দেশে কর্মসংস্থানের তুলনায় প্রার্থীর সংখ্যা বহুগুণ বেশি। প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ-ি পেরিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকায় যুক্ত হন লাখ লাখ তরুণ। ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায়। যেসব প্রার্থীর বয়স ৩০-এর কাছাকাছি, কিন্তু এখনো চাকরি হয়নি, তাঁদের কী করণীয়?
নিজের দুর্বলতা বের করুন
সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে নিতে আবেদনের বয়স প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এখনো কোনো সরকারি চাকরি পাননি। সরকারি চাকরি করবেন বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আছেন, সে জন্য অন্য কোনো বেসরকারি চাকরির জন্য চেষ্টা করেননি। তাঁদের জন্য প্রথম কাজ হবে নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করা। কী কী কারণে আপনি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারছেন না, সেগুলো খুঁজে বের করুন। দুর্বল বিষয়গুলোতে সবল হওয়ার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া আপনার পড়াশোনার কৌশল পরিবর্তন করুন। শুধু পড়াশোনা নয়, জীবনযাপনের ব্যাপারেও পরিবর্তন আনুন। যদি একই কৌশলে এখনো চেষ্টা করেন, তাহলে আগের মতোই ব্যর্থ হবেন। এটাই স্বাভাবিক। চাকরিতে আবেদনের বয়স শেষ হয়েছে এমন সময়েও অনেকেই বিসিএস পুলিশ ক্যাডার, প্রশাসন ক্যাডার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক, অন্যান্য ব্যাংকের অফিসার হয়েছেন। এমন অসংখ্য উদাহরণ আছে। কালের কণ্ঠ পত্রিকায়ও তাঁদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে ফিচার করা হয়েছে। যাঁরা নিয়মিত কালের কণ্ঠ পত্রিকার ‘চাকরি আছে’ পাতা পড়েন, তাঁরা সেসব গল্প নিশ্চয়ই পড়েছেন। তাই হতাশ না হয়ে বরং সর্বোচ্চ পরিশ্রম দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান।
অন্য চাকরির কথাও মাথায় রাখুন
কেউ কেউ আছেন, শুধু প্রথম শ্রেণির চাকরি (বিসিএস) বা নবম গ্রেডের চাকরির পরীক্ষা ছাড়া অন্য কোনো চাকরির জন্য চেষ্টা করেন না। কিন্তু এগুলোতে বারবার চেষ্টা করেও পাস করতে পারছেন না। এমন প্রার্থীরা ধরে নিতে পারেন—আপনি হয়তো প্রথম শ্রেণির চাকরি পাওয়ার মতো প্রস্তুতি নিতে পারেননি! প্রথম শ্রেণির চাকরি পাওয়ার মতো প্রস্তুতি হয়নি মানে এটা নয় যে আপনি দ্বিতীয় শ্রেণি, তৃতীয় শ্রেণির চাকরি পাবেন না। চেষ্টা করলে হয়তো আপনার দ্বিতীয় শ্রেণি, তৃতীয় শ্রেণির চাকরি হয়ে যেতে পারে। সুতরাং আপনার উচিত হবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির চাকরির পরীক্ষাগুলোতেও গুরুত্বের সঙ্গে অংশ নেওয়া।
বিকল্প নিয়ে ভাবুন
অনেকের স্বপ্ন থাকে সরকারি প্রথম শ্রেণির একজন চাকরিজীবী হওয়ার, কিন্তু শুধু স্বপ্ন থাকলেই তো হবে না। তার সঙ্গে থাকতে হবে ভালো প্রস্তুতি, যোগ্যতা আর ভাগ্য। দেখা গেছে, অনেকের তুলনামূলক ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও ভাগ্যের জন্য কোনো সরকারি চাকরি হয়নি। তখন হতাশা এসে ঘিরে ধরে। আশপাশের মানুষজনও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। তাই বয়স ৩০ বছর পেরোনোর আগেই সরকারি চাকরির চেষ্টার পাশাপাশি বিকল্প পরিকল্পনার কথাও মাথায় রাখুন। এটা হতে পারে বেসরকারি কোনো চাকরি, উদ্যোগ বা ব্যবসা।