ঢাকা ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চাকরির নামে প্রতারণার ফাঁদ, কোটিপতি প্রতারক

  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১
  • ১২৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ লোকমান হোসেন। পড়াশোনা এসএসসি পর্যন্ত। থাকেন গাজীপুর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেন রাজধানীর মিরপুর-১ এর আমানত আউটসোর্সিং জব সার্ভিস অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স কোম্পানির অফিসে।
পড়াশোনা আর নিজের সক্ষমতায় পিছিয়ে থাকলেও এখানে আসার পর স্বপ্নটা বড় হয়ে যায় তার। এই অফিস থেকে তাকে সহজেই সরকারি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু চাকরি পেতে হলে তাকে কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে। প্রথমে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিজের নাম এন্ট্রি করতে হবে। এরপর অফিস থেকে ফোন করে লোকমানকে জানানো হয়, তার জন্য চাকরি রেডি। কিন্তু চাকরি পেতে হলে তাকে ৩ লাখ টাকা জমা দিতে হবে।
এরপর শুরু হয় লোকমানের স্বপ্ন ছোঁয়ার পালা। ৩ লাখ টাকা দেয়া তার সামর্থ্যের বাইরে। তবুও টাকা সংগ্রহে নামেন লোকমান। স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ৩ লাখ টাকা তুলে দেন প্রতারক চক্রের প্রধান জহিরুল ইসলামের হাতে। তারপরেই শুরু হয় দুর্ভোগ। চাকরির খোঁজে বারবার তিনি ওই অফিসে যান। কিন্তু চাকরি আর জহিরুল কারোরই দেখা পান না তরুণ লোকমান। ৪ মাস ঘোরার পরে লোকমান বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন। এরপরই মামলা করেন কাফরুল থানায়।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমানত আউটসোর্সিং জব সার্ভিস অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স কোম্পানির অফিসে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, প্রতারক চক্রের প্রধান ও আমানত আউটসোর্সিং জব সার্ভিস অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স কোম্পানির এমডি জহিরুল ইসলান, রিলেশনশিপ অফিসার সজিব ও এমডি জহিরুলের একান্ত সহকারী রাকিবুল বারী।
এদেরকে গ্রেপ্তারের পর লোকমানের মতো আরো কয়েকজন তরুণের দেখা মেলে। যাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছর। তাদের সবাই মিরপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তারা প্রতারক জহিরুলের অফিসে চাকরির খোঁজে এসে প্রতারিত হয়েছে। ৪ হাজার থেকে ৩ লাখ পর্যন্ত টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ে, ব্যাংক, বিমান, কাস্টমস, পদ্মা সেতু, জাহাজ কোম্পানিসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকারির প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। শেখ ওমর ফারুক আরো বলেন, এ চক্রটি ১০নং শাহ আলী প্লাজার ৯ম তলায় চাকচিক্যময় অফিস সাজিয়ে চাকরির নামে প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে চাকরি প্রার্থীদের ছবিসহ বিভিন্ন কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চাকরির নামে প্রতারণার ফাঁদ, কোটিপতি প্রতারক

আপডেট সময় : ০১:৪৪:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : মোহাম্মদ লোকমান হোসেন। পড়াশোনা এসএসসি পর্যন্ত। থাকেন গাজীপুর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেন রাজধানীর মিরপুর-১ এর আমানত আউটসোর্সিং জব সার্ভিস অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স কোম্পানির অফিসে।
পড়াশোনা আর নিজের সক্ষমতায় পিছিয়ে থাকলেও এখানে আসার পর স্বপ্নটা বড় হয়ে যায় তার। এই অফিস থেকে তাকে সহজেই সরকারি অফিসে অফিস সহকারী পদে চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু চাকরি পেতে হলে তাকে কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে। প্রথমে ১ হাজার টাকা দিয়ে নিজের নাম এন্ট্রি করতে হবে। এরপর অফিস থেকে ফোন করে লোকমানকে জানানো হয়, তার জন্য চাকরি রেডি। কিন্তু চাকরি পেতে হলে তাকে ৩ লাখ টাকা জমা দিতে হবে।
এরপর শুরু হয় লোকমানের স্বপ্ন ছোঁয়ার পালা। ৩ লাখ টাকা দেয়া তার সামর্থ্যের বাইরে। তবুও টাকা সংগ্রহে নামেন লোকমান। স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করে ৩ লাখ টাকা তুলে দেন প্রতারক চক্রের প্রধান জহিরুল ইসলামের হাতে। তারপরেই শুরু হয় দুর্ভোগ। চাকরির খোঁজে বারবার তিনি ওই অফিসে যান। কিন্তু চাকরি আর জহিরুল কারোরই দেখা পান না তরুণ লোকমান। ৪ মাস ঘোরার পরে লোকমান বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন। এরপরই মামলা করেন কাফরুল থানায়।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমানত আউটসোর্সিং জব সার্ভিস অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স কোম্পানির অফিসে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, প্রতারক চক্রের প্রধান ও আমানত আউটসোর্সিং জব সার্ভিস অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স কোম্পানির এমডি জহিরুল ইসলান, রিলেশনশিপ অফিসার সজিব ও এমডি জহিরুলের একান্ত সহকারী রাকিবুল বারী।
এদেরকে গ্রেপ্তারের পর লোকমানের মতো আরো কয়েকজন তরুণের দেখা মেলে। যাদের সবার বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছর। তাদের সবাই মিরপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তারা প্রতারক জহিরুলের অফিসে চাকরির খোঁজে এসে প্রতারিত হয়েছে। ৪ হাজার থেকে ৩ লাখ পর্যন্ত টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। তিনি বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রেলওয়ে, ব্যাংক, বিমান, কাস্টমস, পদ্মা সেতু, জাহাজ কোম্পানিসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকারির প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। শেখ ওমর ফারুক আরো বলেন, এ চক্রটি ১০নং শাহ আলী প্লাজার ৯ম তলায় চাকচিক্যময় অফিস সাজিয়ে চাকরির নামে প্রতারণা করে আসছিল। গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে চাকরি প্রার্থীদের ছবিসহ বিভিন্ন কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।