ঢাকা ১১:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

চীনা যুদ্ধবিমান আটকাতে সামরিক মহড়া তাইওয়ানের বিমানবাহিনীর

  • আপডেট সময় : ১২:২৩:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জানুয়ারী ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনা যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তিন দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে তাইওয়ানের বিমানবাহিনী। স্বশাসিত এই দ্বীপভূখ-ের ছিয়াই শহরে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে এই মহড়া। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সদ্য কেনা এফ-১৬ ফাইটার জেট ব্যবহার করা হচ্ছে মহড়ায়। এই বিমানগুলো যে প্রযুক্তিতে তৈরি, তাতে তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বেশ সহজেই আটকে ফেলা সম্ভব হবে চীনের জে-১৬ যুদ্ধবিমান। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাইওয়ানের সেনা কর্মকর্তা মেজর ইয়েন সিয়াং শেং এই মহড়ার গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে কমিউনিস্টদের যেসব উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা আছে, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের বিমানবাহিনী সচেতন এবং তাদের যে কোনো যুদ্ধবিমানকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আমাদের পাইলটরা।’ গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব এশিয়ার স্বশাসিত দ্বীপভূখ- তাইওয়ানকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। অন্যদিকে তাইওয়ান বরাবরই নিজেদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে অনড় অবস্থান নিয়ে আছে। গত কয়েক বছর ধরে চীন-তাইওয়ান সম্পর্কের উত্তোরত্তর অবনতি ঘটছে। তারই জেরে সম্প্রতি তাইওয়ানে ঘন ঘন নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জানান দিচ্ছে চীন।
২০২১ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানার মধ্যে ১৫০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল দেশটি। তারপর থেকে চীন-তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই উত্তেজনা আরও বেড়েছে তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্তব্য ও তার প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাল্টা মন্তব্যের পর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানে সামরিক অভিযান শুরু করে, সেক্ষেত্রে এই দ্বীপরাষ্ট্রটির পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
তার এ মন্তব্যের পরেই চীনের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন পাল্টা এক বিবৃতিতে বলেন, চীন কখনও তার মৌলিক স্বার্থগত ইস্যুতে কোনো ছাড় দেয় না। তাইওয়ান বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরও সতর্ক হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
১৯৪৯ সালে চীনের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকার ও কমিউনিস্টদের মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধে জয় হয়েছিল কমিউনিস্টদের। পরাজিত গণতান্ত্রিক সরকারের নেতারা তাইওয়ানে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখ-ের অংশ বলে দাবি করছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)। অন্যদিকে, চীনের কবল থেকে তাইওয়ানকে রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে ‘কৌশলগত প্রচেষ্টা’ চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। এ কারণেই তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও ‘তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি চুক্তি অনুসারে দ্বীপটির কাছে অস্ত্র বিক্রিসহ বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ বজায় রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চীনা যুদ্ধবিমান আটকাতে সামরিক মহড়া তাইওয়ানের বিমানবাহিনীর

আপডেট সময় : ১২:২৩:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জানুয়ারী ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনা যুদ্ধবিমানের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তিন দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে তাইওয়ানের বিমানবাহিনী। স্বশাসিত এই দ্বীপভূখ-ের ছিয়াই শহরে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে এই মহড়া। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সদ্য কেনা এফ-১৬ ফাইটার জেট ব্যবহার করা হচ্ছে মহড়ায়। এই বিমানগুলো যে প্রযুক্তিতে তৈরি, তাতে তাইওয়ানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বেশ সহজেই আটকে ফেলা সম্ভব হবে চীনের জে-১৬ যুদ্ধবিমান। গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তাইওয়ানের সেনা কর্মকর্তা মেজর ইয়েন সিয়াং শেং এই মহড়ার গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে কমিউনিস্টদের যেসব উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা আছে, সেগুলো সম্পর্কে আমাদের বিমানবাহিনী সচেতন এবং তাদের যে কোনো যুদ্ধবিমানকে মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আমাদের পাইলটরা।’ গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে পূর্ব এশিয়ার স্বশাসিত দ্বীপভূখ- তাইওয়ানকে নিজেদের বলে দাবি করে আসছে চীন। অন্যদিকে তাইওয়ান বরাবরই নিজেদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে অনড় অবস্থান নিয়ে আছে। গত কয়েক বছর ধরে চীন-তাইওয়ান সম্পর্কের উত্তোরত্তর অবনতি ঘটছে। তারই জেরে সম্প্রতি তাইওয়ানে ঘন ঘন নিজেদের সামরিক উপস্থিতি জানান দিচ্ছে চীন।
২০২১ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানার মধ্যে ১৫০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল দেশটি। তারপর থেকে চীন-তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই উত্তেজনা আরও বেড়েছে তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মন্তব্য ও তার প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাল্টা মন্তব্যের পর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ানে সামরিক অভিযান শুরু করে, সেক্ষেত্রে এই দ্বীপরাষ্ট্রটির পাশে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ‘প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
তার এ মন্তব্যের পরেই চীনের পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন পাল্টা এক বিবৃতিতে বলেন, চীন কখনও তার মৌলিক স্বার্থগত ইস্যুতে কোনো ছাড় দেয় না। তাইওয়ান বিষয়ে কোনো মন্তব্য বা পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আরও সতর্ক হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
১৯৪৯ সালে চীনের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকার ও কমিউনিস্টদের মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধে জয় হয়েছিল কমিউনিস্টদের। পরাজিত গণতান্ত্রিক সরকারের নেতারা তাইওয়ানে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকেই তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখ-ের অংশ বলে দাবি করছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)। অন্যদিকে, চীনের কবল থেকে তাইওয়ানকে রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে ‘কৌশলগত প্রচেষ্টা’ চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। এ কারণেই তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও ‘তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি চুক্তি অনুসারে দ্বীপটির কাছে অস্ত্র বিক্রিসহ বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ বজায় রাখছে যুক্তরাষ্ট্র।