ঢাকা ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

চিন্ময়ের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন না, পিছিয়েছে জামিন শুনানি

  • আপডেট সময় : ০৭:২০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪৮ বার পড়া হয়েছে

চিন্ময়ের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন না, পিছিয়েছে জামিন শুনানি

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি পিছিয়েছে। আজ মঙ্গলবার অবকাশকালীন আদালতের বিচারক চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে চিন্ময় কৃষ্ণের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত জামিন শুনানি পিছিয়ে দেন।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।

কিন্তু শুনানিতে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। যার কারণে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেন। আসামি পক্ষে আইনজীবী কেন উপস্থিত হয়নি, জানতে চাইলে নাজিম উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন অংশ নেননি, জানি না। শুনানিতে অংশ নিতে কোনো আইনজীবীকে ভয় দেখানো কিংবা হুমকি দেওয়ার কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এখন পর্যন্ত কোনো আইনজীবী আমাদের কিছু জানাননি।’

শুনানিতে কেন অংশ নেননি জানতে চিন্ময় দাসের আইনজীবী শুভাশিস শর্মার মুঠোফোন একাধিক বার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল করিম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো আইনজীবী তাঁর কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের মূল ফটক ও আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। অন্যদিকে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ ছাড়া মিছিলে মহানগর পিপির পদত্যাগের দাবিও জানান আইনজীবীরা।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়। পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৩৯ জন। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ৯ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। গতকাল সোমবার পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির জন্য ওকালতনামা দিলে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দিন।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের সংগ্রহ করা ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইনজীবী সাইফুলকে কোপান ওম দাশ, চন্দন ও রনব। তাঁকে পেটাতে থাকেন অন্যরা। সেখানে আরও ছিলেন ২৫-৩০ জন। তাঁদের বেশির ভাগই পরিচ্ছন্নতাকর্মী। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ওই দিনই কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরদিন জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে আদালত মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য রাখেন বলে সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন। গত ৩১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চিন্ময়ের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন না, পিছিয়েছে জামিন শুনানি

আপডেট সময় : ০৭:২০:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি পিছিয়েছে। আজ মঙ্গলবার অবকাশকালীন আদালতের বিচারক চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে চিন্ময় কৃষ্ণের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় আদালত জামিন শুনানি পিছিয়ে দেন।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১১টার দিকে মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাসের জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল।

কিন্তু শুনানিতে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। যার কারণে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেন। আসামি পক্ষে আইনজীবী কেন উপস্থিত হয়নি, জানতে চাইলে নাজিম উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন অংশ নেননি, জানি না। শুনানিতে অংশ নিতে কোনো আইনজীবীকে ভয় দেখানো কিংবা হুমকি দেওয়ার কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এখন পর্যন্ত কোনো আইনজীবী আমাদের কিছু জানাননি।’

শুনানিতে কেন অংশ নেননি জানতে চিন্ময় দাসের আইনজীবী শুভাশিস শর্মার মুঠোফোন একাধিক বার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল করিম। জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো আইনজীবী তাঁর কাছে কোনো অভিযোগ করেননি।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের মূল ফটক ও আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। অন্যদিকে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ ছাড়া মিছিলে মহানগর পিপির পদত্যাগের দাবিও জানান আইনজীবীরা।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর হওয়াকে কেন্দ্র করে ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও চারটি মামলা হয়। পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার হন ৩৯ জন। এর মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ৯ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন। গতকাল সোমবার পুলিশের ওপর হামলা ও কাজে বাধাদানের মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামির জন্য ওকালতনামা দিলে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেন অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর সরকারি কৌঁসুলি নেজাম উদ্দিন।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের সংগ্রহ করা ৫২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজের সূত্র ধরে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আইনজীবী সাইফুলকে কোপান ওম দাশ, চন্দন ও রনব। তাঁকে পেটাতে থাকেন অন্যরা। সেখানে আরও ছিলেন ২৫-৩০ জন। তাঁদের বেশির ভাগই পরিচ্ছন্নতাকর্মী। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর হওয়ার পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ওই দিনই কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরদিন জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকলেও আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে কর্মবিরতির ডাক দিলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরে আদালত মঙ্গলবার শুনানির দিন ধার্য রাখেন বলে সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন। গত ৩১ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।