নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি অর্থবছরে ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ শতাংশ। সেই সঙ্গে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতিও কমেছে এবং গত সরকারের আমলে নেওয়া ঋণ পরিশোধের চাপও বেড়েছে। গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত মাসিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ইআরডির তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারি শেষে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর ঋণ প্রতিশ্রুতি এসেছে ২৩৫ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের। আগের বছরের একই সময়ে এসেছিল ৭২০ কোটি ডলারের বেশি। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ঋণ প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। ১৫ বছরের দীর্ঘ শাসন শেষে আওয়ামী লীগ সরকারের করা প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াতে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি মিলে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ রয়েছে।
চলতি অর্থবছরের আট মাসে দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি অর্থের অন্যতম উৎস উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণে ভাটা পড়েছে। ঋণ প্রতিশ্রুতিও কমিয়ে দিয়েছে সংস্থাগুলো। তবে এ আট মাসে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি এসেছে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ কর্মসূচি থেকে। বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৯৪ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতি এসেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে। এ অর্থবছর এডিবির ঋণ প্রতিশ্রুতি ৭০ কোটি ডলারের। ঋণ প্রতিশ্রুতি কমার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে বিদেশি মুদ্রা আসার অন্যতম উৎস প্রকল্পে অর্থছাড়ও কমেছে। ফেব্রুয়ারি শেষে অর্থছাড় হয়েছে ৪১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে উন্নয়ন সহযোগীরা বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থছাড় করেছিল ৪৯৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। বছরের ব্যবধানে এ অর্থছাড়ের হার কমেছে ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। ইআরডি জানায়, বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীরা আগে যেসব ঋণ দিয়েছিল, সেসব ঋণ পরিশোধের চাপ এখন প্রতিমাসেই বাড়ছে। ফেব্রুয়ারি শেষে এ অর্থবছরের আট মাসে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ২৬৩ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ৩১ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। আগের বছর একই সময় বাংলাদেশ পরিশোধ করেছিল ২০৩ কোটি ডলার।
দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ২২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। সংস্থাটি আরও জানায়, চলতি অর্থবছর বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। আমেরিকা ও জাপানের কাছ থেকে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়া বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার ও এডিবির কাছ থেকে ১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। এছাড়া চলতি অর্থবছর উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য পাইপলাইনে রয়েছে ৯ বিলিয়ন ডলারের ঋণ। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে এডিবির ২৭৫ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। বিশ্বব্যাংকের রয়েছে ২০৮ কোটি ডলার এবং আমেরিকা ও জাপানের যৌথভাবে রয়েছে ২০৪ কোটি ডলারের বেশি।