ঢাকা ০৬:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

চালের অভাব নেই, রমজানে দাম বাড়াবেন না: ব্যবসায়ীদের খাদ্যমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ১২:৫৬:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩
  • ৬০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে চালের কোনো অভাব নেই জানিয়ে রমজানে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেছেন, কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বাড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন রমজান মাসে চালের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে বাজারের সরবরাহ ও দাম মনিটরিং করে। শুধু রমজান মাসেই নয়, এ মনিটরিং সারাবছর চলে এবং চলবে। তিনি বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কেউ এদেশে ধান চালের ব্যবসা করতে পারবে না। এটা করতে হলে তার ফুড গ্রেইন লাইসেন্স থাকতে হবে। আড়তদারদেরও এ লাইসেন্স থাকতে হবে। এটা নিয়মিত মনিটরিং হচ্ছে। পনের দিন পর পর কতটুকু তিনি কিনেছেন, কতটুকু বিক্রি করেছেন তার রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, যখন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিটিং করা হয় তখন চালের দাম কমে। তারপর আবার বাড়ে। বাড়ার সময় পাঁচ টাকা বাড়লেও কমার সময় সেভাবে কমে না। ব্যবসায়ীরা এক টাকা কমিয়ে বলে চালের দাম কমেছে। চাল ব্যবসায়ীদের এ প্রবণতা ত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ হতে পারে, বিশ্ব ব্যাংকের এমন ঘোষণার পর অনেকেই অন্যায্যভাবে চালের দাম বাড়িয়েছেন, মজুত করেছেন। সেটা নিয়ন্ত্রণে ওএমএস বাজারে চাল ছাড়তে হয়েছে। সরকার আমদানি করেছিল বলে বিতরণ করতে পেরেছে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এক সময়ের মঙ্গা পীড়িত এলাকা এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত। অনেকেই প্রশ্ন করেন উদ্বৃত্ত হলে আমদানি করেন কেন? আমদানির পথ খোলা থাকলে অবৈধ মজুতকারিরা কারসাজি করতে পারে না। নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোধ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ধান-চালের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এমন লোকেরা অবৈধ মজুত গড়ে তোলে। তাদের অতি মুনাফা লাভের আশা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এ মুহূর্তে চাল আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। দেশে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। চাল ব্যবসায়ী কে এম লায়েক আলী বলেন, সরকারি ধান-চাল সংগ্রহকালে দাম নির্ধারণ করে দিলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। যৌক্তিক দাম নির্ধারণ না করায় সরকারি গুদামে লোকসান দিয়ে চাল দিতে হয়। বাবু বাজার পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের বাজার ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের ওপর নির্ভর করে। আমদানি চালু থাকলে বাজার ঠিক থাকে। ধানের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারলে চালের বাজারও স্থিতিশীল থাকবে। সরকার মিল মালিকদের কথা চিন্তা করে না দাবি করে বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ঢালাওভাবে চাল আমদানি বন্ধ করতে হবে। চাল আমদানির ফলে দেশে হাজার হাজার চালের মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বন্ধ মিল চালু করার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চালের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই, দাম স্থিতিশীল থাকবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন এনডিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরকার, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির নেতারা এবং পাইকারি ও খুচরা চাল ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য রাখেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চালের অভাব নেই, রমজানে দাম বাড়াবেন না: ব্যবসায়ীদের খাদ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় : ১২:৫৬:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে চালের কোনো অভাব নেই জানিয়ে রমজানে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম না বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেছেন, কেউ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চালের দাম বাড়ালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার খাদ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন রমজান মাসে চালের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার বিভিন্নভাবে বাজারের সরবরাহ ও দাম মনিটরিং করে। শুধু রমজান মাসেই নয়, এ মনিটরিং সারাবছর চলে এবং চলবে। তিনি বলেন, লাইসেন্স ছাড়া কেউ এদেশে ধান চালের ব্যবসা করতে পারবে না। এটা করতে হলে তার ফুড গ্রেইন লাইসেন্স থাকতে হবে। আড়তদারদেরও এ লাইসেন্স থাকতে হবে। এটা নিয়মিত মনিটরিং হচ্ছে। পনের দিন পর পর কতটুকু তিনি কিনেছেন, কতটুকু বিক্রি করেছেন তার রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, যখন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিটিং করা হয় তখন চালের দাম কমে। তারপর আবার বাড়ে। বাড়ার সময় পাঁচ টাকা বাড়লেও কমার সময় সেভাবে কমে না। ব্যবসায়ীরা এক টাকা কমিয়ে বলে চালের দাম কমেছে। চাল ব্যবসায়ীদের এ প্রবণতা ত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষ হতে পারে, বিশ্ব ব্যাংকের এমন ঘোষণার পর অনেকেই অন্যায্যভাবে চালের দাম বাড়িয়েছেন, মজুত করেছেন। সেটা নিয়ন্ত্রণে ওএমএস বাজারে চাল ছাড়তে হয়েছে। সরকার আমদানি করেছিল বলে বিতরণ করতে পেরেছে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কৃষিতে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এক সময়ের মঙ্গা পীড়িত এলাকা এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত। অনেকেই প্রশ্ন করেন উদ্বৃত্ত হলে আমদানি করেন কেন? আমদানির পথ খোলা থাকলে অবৈধ মজুতকারিরা কারসাজি করতে পারে না। নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোধ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ধান-চালের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এমন লোকেরা অবৈধ মজুত গড়ে তোলে। তাদের অতি মুনাফা লাভের আশা বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এ মুহূর্তে চাল আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। দেশে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয় তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। চাল ব্যবসায়ী কে এম লায়েক আলী বলেন, সরকারি ধান-চাল সংগ্রহকালে দাম নির্ধারণ করে দিলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। যৌক্তিক দাম নির্ধারণ না করায় সরকারি গুদামে লোকসান দিয়ে চাল দিতে হয়। বাবু বাজার পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের বাজার ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের ওপর নির্ভর করে। আমদানি চালু থাকলে বাজার ঠিক থাকে। ধানের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পারলে চালের বাজারও স্থিতিশীল থাকবে। সরকার মিল মালিকদের কথা চিন্তা করে না দাবি করে বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, ঢালাওভাবে চাল আমদানি বন্ধ করতে হবে। চাল আমদানির ফলে দেশে হাজার হাজার চালের মিল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বন্ধ মিল চালু করার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চালের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই, দাম স্থিতিশীল থাকবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসমাইল হোসেন এনডিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরকার, খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ অটো, মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির নেতারা এবং পাইকারি ও খুচরা চাল ব্যবসায়ী নেতারা বক্তব্য রাখেন।