প্রত্যাশা ডেস্ক : যেদিকে চোখ যায়, শুধুই পানি। অথচ পানের জন্য নেই এক ফোঁটা। সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের উপকূলজুড়ে নলকূপের পানি লোনা হয়ে গেছে। খাবার পানির ভরসা ছিল পুকুর। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারে পুকুর তলিয়ে যাওয়ায় সেটাও এখন পানের উপযুক্ত নয়। বিভিন্ন সংস্থা খাদ্য সহায়তা দিলেও পানির সংকট তীব্র। ফিটকিরি দিয়ে পানি বিশুদ্ধ হলে লবণাক্ততা যাচ্ছে না। দ্রুত খাবার পানির ব্যবস্থা না হলে দূষিত ও লোনা পানি পান করে অসুস্থ হতে পারে শয়ে শয়ে মানুষ।
জানা গেছে, বাগেরহাটের মোংলার প্রায় সাড়ে ৮শ’ পরিবার ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসে পানিবন্দি। গত বুধবার (২৬ মে) প্লাবিত হয়েছে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাসহ সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম। একইভাবে জেলার শরণখোলা রামপালসহ বিভিন্ন এলাকায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রবল জোয়ারে সাতক্ষীরায় শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের জেলেখালি ও নাপিতখালিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর এলাকায় পাকা সড়ক উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। ভেঙে গেছে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোড়ের বেড়িবাঁধ। কালীগঞ্জের কাকশিয়ালি নদীর পূর্ব নারানপুর গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কালীগঞ্জ হাসপাতালসহ পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভাঙনের ফলে কপোতাক্ষের পানি পাশের গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়েছে। এ ছাড়া আশাশুনির প্রতাপনগরের কুড়িকাহনিয়া লঞ্চঘাট ভেঙে পানিতে সয়লাব হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। সুন্দরবন লাগোয়া উপজেলা শ্যামনগর ও আশাশুনির উপকূলীয় বেড়িবাঁধগুলো উপচে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকেছে।
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, স্বাভাবিক সময়েই উপকূলের মানুষজন খাবার পানির সংকটে থাকেন। অনেককেই বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে হয়। এসব এলাকার মানুষজনের ভরসা পুকুরের পানি। কিন্তু জোয়ারে পুকুরের পানিও লবণাক্ত হয়ে গেছে। দুর্গম এলাকা থেকে অনেকেই পানির জন্য অন্যত্র যেতে পারছেন না। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, সরকারি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ চলমান আছে। এক লক্ষ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। আরও করা হবে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। বাগেহাটের বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক রাসেল আহমেদ বলেন, সরকারি-বেসরকারিভাবে শুকনা খাবার বিতরণ হচ্ছে। কিন্তু খাবার পানি কেউ দিচ্ছে না। লোনা পানি দিয়ে রান্নার কাজও করা যায় না। বাগেরহাট শরণখোলা উপজেলার চেয়ারম্যান রায়হান উদ্দিন শান্ত বলেন, এমনিতেই আমাদের এলাকায় তীব্র খাবার পানির সংকট। জোয়ারে পানি আসায় সংকট আরও বেড়েছে। এ কারণে আগে থেকেই এলাকায় ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ অনেক বেশি।
চারদিকেই থৈ থৈ পানি, তবু পিপাসায় কাতর সবাই
ট্যাগস :
চারদিকেই থৈ থৈ পানি
জনপ্রিয় সংবাদ