ঢাকা ১২:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

চিকিৎসায় মিলবে তৃতীয় লিঙ্গের সংকট থেকে মুক্তি

  • আপডেট সময় : ০৪:১১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

অধ্যাপক ডা. একেএম জাহিদ হোসেন : আগে ছেলের মতো থাকলেও অপারেশনের পর আর ছেলের মতো থাকবে না। অর্থাৎ তাকে যদি মেয়ে বানায় তাহলে মেয়ের মতো হবে।
ডিএসডি: ত্রুটিপূর্ণ লিঙ্গ নিয়ে জন্মগ্রহণ করাকে ডিজ অর্ডার অব সেক্সুয়াল ডেভেলপমেন্ট বলে। সংক্ষেপে এটিকে ডিএসডি বলা হয়। অপূর্ণাঙ্গ বা ত্রুটিপূর্ণ লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুর শারীরিক ফেনোটাইপ বা বাইরের প্রজনন অঙ্গ ও জেনোটাইপ বা জিনগত ভেতরের প্রজনন অঙ্গের মধ্যে পার্থক্য থাকে। অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ সেক্স; যা ক্রমোজম (জেনোটাইপ) দিয়ে নির্ণয় করা হয়, সেটি এক রকম।

কিন্তু বাইরেরটা (ফেনোটাইপ) অন্য রকম। সেটি আবার স্বাভাবিক না। অর্থাৎ একজন ছেলেশিশুর বা মেয়েশিশুর স্বাভাবিক লিঙ্গ যেমন থাকে এ রকম হয় না; বরং দুটির সংমিশ্রণ থাকে। যেমনÑ একজন ছেলেকে দেখতে মেয়ের মতো মনে হয়। জিনগতভাবে তার লিঙ্গ মেয়েদের মতো হয়। এ সমস্যাকে বলা হয় ডিজঅর্ডার অব সেক্সুয়াল ডেভেলমেন্ট (ডিএসডি)।
চিহ্নিতকরণ: জন্মের পর পরই এগুলো চিহ্নিত করা যায়। বিষয়টি সন্তানের বাবা-মা বুঝতে পারলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। অথবা ক্লিনিকে শিশু জন্মের সময় কখনো শিশু বিশেষজ্ঞ বিষয়টি দেখে এটি চিহ্নিত করতে পারেন।

তিনি বুঝতে পারেন যে, তার লিঙ্গ স্বাভাবিক না। অস্পষ্ট থাকলে এসব রোগীদেরকে এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, পেডিয়াট্রিক সার্জারি অথবা পেডিয়াট্রিক এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগে পাঠান সংশ্লিষ্টরা। তখন বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগীর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। স্বাভাবিক একটি ছেলেশিশুর যা যা থাকা দরকার অথবা একটি মেয়েশিশুর যা থাকা দরকার, তা আছে কিনা—ফিজিক্যাল পরীক্ষায় এগুলো বেরিয়ে আসে। শিশুদের লিঙ্গ যে আকারের হওয়ার কথা, অস্বাভাবিক শিশুদের সে রকম থাকে না। তাদের লিঙ্গ ছোট, বড় অথবা অবিন্যস্ত থাকে। শিশুর লিঙ্গের নির্দিষ্ট সাইজের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা অবগত, তারা অস্বাভাবিক লিঙ্গ দেখলেই বুঝতে পারেন। এন্ড্রোজেন নামের একটি হরমোন সিনথেসিস থেকে এ সমস্যা হয়। তার ক্রোমোজমাল অ্যানালাইসিস করা হয়। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, তার ক্রোমোজম ৪৬ এক্সএক্স নাকি ৪৬ এক্স ওয়াই। ৪৬ এক্সএক্স হলে আমরা তাকে মেয়ে ধরি, আর ৪৬ এক্স ওয়াই হলে ধরি ছেলে। এর মধ্যেও আবার ব্যতিক্রম আছে। একটি শিশুর ক্রমোজম ৪৬ এক্সএক্স অথবা ৪৬ এক্স ওয়াই থাকে। এর পাশাপাশি যদি এর সঙ্গে জিনগত মিল না থাকে, তাহলে এই অবস্থাকে বলা হয় ডিজঅর্ডার অব সেক্সুয়াল ডেভেলমেন্ট (ডিএসডি)।

চিকিৎসা: প্রথমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, আপনার সন্তানের ক্রোমোজোম ছেলের, কিন্তু তাকে মেয়ের মতো দেখায়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাকে ছেলের মতো করা যাবে। তা না হলে সে মেয়ের আকৃতি নিয়ে বড় হবে, কিন্তু তার ভেতরে থাকবে ছেলের মতো। একটি ছেলে যদি মেয়ের মতো বড় হয়, তাহলে তার সেকেন্ডারি সেক্স কারেক্টারগুলো; যেমনÑ চেহারাসহ দৈহিক অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছেলের মতো বিকাশ হবে না। অথচ ছেলেদের মতো তার কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়ে যাবে। তখন স্বাভাবিক মানুষের মতো সবার সঙ্গে মিশতে পারবে না সে। স্বাভাবিক জীবনে আসতে পারবে না। এ কারণে দৈহিক অসঙ্গতিগুলো ধরা পড়ার ছয় মাস থেকে এক বছর কিংবা দুই বছরের মধ্যে যদি অপারেশনের মাধ্যমে স্বাভাবিক করা যায়, তাহলে তার মধ্যে যে সেক্স ক্রোমোজম পাওয়া যাবে—সে অনুযায়ী কনভার্ট করে দেওয়া গেলে সে ভেতর-বাইরে উভয় দিক থেকেই ওই সেক্স নিয়ে বেড়ে উঠবে। মেয়েদের সব বৈশিষ্ট্য হবে। তার হরমোন সমস্যা সমাধানের জন্য হরমোন থেরাপি দিয়ে থাকি। ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ার পর বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছেÑ এ রকম নজিরও আছে। অন্যান্য রোগীর ক্ষেত্রে যে রকম মতামত নিয়ে অপারেশন করা হয়, এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রেও মতামত নিয়ে অপারেশন করা হয়। যেহেতু দীর্ঘ সময় নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে এজন্য এসব রোগীকে খুব ভালোভাবে কাউন্সিলিং করতে হবে এবং তাদেরকে মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে।

যেখানে চিকিৎসার দেওয়া হয়: বিএসএমএমইউয়ে লিঙ্গ রূপান্তর চিকিৎসার জন্য আলাদা কখনো ইউনিট নেই। পেডিয়াট্রিক ইউরোলজির যে বিভাগটি খোলা হয়েছে, এর অধীনে ডিএসডি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। ১০টি শয্যা নিয়ে এ বিভাগের যাত্রা শুরু হয়েছে। ইউরোলজির অধীনে এই রোগীগুলো ভর্তি হবে। সুতরাং ওয়ার্ডে শয্যা খালি সাপেক্ষে ডিএসডি রোগীদের ভর্তি করা হয়। যদি পাঁচটি শয্যা খালি থাকে, তাহলে পাঁচজনকেই জায়গা দেওয়া হয়। যেহেতু বিরল এ রোগীদের চিকিৎসার লক্ষ্যে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে, সেহেতু লক্ষ্য থাকবে সব সময় এ ধরনের ২-১ জনকে ভর্তি রাখতে; যেন তাদের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া যায়।
দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা: বিএসএমএমইউতে স্থাপিত ক্লিনিকে অসমর্থ পরিবারের শিশুদের জন্য সর্ম্পূণ বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে দরিদ্র রোগীদের ফ্রি বেডে ভর্তি করা হয়। এসব রোগীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফ্রি হয়। আর ব্যয়বহুল কিছু পরীক্ষা স্বল্পমূল্যে হয়। এক কথায় সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষাই এখানে হয়। অপারেশনের সময় কিছু খরচ লাগে। যেমনÑ সেলাইয়ের সুতা, স্পেশাল অ্যান্টিবায়োটিক কিছু দরকার হলে…। তবে সাধারণত মেডিকেলে থাকা ওষুধেই সবকিছু হয়ে যায়। কিন্তু সোশ্যাল ম্যাটেরিয়াল রোগীদের বাহির থেকে সংগ্রহ করতে হয়। ক্যাথেটার ও টিউবসহ সামান্য কিছু জিনিস কিনতে হয়। যাদের সক্ষমতা আছে, তারা কিনবেন। আর যাদের সামর্থ্য নেই, তারা আবেদন করলে মেডিকেলের বিশেষ তহবিল থেকে ব্যবস্থা করা হয়। সুপারিশক্রমে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এককালীন ১০ হাজার টাকা পায় ডিএসডি রোগীরা। আর সমাজ কল্যাণ তহবিল থেকে কিছু ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এভাবেই দরিদ্রদের রোগীদের বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়।
সামর্থ্যবানদের খরচ: তৃতীয় লিঙ্গের চিকিৎসায় সামর্থ্যবান পরিবারকেও তেমন খরচ করতে হয় না। সামর্থ্যবান রোগীদের জন্য শয্যা বাবদ প্রতিদিন আড়াইশ টাকা দিতে হয়। ওই হিসাবে ২-৩ সপ্তাহ থাকলে পাঁচ হাজারের কিছু বেশি টাকা খরচ হবে। বড় অপারেশনের জন্য ৮-১০ হাজার টাকা দিতে হবে। এই দুটি খরচ বাড়তি লাগে। তবে এটা বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় অনেক কম। আর সবার জন্য এখান থেকে খাবার সরবরাহ করা হয়। কেউ চাইলে বাহির থেকে খাবার গ্রহণ করতে পারেন। মূলত খরচ খুব বেশি না। একটা শূন্যতা আছে, সেটি হলো শয্যা স্বল্পতা। কারণ এ বিভাগে ডিএসডি ছাড়াও অন্য অনেক ধরনের রোগী আছে। সারাদেশের শিশুদের যত জটিল রোগ আছে, যার চিকিৎসা অন্যান্য হাসপাতালে হয় না, একমাত্র বিএসএমএমইউয়ের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগেই হয়, সেসব রোগীরা এখানে ভিড় করে। এ ছাড়া তাদের এমন কিছু অপারেশন আছে, যেগুলো দেশের করপোরেট কখনো হাসপাতালÑ এমনই অন্যান্য স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটেও হয় না, সেগুলো শুধু এখানেই হয়। মূলত সেসব রোগী বেশি আসে। সে কারণে এ বিভাগে ওইসব রোগীর চাপ বেশি। ফলে অনেক সময় সিট দেওয়া যায় না।
প্রকৃত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া: অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগীকে নিজের প্রকৃত অবস্থায়ই ফিরিয়ে দেওয়া হবে, যা অবিন্যস্ত অবস্থায় ছিল। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিন্যাসের পর মেয়েকে মেয়ের মতো করে দেওয়া হবে। তখন তার মধ্যে মেয়েদের প্রতিটি চরিত্রই আসবে। হরমোনাল সমস্যা সমাধানের জন্য তাকে দেওয়া হবে হরমোন থেরাপি। তাহলে একটি মেয়ে পূর্ণ মেয়ের মতোই হবে। আগে অপারেশন হয়েছে, এ রকম মেয়ের দৃষ্টান্ত আছে। অপারেশনের পর বিয়ে হয়েছে, তার বাচ্চা হয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে কখনো সমস্যা হওয়ার কথা না।

ঝুঁকি: প্রতিটি পুনর্নির্মাণযোগ্য সার্জারিতেই ব্যর্থ হওয়ার একটি আশঙ্কা থাকে। এ জন্য ডিএসডির বেলাতেও তা হতে পারে। তাই কখনো এটি ব্যর্থ হলে একাধিকবার করারও দরকার হতে পারে। যেহেতু এসব রোগীদের ঘিরে সামাজিক বিভিন্ন বিষয় জড়িত। সে ধরনের কখনো ঘটনা না ঘটলে, এসব রোগী অস্ত্রোপচারে সুস্থ হয়ে যাবে। কারও অপারেশনের পর কখনো কারণে যদি দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার দরকার হয়, তাহলে সামাজিক কারণে সে না আসলে ঝুঁকির ব্যাপার থেকে যায়। তবে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে ফলোআপ অব্যাহত থাকে। এ জন্য সচেতনতার কখনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে জোরালো প্রচারণা দরকার, তাহলো—এ ধরনের রোগীরা অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যাবে। একবার না হলে দ্বিতীয়বারে, না হয় তৃতীয়বারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন। এখানে সচেতনতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক রোগী হয় তো মনে করবে, আমাকে একবার করা হলো অথচ ঠিক হলো না, আবার অস্ত্রোপচার করতে হবে। তারা একাধিবার অস্ত্রোপচারের বিষয়টি গ্রহণ করবে কি না, সেটিই চ্যালেঞ্জের। তবে কাউন্সিলেংয়ের সময় তাদের বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেবো। একাধিকবার প্রয়োজন হলে তারা যেন হতাশ না হন।
আইনি জটিলতা: আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে শিশুদের মতামত যেহেতু পিতা-মাতা দিয়ে থাকেন, সেহেতু তাদের থেকে নেবো। আর পরিণত রোগীদের মতামত তাদের কাছ থেকেই নিতে হবে। তারা যদি মতামত দেন, তাহলে আইনি কখনো জটিলতা থাকবে না। এসব সার্জারির জন্য দেশে আলাদা কখনো আইন নেই। অন্য ১০টি সার্জারির মতোই স্বাভাবিক। এজন্য আমরা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করি। তা হলো, পিতা-মাতার মতামত নেওয়া। এই সার্জারিতেও তাদের মতামতটাই প্রাধান্য পাবে। এ জন্য তাদের ভালো করে কাউন্সিলিং করতে হবে। যেহেতু বিষয়টি সময়সাপেক্ষ, একই সঙ্গে ফলোআপের। তাদেরকে সাইকোলজিক্যাল সাপোর্টও দিতে হবে। এ বিষয়ে এখনো কখনো আইনি জটিলতা হয়নি। ভবিষ্যতে আসলে তখন দেখা যাবে। প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের এ ধরনের সার্জারির করার সময় আইনের দরকার হতে পারে। বিশেষ করে শৈশবে সার্জারির পর একজন শিশু বড় হয়ে আইনের আশ্রয় নেয় কিনা—এটা নিয়ে ভাবার অবকাশ রয়েছে। এমনটি হলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট আর পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। আমাদের শিশুরা পিতা-মাতার ওপর নির্ভরশীল। অভিভাবকরা যে মতামত দেয়, সেটার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোতে মতদ্বৈততা দেখা দিয়েছে, সেটা হলো: পিতা-মাতা যদি মত না দেন, তাহলে এই অপারেশন করা যাবে না। শিশুটি বড় হওয়ার পর করতে চাইলে করবে। এছাড়া এ রকম রোগী বড় হওয়ার পর অপারেশন করলে উত্তরাধিকার সম্পত্তির বেলায় সমস্যা হতে পারে। কারণ এতদিন সবাই যাকে নারী হিসেবে জেনে এসেছে, সে যদি পুরুষে পরিণত হয় তাহলে বিপত্তি তৈরি হবে। কিন্তু যখন শৈশবে অস্ত্রোপচার করা হবে, তখন তো একজন স্বাভাবিক ছেলে বা মেয়ে হিসেবেই বড় হবে। তখন তার পরিচয় নিয়ে জটিলতা দেখা দেবে না। শৈশবেই তার ক্রোমোজোমাল জেন্ডার সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। ক্রোমোজম অনুসারেই তার লিঙ্গ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। তাই উত্তরাধিকার সম্পত্তির বিষয়ে আইনি জটিলতা হওয়ার আশঙ্কাও কম।

লেখক: চেয়ারম্যান, শিশু সার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চিকিৎসায় মিলবে তৃতীয় লিঙ্গের সংকট থেকে মুক্তি

আপডেট সময় : ০৪:১১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

অধ্যাপক ডা. একেএম জাহিদ হোসেন : আগে ছেলের মতো থাকলেও অপারেশনের পর আর ছেলের মতো থাকবে না। অর্থাৎ তাকে যদি মেয়ে বানায় তাহলে মেয়ের মতো হবে।
ডিএসডি: ত্রুটিপূর্ণ লিঙ্গ নিয়ে জন্মগ্রহণ করাকে ডিজ অর্ডার অব সেক্সুয়াল ডেভেলপমেন্ট বলে। সংক্ষেপে এটিকে ডিএসডি বলা হয়। অপূর্ণাঙ্গ বা ত্রুটিপূর্ণ লিঙ্গ নিয়ে জন্ম নেওয়া শিশুর শারীরিক ফেনোটাইপ বা বাইরের প্রজনন অঙ্গ ও জেনোটাইপ বা জিনগত ভেতরের প্রজনন অঙ্গের মধ্যে পার্থক্য থাকে। অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ সেক্স; যা ক্রমোজম (জেনোটাইপ) দিয়ে নির্ণয় করা হয়, সেটি এক রকম।

কিন্তু বাইরেরটা (ফেনোটাইপ) অন্য রকম। সেটি আবার স্বাভাবিক না। অর্থাৎ একজন ছেলেশিশুর বা মেয়েশিশুর স্বাভাবিক লিঙ্গ যেমন থাকে এ রকম হয় না; বরং দুটির সংমিশ্রণ থাকে। যেমনÑ একজন ছেলেকে দেখতে মেয়ের মতো মনে হয়। জিনগতভাবে তার লিঙ্গ মেয়েদের মতো হয়। এ সমস্যাকে বলা হয় ডিজঅর্ডার অব সেক্সুয়াল ডেভেলমেন্ট (ডিএসডি)।
চিহ্নিতকরণ: জন্মের পর পরই এগুলো চিহ্নিত করা যায়। বিষয়টি সন্তানের বাবা-মা বুঝতে পারলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। অথবা ক্লিনিকে শিশু জন্মের সময় কখনো শিশু বিশেষজ্ঞ বিষয়টি দেখে এটি চিহ্নিত করতে পারেন।

তিনি বুঝতে পারেন যে, তার লিঙ্গ স্বাভাবিক না। অস্পষ্ট থাকলে এসব রোগীদেরকে এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, পেডিয়াট্রিক সার্জারি অথবা পেডিয়াট্রিক এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগে পাঠান সংশ্লিষ্টরা। তখন বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগীর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। স্বাভাবিক একটি ছেলেশিশুর যা যা থাকা দরকার অথবা একটি মেয়েশিশুর যা থাকা দরকার, তা আছে কিনা—ফিজিক্যাল পরীক্ষায় এগুলো বেরিয়ে আসে। শিশুদের লিঙ্গ যে আকারের হওয়ার কথা, অস্বাভাবিক শিশুদের সে রকম থাকে না। তাদের লিঙ্গ ছোট, বড় অথবা অবিন্যস্ত থাকে। শিশুর লিঙ্গের নির্দিষ্ট সাইজের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা অবগত, তারা অস্বাভাবিক লিঙ্গ দেখলেই বুঝতে পারেন। এন্ড্রোজেন নামের একটি হরমোন সিনথেসিস থেকে এ সমস্যা হয়। তার ক্রোমোজমাল অ্যানালাইসিস করা হয়। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, তার ক্রোমোজম ৪৬ এক্সএক্স নাকি ৪৬ এক্স ওয়াই। ৪৬ এক্সএক্স হলে আমরা তাকে মেয়ে ধরি, আর ৪৬ এক্স ওয়াই হলে ধরি ছেলে। এর মধ্যেও আবার ব্যতিক্রম আছে। একটি শিশুর ক্রমোজম ৪৬ এক্সএক্স অথবা ৪৬ এক্স ওয়াই থাকে। এর পাশাপাশি যদি এর সঙ্গে জিনগত মিল না থাকে, তাহলে এই অবস্থাকে বলা হয় ডিজঅর্ডার অব সেক্সুয়াল ডেভেলমেন্ট (ডিএসডি)।

চিকিৎসা: প্রথমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে, আপনার সন্তানের ক্রোমোজোম ছেলের, কিন্তু তাকে মেয়ের মতো দেখায়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাকে ছেলের মতো করা যাবে। তা না হলে সে মেয়ের আকৃতি নিয়ে বড় হবে, কিন্তু তার ভেতরে থাকবে ছেলের মতো। একটি ছেলে যদি মেয়ের মতো বড় হয়, তাহলে তার সেকেন্ডারি সেক্স কারেক্টারগুলো; যেমনÑ চেহারাসহ দৈহিক অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছেলের মতো বিকাশ হবে না। অথচ ছেলেদের মতো তার কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়ে যাবে। তখন স্বাভাবিক মানুষের মতো সবার সঙ্গে মিশতে পারবে না সে। স্বাভাবিক জীবনে আসতে পারবে না। এ কারণে দৈহিক অসঙ্গতিগুলো ধরা পড়ার ছয় মাস থেকে এক বছর কিংবা দুই বছরের মধ্যে যদি অপারেশনের মাধ্যমে স্বাভাবিক করা যায়, তাহলে তার মধ্যে যে সেক্স ক্রোমোজম পাওয়া যাবে—সে অনুযায়ী কনভার্ট করে দেওয়া গেলে সে ভেতর-বাইরে উভয় দিক থেকেই ওই সেক্স নিয়ে বেড়ে উঠবে। মেয়েদের সব বৈশিষ্ট্য হবে। তার হরমোন সমস্যা সমাধানের জন্য হরমোন থেরাপি দিয়ে থাকি। ছেলে থেকে মেয়ে হওয়ার পর বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছেÑ এ রকম নজিরও আছে। অন্যান্য রোগীর ক্ষেত্রে যে রকম মতামত নিয়ে অপারেশন করা হয়, এ ধরনের রোগীর ক্ষেত্রেও মতামত নিয়ে অপারেশন করা হয়। যেহেতু দীর্ঘ সময় নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে এজন্য এসব রোগীকে খুব ভালোভাবে কাউন্সিলিং করতে হবে এবং তাদেরকে মানসিক সাপোর্ট দিতে হবে।

যেখানে চিকিৎসার দেওয়া হয়: বিএসএমএমইউয়ে লিঙ্গ রূপান্তর চিকিৎসার জন্য আলাদা কখনো ইউনিট নেই। পেডিয়াট্রিক ইউরোলজির যে বিভাগটি খোলা হয়েছে, এর অধীনে ডিএসডি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। ১০টি শয্যা নিয়ে এ বিভাগের যাত্রা শুরু হয়েছে। ইউরোলজির অধীনে এই রোগীগুলো ভর্তি হবে। সুতরাং ওয়ার্ডে শয্যা খালি সাপেক্ষে ডিএসডি রোগীদের ভর্তি করা হয়। যদি পাঁচটি শয্যা খালি থাকে, তাহলে পাঁচজনকেই জায়গা দেওয়া হয়। যেহেতু বিরল এ রোগীদের চিকিৎসার লক্ষ্যে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে, সেহেতু লক্ষ্য থাকবে সব সময় এ ধরনের ২-১ জনকে ভর্তি রাখতে; যেন তাদের দিকে বাড়তি নজর দেওয়া যায়।
দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা: বিএসএমএমইউতে স্থাপিত ক্লিনিকে অসমর্থ পরিবারের শিশুদের জন্য সর্ম্পূণ বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে দরিদ্র রোগীদের ফ্রি বেডে ভর্তি করা হয়। এসব রোগীদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফ্রি হয়। আর ব্যয়বহুল কিছু পরীক্ষা স্বল্পমূল্যে হয়। এক কথায় সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষাই এখানে হয়। অপারেশনের সময় কিছু খরচ লাগে। যেমনÑ সেলাইয়ের সুতা, স্পেশাল অ্যান্টিবায়োটিক কিছু দরকার হলে…। তবে সাধারণত মেডিকেলে থাকা ওষুধেই সবকিছু হয়ে যায়। কিন্তু সোশ্যাল ম্যাটেরিয়াল রোগীদের বাহির থেকে সংগ্রহ করতে হয়। ক্যাথেটার ও টিউবসহ সামান্য কিছু জিনিস কিনতে হয়। যাদের সক্ষমতা আছে, তারা কিনবেন। আর যাদের সামর্থ্য নেই, তারা আবেদন করলে মেডিকেলের বিশেষ তহবিল থেকে ব্যবস্থা করা হয়। সুপারিশক্রমে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এককালীন ১০ হাজার টাকা পায় ডিএসডি রোগীরা। আর সমাজ কল্যাণ তহবিল থেকে কিছু ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এভাবেই দরিদ্রদের রোগীদের বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়।
সামর্থ্যবানদের খরচ: তৃতীয় লিঙ্গের চিকিৎসায় সামর্থ্যবান পরিবারকেও তেমন খরচ করতে হয় না। সামর্থ্যবান রোগীদের জন্য শয্যা বাবদ প্রতিদিন আড়াইশ টাকা দিতে হয়। ওই হিসাবে ২-৩ সপ্তাহ থাকলে পাঁচ হাজারের কিছু বেশি টাকা খরচ হবে। বড় অপারেশনের জন্য ৮-১০ হাজার টাকা দিতে হবে। এই দুটি খরচ বাড়তি লাগে। তবে এটা বেসরকারি হাসপাতালের তুলনায় অনেক কম। আর সবার জন্য এখান থেকে খাবার সরবরাহ করা হয়। কেউ চাইলে বাহির থেকে খাবার গ্রহণ করতে পারেন। মূলত খরচ খুব বেশি না। একটা শূন্যতা আছে, সেটি হলো শয্যা স্বল্পতা। কারণ এ বিভাগে ডিএসডি ছাড়াও অন্য অনেক ধরনের রোগী আছে। সারাদেশের শিশুদের যত জটিল রোগ আছে, যার চিকিৎসা অন্যান্য হাসপাতালে হয় না, একমাত্র বিএসএমএমইউয়ের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগেই হয়, সেসব রোগীরা এখানে ভিড় করে। এ ছাড়া তাদের এমন কিছু অপারেশন আছে, যেগুলো দেশের করপোরেট কখনো হাসপাতালÑ এমনই অন্যান্য স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটেও হয় না, সেগুলো শুধু এখানেই হয়। মূলত সেসব রোগী বেশি আসে। সে কারণে এ বিভাগে ওইসব রোগীর চাপ বেশি। ফলে অনেক সময় সিট দেওয়া যায় না।
প্রকৃত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া: অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগীকে নিজের প্রকৃত অবস্থায়ই ফিরিয়ে দেওয়া হবে, যা অবিন্যস্ত অবস্থায় ছিল। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিন্যাসের পর মেয়েকে মেয়ের মতো করে দেওয়া হবে। তখন তার মধ্যে মেয়েদের প্রতিটি চরিত্রই আসবে। হরমোনাল সমস্যা সমাধানের জন্য তাকে দেওয়া হবে হরমোন থেরাপি। তাহলে একটি মেয়ে পূর্ণ মেয়ের মতোই হবে। আগে অপারেশন হয়েছে, এ রকম মেয়ের দৃষ্টান্ত আছে। অপারেশনের পর বিয়ে হয়েছে, তার বাচ্চা হয়েছে। সুতরাং এ বিষয়ে কখনো সমস্যা হওয়ার কথা না।

ঝুঁকি: প্রতিটি পুনর্নির্মাণযোগ্য সার্জারিতেই ব্যর্থ হওয়ার একটি আশঙ্কা থাকে। এ জন্য ডিএসডির বেলাতেও তা হতে পারে। তাই কখনো এটি ব্যর্থ হলে একাধিকবার করারও দরকার হতে পারে। যেহেতু এসব রোগীদের ঘিরে সামাজিক বিভিন্ন বিষয় জড়িত। সে ধরনের কখনো ঘটনা না ঘটলে, এসব রোগী অস্ত্রোপচারে সুস্থ হয়ে যাবে। কারও অপারেশনের পর কখনো কারণে যদি দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার দরকার হয়, তাহলে সামাজিক কারণে সে না আসলে ঝুঁকির ব্যাপার থেকে যায়। তবে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে ফলোআপ অব্যাহত থাকে। এ জন্য সচেতনতার কখনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে জোরালো প্রচারণা দরকার, তাহলো—এ ধরনের রোগীরা অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যাবে। একবার না হলে দ্বিতীয়বারে, না হয় তৃতীয়বারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন। এখানে সচেতনতার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক রোগী হয় তো মনে করবে, আমাকে একবার করা হলো অথচ ঠিক হলো না, আবার অস্ত্রোপচার করতে হবে। তারা একাধিবার অস্ত্রোপচারের বিষয়টি গ্রহণ করবে কি না, সেটিই চ্যালেঞ্জের। তবে কাউন্সিলেংয়ের সময় তাদের বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেবো। একাধিকবার প্রয়োজন হলে তারা যেন হতাশ না হন।
আইনি জটিলতা: আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে শিশুদের মতামত যেহেতু পিতা-মাতা দিয়ে থাকেন, সেহেতু তাদের থেকে নেবো। আর পরিণত রোগীদের মতামত তাদের কাছ থেকেই নিতে হবে। তারা যদি মতামত দেন, তাহলে আইনি কখনো জটিলতা থাকবে না। এসব সার্জারির জন্য দেশে আলাদা কখনো আইন নেই। অন্য ১০টি সার্জারির মতোই স্বাভাবিক। এজন্য আমরা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করি। তা হলো, পিতা-মাতার মতামত নেওয়া। এই সার্জারিতেও তাদের মতামতটাই প্রাধান্য পাবে। এ জন্য তাদের ভালো করে কাউন্সিলিং করতে হবে। যেহেতু বিষয়টি সময়সাপেক্ষ, একই সঙ্গে ফলোআপের। তাদেরকে সাইকোলজিক্যাল সাপোর্টও দিতে হবে। এ বিষয়ে এখনো কখনো আইনি জটিলতা হয়নি। ভবিষ্যতে আসলে তখন দেখা যাবে। প্রাপ্তবয়স্ক রোগীদের এ ধরনের সার্জারির করার সময় আইনের দরকার হতে পারে। বিশেষ করে শৈশবে সার্জারির পর একজন শিশু বড় হয়ে আইনের আশ্রয় নেয় কিনা—এটা নিয়ে ভাবার অবকাশ রয়েছে। এমনটি হলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট আর পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। আমাদের শিশুরা পিতা-মাতার ওপর নির্ভরশীল। অভিভাবকরা যে মতামত দেয়, সেটার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোতে মতদ্বৈততা দেখা দিয়েছে, সেটা হলো: পিতা-মাতা যদি মত না দেন, তাহলে এই অপারেশন করা যাবে না। শিশুটি বড় হওয়ার পর করতে চাইলে করবে। এছাড়া এ রকম রোগী বড় হওয়ার পর অপারেশন করলে উত্তরাধিকার সম্পত্তির বেলায় সমস্যা হতে পারে। কারণ এতদিন সবাই যাকে নারী হিসেবে জেনে এসেছে, সে যদি পুরুষে পরিণত হয় তাহলে বিপত্তি তৈরি হবে। কিন্তু যখন শৈশবে অস্ত্রোপচার করা হবে, তখন তো একজন স্বাভাবিক ছেলে বা মেয়ে হিসেবেই বড় হবে। তখন তার পরিচয় নিয়ে জটিলতা দেখা দেবে না। শৈশবেই তার ক্রোমোজোমাল জেন্ডার সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে। ক্রোমোজম অনুসারেই তার লিঙ্গ নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। তাই উত্তরাধিকার সম্পত্তির বিষয়ে আইনি জটিলতা হওয়ার আশঙ্কাও কম।

লেখক: চেয়ারম্যান, শিশু সার্জারি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়