুনি দিলেও সার্বিকভাবে শহর জুড়ে একটি স্বাচ্ছন্দ্যময় যাত্রা হতে পারে এটি।

এদিকে, এ ট্যাক্সির পেছনের প্রযুক্তি এতটাই বুদ্ধিমান ও অত্যাধুনিক যে, নিজেদের দেশ থেকে চীনা ও রাশিয়ান চালকবিহীন প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এটি নিষিদ্ধ করা প্রয়োজন। কারণ গাড়ির ভেতরে থাকা সেন্সর ও ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

চীন অবশ্য এতে চিন্তিত নয়। কারণ তাদের নিজেদের ঘরেই এ ট্যাক্সির লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছে।

এ বছরের শুরুর দিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বলেছেন, আমরা বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন নতুন শক্তিচালিত যানবাহন ও নিম্ন উচ্চতার অর্থনীতির মতো শিল্পে আমাদের শীর্ষস্থানীয় অবস্থানকে সুসংহত ও উন্নত করব।