ঢাকা ০৯:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

চালকদের ফাঁদে ফেলে গাড়ি চুরি তাদের পেশা

  • আপডেট সময় : ০১:১৬:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মে ২০২১
  • ১১৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাড়িচালকদের নানা লোভের ফাঁদে ফেলে তারা গাড়ি চুরি করতো। এরপর চুরি করা পিকআপ কখনো বিক্রি করে, আবার কখনো মালিকের কাছে ফেরত দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিত মোটা অংকের টাকা। এমন একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার।
গতকাল সোমবার দুপুরে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নারয়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ঢাকার ডেমরা এলাকায় একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে মিনি ট্রাক বা পিকআপ চুরি করে আসছিল। এ চক্রের সদস্যরা এতোটাই চতুর যে, সহজে তাদেরকে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। তারা বিভিন্ন সময়ে গাড়ি চুরি করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকত যখন কোনো চালক তাদের গাড়ি রেখে হোটেলে খেতে যেত তখন তারা মাস্টার কি দিয়ে ইঞ্জিন স্টার্ট করে গাড়িটি নিয়ে সটকে পড়ত। তিনি বলেন, চক্রটি গাড়ি চালকদের চুরির জন্য মোটিভেশন করে, এরপর তাদের লোভনীয় অফার দেয়। চালকদের সঙ্গে মিশে চক্রটি পিকআপ ভ্যান চুরি করে।
গাড়ির গায়ে বা ডকুমেন্ট থেকে মালিকের মোবাইল নম্বর নিয়ে ফোনে যোগাযোগ করে বিকাশে টাকা দাবি করত। বিকাশে তাদেরকে টাকা পাঠালে গাড়ি ফেরত দিত। অনেক সময় টাকা নিয়ে গাড়ি ফেরত না দিয়ে পুনরায় গাড়ি ফেরত পাওয়ার জন্য আরো টাকা দাবি করত। পরবর্তীতে চক্রটি গাড়িগুলোকে তাদের নিজস্ব গ্যারেজে নিয়ে বিভিন্ন অংশ খুলে বা পরিবর্তন করে রেখে দিত। এতে মূল মালিক খোঁজাখুজি করেও তাদের গাড়িগুলিকে শনাক্ত করতে পারত না। অনেক সময় তারা চুরি করা গাড়ির পার্টস খুলে অন্যত্র বিক্রি করতো বলেও জানান তিনি।
এ রকম একটি অভিযোগ আসে সিআইডির সাইবার পুলিশের কাছে। এরপর সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে চোর চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তিতে ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, ডেমরা ও কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের চার সদস্য মো. সোহেল, মো. রুবেল, মনির হোসেন ও মো. আজিজুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে তিনটি পিকআপ উদ্ধার করে সিআইডি। চক্রটি করোনাকালে ১৫-২০টি গাড়ি চুরি করেছে। তাদের কাছ থেকে তিনটি চোরাই পিকআপ ভ্যান, ৯টি মোবাইল ফোন, ১৪টি মোবাইল সিম কার্ড, একটি মাস্টার চাবি, প্লাস, স্টিল রেঞ্জ, রেত, হেক্সো ব্লেড উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে চোরচক্রের সদস্যরা তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চালকদের ফাঁদে ফেলে গাড়ি চুরি তাদের পেশা

আপডেট সময় : ০১:১৬:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মে ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : গাড়িচালকদের নানা লোভের ফাঁদে ফেলে তারা গাড়ি চুরি করতো। এরপর চুরি করা পিকআপ কখনো বিক্রি করে, আবার কখনো মালিকের কাছে ফেরত দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিত মোটা অংকের টাকা। এমন একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার পুলিশ সেন্টার।
গতকাল সোমবার দুপুরে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশ সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নারয়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ঢাকার ডেমরা এলাকায় একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে মিনি ট্রাক বা পিকআপ চুরি করে আসছিল। এ চক্রের সদস্যরা এতোটাই চতুর যে, সহজে তাদেরকে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। তারা বিভিন্ন সময়ে গাড়ি চুরি করার জন্য ওঁৎ পেতে থাকত যখন কোনো চালক তাদের গাড়ি রেখে হোটেলে খেতে যেত তখন তারা মাস্টার কি দিয়ে ইঞ্জিন স্টার্ট করে গাড়িটি নিয়ে সটকে পড়ত। তিনি বলেন, চক্রটি গাড়ি চালকদের চুরির জন্য মোটিভেশন করে, এরপর তাদের লোভনীয় অফার দেয়। চালকদের সঙ্গে মিশে চক্রটি পিকআপ ভ্যান চুরি করে।
গাড়ির গায়ে বা ডকুমেন্ট থেকে মালিকের মোবাইল নম্বর নিয়ে ফোনে যোগাযোগ করে বিকাশে টাকা দাবি করত। বিকাশে তাদেরকে টাকা পাঠালে গাড়ি ফেরত দিত। অনেক সময় টাকা নিয়ে গাড়ি ফেরত না দিয়ে পুনরায় গাড়ি ফেরত পাওয়ার জন্য আরো টাকা দাবি করত। পরবর্তীতে চক্রটি গাড়িগুলোকে তাদের নিজস্ব গ্যারেজে নিয়ে বিভিন্ন অংশ খুলে বা পরিবর্তন করে রেখে দিত। এতে মূল মালিক খোঁজাখুজি করেও তাদের গাড়িগুলিকে শনাক্ত করতে পারত না। অনেক সময় তারা চুরি করা গাড়ির পার্টস খুলে অন্যত্র বিক্রি করতো বলেও জানান তিনি।
এ রকম একটি অভিযোগ আসে সিআইডির সাইবার পুলিশের কাছে। এরপর সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে চোর চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। পরবর্তিতে ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ, ডেমরা ও কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের চার সদস্য মো. সোহেল, মো. রুবেল, মনির হোসেন ও মো. আজিজুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে তিনটি পিকআপ উদ্ধার করে সিআইডি। চক্রটি করোনাকালে ১৫-২০টি গাড়ি চুরি করেছে। তাদের কাছ থেকে তিনটি চোরাই পিকআপ ভ্যান, ৯টি মোবাইল ফোন, ১৪টি মোবাইল সিম কার্ড, একটি মাস্টার চাবি, প্লাস, স্টিল রেঞ্জ, রেত, হেক্সো ব্লেড উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে চোরচক্রের সদস্যরা তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এই চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।