ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক: পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার হ্রাস ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘ওখঊঞ’ং ৎবংবধৎপয ধহফ ফবাবষড়ঢ়সবহঃ (জ ্ উ) রহহড়াধঃরড়হং ভড়ৎ ঃযব ষবধঃযবৎ ঃধহহরহম ঢ়ৎড়পবংং ধহফ ংড়ষরফ ধিংঃব সধহধমবসবহঃ’ শীর্ষক দিনব্যাপী এক সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট ও দি এশিয়া ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের একদল গবেষক পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের এক নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। এ প্রযুক্তিতে রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমিয়ে স্বল্প খরচে উদ্ভাবিত এনজাইম ব্যবহার করে প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে অধিকতর গুণগতমান সম্পন্ন ফিনিশড লেদার উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া উদ্ভাবিত এ এনজাইম ব্যবহার করে আনট্যানড কঠিন বর্জ্য থেকে কম খরচে পরিবেশবান্ধব উপায়ে বায়োডিজেল ও জৈব সার প্রস্তুত করা যায়, যা দেশের নবায়নযোগ্য শক্তির অন্যতম উৎস হতে পারে। উপাচার্য এ উদ্ভাবনের বাণিজ্যিকীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাগুলো দূর করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এ উদ্ভাবন ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। গবেষণায় অর্থায়ন করার জন্য উপাচার্য শিল্প মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান। সেমিনারে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. নুরুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেনার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দি এশিয়া ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ স্বাগত বক্তব্য দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত পদ্ধতিটি ইতোমধ্যে প্রগতি ট্যানারিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কেলেও সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে পেটেন্ট অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ, ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার হ্রাস ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ফলে বাংলাদেশের ট্যানারিগুলো আন্তর্জাতিক পরিবেশগত কমপ্লায়েন্স সনদ লাভে সক্ষম হবে এবং দেশের চামড়া শিল্প খাত থেকে রপ্তানি আয় বাড়বে।