প্রত্যাশা ডেস্ক: চিকিৎসায় অবিশ্বাস্য সাফল্য দেখালেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবির চিকিৎসকেরা। মাত্র তিন দিনেই পাকস্থলীর ক্যানসার থেকে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়লেন ৪০ বছর বয়সী এক নারী। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) এ খবর দিয়েছে খালিজ টাইমস।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন পেটব্যথায় ভোগার পর সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ওই নারী জানতে পারেন, তার স্টমাক ক্যানসার হয়েছে এবং তা পেরিটোনিয়ামে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিবারের কারও ক্যানসার ইতিহাস না থাকলেও দ্রুত শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি বদলে যায়।
আবুধাবির বুরজিল মেডিকেল সিটির সাধারণ ও অনকোলজিক্যাল সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ আদিলেহর নেতৃত্বে একটি বহুবিষয়ক বিশেষজ্ঞ দল রোগীর চিকিৎসা পরিচালনা করেন।
৬ ঘণ্টাব্যাপী অপারেশনে ধাপে ধাপে যা করা হয়, প্রথমে সাইটোরিডাকটিভ সার্জারি করে পাকস্থলীর ক্যানসার কোষ অপসারণ, এরপর দা ভিঞ্চি রোবটিক সিস্টেম ব্যবহার করে রোবট-সহায়িত গ্যাস্ট্রেকটমি ও সর্বশেষ ধাপে পেটের ভেতরে সরাসরি উষ্ণ কেমোথেরাপি প্রয়োগ।
চিকিৎসকরা জানান, রোবোটিক প্রযুক্তি অপারেশনকে করে তোলে আরও নিখুঁত ও ন্যূনতম আঘাতজনক, আর HIPEC ধ্বংস করে এমন মাইক্রোস্কোপিক ক্যানসার কোষ, যেগুলো খালি চোখে দেখা যায় না।
অপারেশনে অংশ নেন প্রফেসর হুমাইদ আল শামসি, ডা. আমিন এম. আব্যাদ, ডা. জোয়াকিন পিকাজো ইয়েস্টে, ডা. নেরমিন সাঈদ হাসসানিনসহ অভিজ্ঞ নার্সরা।
তাদের সমন্বিত দক্ষতার ফলেই রোগী মাত্র তিন দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান। এত বড় ক্যানসার সার্জারিতে এত দ্রুত সুস্থ হওয়া অত্যন্ত বিরল বলে মন্তব্য করেন চিকিৎসকেরা।
কঠিন চিকিৎসা প্রক্রিয়ার পরও রোগী আয়শা বলেন, ভাবিনি এত দ্রুত সুস্থ হব। মনে হচ্ছে নতুন জীবন পেয়েছি। তিনি অন্য রোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রারম্ভিক শনাক্তকরণ, চিকিৎসকদের প্রতি আস্থা ও আল্লাহর উপর বিশ্বাসই সুস্থতার পথ সহজ করে।
চিকিৎসকদের মতে, এই সফলতা সংযুক্ত আরব আমিরাতে আধুনিক ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন অধ্যায় খুলেছে। বিশেষ করে HIPEC পদ্ধতি পেরিটোনিয়ামে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর—যেমন কোলোরেক্টাল, ডিম্বাশয় ও কিছু সারকোমা রোগী।
ওআ/আপ্র/০৮/১২/২০২৫

























