প্রত্যাশা ডেস্ক: আড়াই বছর পর ওমান থেকে দেশে ফিরলেন প্রবাসী বাহার উদ্দিন। তাকে আনতে পরিবারে ১১ সদস্য মাইক্রোবাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাস খালে পড়ে পরিবারটির ৭ সদস্যই মারা যান।
এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা। স্বজনদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
বুধবার (৬ আগস্ট) ভোরে নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নের পূর্ব বাজার এলাকায় লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে খালে পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বেঁচে ফেরা প্রবাসী বাহার উদ্দিন, আব্দুর রহিম জানান, ঘুম চোখে নিয়ে মাইক্রোবাস চালাচ্ছিল চালক রাসেল। বার বার বলা সত্ত্বেও গাড়ি থামিয়ে সামান্যও বিশ্রাম নেননি তিনি। এর আগে কুমিল্লায় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে আসে। কিন্তু বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার আগেই ঘুমন্ত চালক গাড়িটি সড়কের পাশে খালে ফেলে দেয়। গাড়িটি ধীরে ধীরে ডুবছিল। তখন চালককে গাড়ির লক খুলতে বললেও খুলে দেয়নি। তবে সে নিজে গাড়ির কাঁচ নামিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যায়। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টাও করেনি।
একপর্যায়ে গাড়ি থেকে প্রবাসী বাহার, তার বাবা আব্দুর রহিম, শ্বশুর ইস্কান্দার মীর্জা, ভাবি সুইটি ও শ্যালক রিয়াজ বের হয়ে আসে। তবে বাঁচতে পারেনি বাহারের স্ত্রী কবিতা আক্তার (২৪), মেয়ে মীম আক্তার (২), মা মুরশিদা বেগম (৫০), নানী ফয়জুন নেছা (৭০), ভাতিজি রেশমা আক্তার (৯), লামিয়া আক্তার (৮) ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাবনী আক্তার (২৫)। নিহতরা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের চৌপল্লী এলাকার কাশারি বাড়ির বাসিন্দা।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোবারক হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চালক ঘুমিয়ে পড়ায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যায়। কয়েকজন বের হতে পারলেও সাতজন ভেতরে আটকা পড়ে মারা যান। তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো বাড়িতে নিয়ে গেছে স্বজনরা।
সুনামগঞ্জে বাসের চাপায় সিএনজি অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত: সুনামগঞ্জে সিএনজি অটোরিকশায় মিনিবাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিন জন নিহত হয়েছেন। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের বাহাদুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সিএনজি অটোরিকশাটি শান্তিগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জ আসছিল। বাসটি সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট যাচ্ছিল। ঘটনাস্থলে সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী আফসানা খুশি ও শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত স্নেহলতা চক্রবর্তীকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। আফসানা খুশি ও স্নেহলতা চক্রবর্তী শিক্ষার্থী। ঘটনার পরপর বাসচালক পালিয়ে যায়। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে দুজন ও হাসপাতালে একজনসহ তিন জন মারা যান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় দুই জন আহত হয়েছেন।’
ঢাকায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে তরুণীর মৃত্যু: রাজধানীর খিলক্ষেতে কাওলা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রবেশ মুখে বাসের ধাক্কায় রাইড শেয়ার মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা এক তরুণী নিহত হয়েছেন। তার বয়স আনুমানিক ২৮ বছর। বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা পৌনে ১১টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা যুবক সুমন বলেন, মোটরসাইকেলটিকে বাস ধাক্কা দিলে ওই তরুণী রাস্তায় ছিটকে পড়েন। ঘটনার পর মোটরসাইকেলের চালক তার বাইক নিয়ে পালিয়ে যান। আমি আহত তরুণীকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। এখানে নিয়ে আসার পর চিকিৎসকরা বলছেন তিনি মারা গেছেন। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, অজ্ঞাতনামা ওই নারীর মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।
এসি/এসকেএস/৬/৮/২৫