নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে সাড়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও মাত্র সাড়ে নয় হাজার টনের জন্য এলসি খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে খাদ্য ভবনে আমন সংগ্রহ কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। এ সময় মূল বক্তব্য দেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, আমরা ১৩৪ জন ব্যবসায়ীকে চাল আমদানির অনুমতি প্রদান করেছি। এসব এলসির বিপরীতে প্রায় সব চাল দেশেও প্রবেশ করেছে। এসময় উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম চড়া। যে কারণে সরকারিভাবে চাল আনতেও মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে নেগোসিয়েশন করতে হচ্ছে। তাদেরকে চালের দাম কমানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চাল আমদানিতে জিরো শুল্কে নিয়ে আসা হয়। তবে আশার কথা হচ্ছে উত্তরাঞ্চলে ধানের বাম্বার ফলনের কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। উৎপাদন ভালো হলে আমরা হয়তো কিছুটা ভালো অবস্থানে থাকব। তবে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এই অবস্থায় কৃষক যাতে ফেয়ার প্রাইস পান সেজন্য আমরা ধানের সংগ্রহ মূল্য বাড়িয়েছি। আগামী রোববার থেকে কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা শুরু হবে উত্তরাঞ্চলে। তিনি বলেন, খাদ্য মজুদে আমরা খুব বেশি কমফোর্ট জোনে না থাকলেও মজুদ বাড়াতে দ্রুত আমন ধান ও চাল কেনা শুরু করছি। একইসঙ্গে আমদানিও দ্রুত করা হবে। বর্তমানে সরকারের কাছে ১২ লাখ ৮৮ হাজার টন খাদ্যের মজুদ রয়েছে। বর্তমান সময়ের চালের বাড়তি দাম ভোক্তাকে চাপে রাখলেও সরকারি ব্যবস্থাপনাগুলো এটা কমাতে কাজ করছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আমিও মধ্যবিত্ত, নিজেই বাজার করি। আমিও চাপে আছি। কারণ, গত বন্যায় অনেকে শীতকালীন সবজি মার খেয়েছে। সভায় জানানো হয়, গত ২৯ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন বিশ্ববাজারে চালের বাড়তি দামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এনবিআরের কাছে। এর বিপরীতে গত ৩১ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির ওপর থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এদিকে চাল আমদানির ওপর সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করলেও আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে বাজারে অস্বস্তি বাড়ছে। চালের চড়া দামে ভোক্তারাও দিশেহারা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৯ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন বিশ্ববাজারে চালের বাড়তি দামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহারের সুপারিশ করে এনবিআরের কাছে। এর বিপরীতে ৩১ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির ওপর সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়। এরপর খাদ্য মন্ত্রণালয় বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির জন্য ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ব্যবসায়ীরা অনুমতি নিলেও আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, আমন মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে নতুন ধান আসতে শুরু করলে চালের দাম কিছুটা কমতে পারে। যে কারণে ব্যবসায়ীরা এ মুহূর্তে চাল আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ফেনী ও নোয়াখালী অঞ্চলের বন্যাসহ একাধিক বন্যায় চালের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় প্রথমে বলেছিল উৎপাদন কমবে ১০ লাখ টন, পরে জানিয়েছে এটি হয়তো ৬-৭ লাখ টনের মতো হবে। এজন্য আমরা দ্রুত সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করি। বর্তমানে সরকারের কাছে ১২ লাখ ৮৮ হাজার টন খাদ্যের মজুত রয়েছে।