ঢাকা ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

চিরবিদায় নিলেন পোপ ফ্রান্সিস

  • আপডেট সময় : ১২:১৬:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম লাতিন আমেরিকান নেতা পোপ ফ্রান্সিস

প্রত্যাশা ডেস্ক: ৮৮ বছর বয়সে চিরবিদায় নিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম লাতিন আমেরিকান নেতা পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকানের কার্ডিনাল কেভিন ফারেল সোমবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃবিতে পোপের মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আজ সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) রোমের বিশপ ফ্রান্সিস স্বর্গীয় পিতার কাছে ফিরে গেছেন।’

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে ভ্যাটিকানে ফিরেছিলেন এক যুগ ধরে রোমান ক্যাথলিকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসা ফ্রান্সিস। রোববার (২০ এপ্রিল) হুইলচেয়ারে বসে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার বারান্দা থেকে উচ্ছ্বসিত জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে ইস্টারের শুভকামনা জানিয়েছিলেন। তার পরদিনই এলো তাঁর মৃত্যুর খবর।

২০১৭ সালে বাংলাদেশেও এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

আর্জেন্টিনার ধর্মযাজক জর্জ মারিও বারগোলিও ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ নির্বাচিত হয়ে ফ্রান্সিস নাম নেন। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

২০১৭ সালে বাংলাদেশেও এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৯ সালে। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ তিনি, সে কারণে কেউ কেউ তাকে দেখতেন ‘বহিরাগত’ হিসেবে। আবার অনেকের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘গরিবের বন্ধু’ একজন ধর্মযাজক হিসেবে।

পোপ হিসেবে ফ্রান্সিস সরল জীবনযাপন বেছে নিয়েছিলেন। আগের পোপদের মতো জাঁকজমকপূর্ণ অ্যাপার্টমেন্টে না থেকে সাধারণ ধর্মযাজকদের আবাসে বসবাস করতেন। তার ভাষায়, এটা ছিল তার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। পোপ ফ্রান্সিস যখন দায়িত্ব নেন, ক্যাথলিক চার্চ তখন যৌন কেলেঙ্কারি আর ভ্যাটিকান প্রশাসনের কোন্দলে ক্ষতবিক্ষত। তিনি পরিবর্তনের ম্যান্ডেট নিয়ে আসেন এবং চেষ্টা করেন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। তবে রক্ষণশীলদের সমালোচনার তীরে তাকে বিদ্ধ হতে হয়েছে বার বার। চার্চের ঐতিহ্য ধ্বংসের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। আবার অনেকে অভিযোগ করেছেন, পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিলেও যথেষ্ট পরিবর্তন তিনি আনতে পারেননি। এর মধ্যেও পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বহু দেশ সফর করে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও শান্তির বার্তা তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং অভিবাসীদের পক্ষে তিনি ছিলেন সরব।

এরপর যেভাবে যা হবে: একজন পোপ মারা গেলে কীভাবে ভ্যাটিকান চলবে, কীভাবে তার শেষকৃত্য হবে, কীভাবে একজন নতুন পোপ নির্বাচিত হবেন, তার সবই ঠিক করা আছে।

পোপ মারা গেলে সবার আগে বিষয়টি জানেন ক্যামেরলেঙ্গো। তিনি হলেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের একজন কার্ডিনাল, পোপের পরেই তার অবস্থান।

নিয়ম হলো- পোপকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করার পর তার হাতের সোনার আংটি খুলে নেওয়া হবে। ওই আংটিকে বলে ‘রিং অফ ফিশারম্যান’। ক্যামেরলেঙ্গো ওই আংটি নষ্ট করে ফেলবেন। এর মধ্য দিয়ে পোপের ক্ষমতাকালের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে।

পোপ যে অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন, সেটি সিল বা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্যাথলিক চার্চে ঘোষণা করা হবে ৯ দিনের শোক।

সাধারণত মৃত্যুর চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ দিনের মধ্যে পোপকে সমাহিত করা হয়। অধিকাংশ পোপকেই সমাহিত করা হয় ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায়। তবে পোপ ফ্রান্সিস রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাগিওর ব্যাসিলিকায় তার দেহ রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন। পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করবেন কার্ডিনাল ক্যামারলেঙ্গো। পাশাপাশি তিনি নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য কার্ডিনালদের সম্মেলন ডাকবেন, যাকে বলা হয় কনক্লেভ।

যেভাবে হয় নতুন পোপ নির্বাচন: পোপের মৃত্যুর ১৫ দিন পর শুরু হয় কনক্লেভ। তবে কার্ডিনালদের সবাই পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন না। যাদের বয়স আশির কম, কেবল তারাই ভোট দেওয়ার অধিকার রাখেন। সব মিলিয়ে ১২০ জনের মতো কার্ডিনাল ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন। পোপ নির্বাচনের সময়টায় তাদের সিসটাইন চ্যাপেলে তালাবন্ধ করে রাখা হয়। বাইরের দুনিয়ার সাথে কোনো যোগাযোগ থাকে না তাদের। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন কার্ডিনালরা ভ্যাটিকান প্রাসাদে জড়ো হন। নতুন পোপ নির্বাচিত করতে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হয়। নির্ধারিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ভোট চলতে থাকে।

প্রথম দিন যদি কার্ডিনালরা একমত হতে না পারেন, তাহলে ভোটগ্রহণ একদিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়, যাতে তারা প্রার্থনা ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে পারেন। প্রতিবার ভোটের পর ব্যালটগুলো নির্দিষ্ট চুল্লিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়। চিমনি দিয়ে বের হওয়া সেই ধোঁয়াই বাইরের পৃথিবীকে বলে দেয়, নতুন পোপ নির্বাচিত হলেন কি না। ধোঁয়া যদি কালো হয়, বুঝতে হবে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা কেউ পাননি। আর ধোঁয়া সাদা হলে বুঝে নিতে হবে, কার্ডিনালরা নতুন পোপ নির্বাচন করতে পেরেছেন। পোপ নির্বাচন হয়ে গেলে শুরু হয় পোপের নাম ঘোষণার প্রক্রিয়া। ঊর্ধ্বতন কোনো কার্ডিনাল নতুন পোপের নাম ঘোষণা করেন। নতুন পোপ নতুন পোশাক পরে জনসম্মুখে আসেন। আঙুলে পরেন ‘রিং অব দ্য ফিশারম্যান’। ঈশ্বরের নামে শপথ নেওয়ার পর তিনি ভ্যাটিক্যানের ব্যালকনি থেকে ভাষণ দেবেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চিরবিদায় নিলেন পোপ ফ্রান্সিস

আপডেট সময় : ১২:১৬:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: ৮৮ বছর বয়সে চিরবিদায় নিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম লাতিন আমেরিকান নেতা পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকানের কার্ডিনাল কেভিন ফারেল সোমবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃবিতে পোপের মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আজ সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) রোমের বিশপ ফ্রান্সিস স্বর্গীয় পিতার কাছে ফিরে গেছেন।’

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে ভ্যাটিকানে ফিরেছিলেন এক যুগ ধরে রোমান ক্যাথলিকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসা ফ্রান্সিস। রোববার (২০ এপ্রিল) হুইলচেয়ারে বসে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার বারান্দা থেকে উচ্ছ্বসিত জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে ইস্টারের শুভকামনা জানিয়েছিলেন। তার পরদিনই এলো তাঁর মৃত্যুর খবর।

২০১৭ সালে বাংলাদেশেও এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

আর্জেন্টিনার ধর্মযাজক জর্জ মারিও বারগোলিও ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ নির্বাচিত হয়ে ফ্রান্সিস নাম নেন। রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

২০১৭ সালে বাংলাদেশেও এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৯ সালে। পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ তিনি, সে কারণে কেউ কেউ তাকে দেখতেন ‘বহিরাগত’ হিসেবে। আবার অনেকের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘গরিবের বন্ধু’ একজন ধর্মযাজক হিসেবে।

পোপ হিসেবে ফ্রান্সিস সরল জীবনযাপন বেছে নিয়েছিলেন। আগের পোপদের মতো জাঁকজমকপূর্ণ অ্যাপার্টমেন্টে না থেকে সাধারণ ধর্মযাজকদের আবাসে বসবাস করতেন। তার ভাষায়, এটা ছিল তার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। পোপ ফ্রান্সিস যখন দায়িত্ব নেন, ক্যাথলিক চার্চ তখন যৌন কেলেঙ্কারি আর ভ্যাটিকান প্রশাসনের কোন্দলে ক্ষতবিক্ষত। তিনি পরিবর্তনের ম্যান্ডেট নিয়ে আসেন এবং চেষ্টা করেন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। তবে রক্ষণশীলদের সমালোচনার তীরে তাকে বিদ্ধ হতে হয়েছে বার বার। চার্চের ঐতিহ্য ধ্বংসের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। আবার অনেকে অভিযোগ করেছেন, পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিলেও যথেষ্ট পরিবর্তন তিনি আনতে পারেননি। এর মধ্যেও পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বহু দেশ সফর করে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও শান্তির বার্তা তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং অভিবাসীদের পক্ষে তিনি ছিলেন সরব।

এরপর যেভাবে যা হবে: একজন পোপ মারা গেলে কীভাবে ভ্যাটিকান চলবে, কীভাবে তার শেষকৃত্য হবে, কীভাবে একজন নতুন পোপ নির্বাচিত হবেন, তার সবই ঠিক করা আছে।

পোপ মারা গেলে সবার আগে বিষয়টি জানেন ক্যামেরলেঙ্গো। তিনি হলেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের একজন কার্ডিনাল, পোপের পরেই তার অবস্থান।

নিয়ম হলো- পোপকে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণা করার পর তার হাতের সোনার আংটি খুলে নেওয়া হবে। ওই আংটিকে বলে ‘রিং অফ ফিশারম্যান’। ক্যামেরলেঙ্গো ওই আংটি নষ্ট করে ফেলবেন। এর মধ্য দিয়ে পোপের ক্ষমতাকালের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে।

পোপ যে অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন, সেটি সিল বা বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্যাথলিক চার্চে ঘোষণা করা হবে ৯ দিনের শোক।

সাধারণত মৃত্যুর চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ দিনের মধ্যে পোপকে সমাহিত করা হয়। অধিকাংশ পোপকেই সমাহিত করা হয় ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায়। তবে পোপ ফ্রান্সিস রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাগিওর ব্যাসিলিকায় তার দেহ রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন। পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করবেন কার্ডিনাল ক্যামারলেঙ্গো। পাশাপাশি তিনি নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য কার্ডিনালদের সম্মেলন ডাকবেন, যাকে বলা হয় কনক্লেভ।

যেভাবে হয় নতুন পোপ নির্বাচন: পোপের মৃত্যুর ১৫ দিন পর শুরু হয় কনক্লেভ। তবে কার্ডিনালদের সবাই পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন না। যাদের বয়স আশির কম, কেবল তারাই ভোট দেওয়ার অধিকার রাখেন। সব মিলিয়ে ১২০ জনের মতো কার্ডিনাল ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন। পোপ নির্বাচনের সময়টায় তাদের সিসটাইন চ্যাপেলে তালাবন্ধ করে রাখা হয়। বাইরের দুনিয়ার সাথে কোনো যোগাযোগ থাকে না তাদের। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন কার্ডিনালরা ভ্যাটিকান প্রাসাদে জড়ো হন। নতুন পোপ নির্বাচিত করতে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন হয়। নির্ধারিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ভোট চলতে থাকে।

প্রথম দিন যদি কার্ডিনালরা একমত হতে না পারেন, তাহলে ভোটগ্রহণ একদিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়, যাতে তারা প্রার্থনা ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে পারেন। প্রতিবার ভোটের পর ব্যালটগুলো নির্দিষ্ট চুল্লিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়। চিমনি দিয়ে বের হওয়া সেই ধোঁয়াই বাইরের পৃথিবীকে বলে দেয়, নতুন পোপ নির্বাচিত হলেন কি না। ধোঁয়া যদি কালো হয়, বুঝতে হবে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা কেউ পাননি। আর ধোঁয়া সাদা হলে বুঝে নিতে হবে, কার্ডিনালরা নতুন পোপ নির্বাচন করতে পেরেছেন। পোপ নির্বাচন হয়ে গেলে শুরু হয় পোপের নাম ঘোষণার প্রক্রিয়া। ঊর্ধ্বতন কোনো কার্ডিনাল নতুন পোপের নাম ঘোষণা করেন। নতুন পোপ নতুন পোশাক পরে জনসম্মুখে আসেন। আঙুলে পরেন ‘রিং অব দ্য ফিশারম্যান’। ঈশ্বরের নামে শপথ নেওয়ার পর তিনি ভ্যাটিক্যানের ব্যালকনি থেকে ভাষণ দেবেন।