নারী ও শিশু ডেস্ক: বর্তমান যুগে নারীরা পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে চলছে। কর্মক্ষেত্রসহ সর্বত্রই ছুটে চলেছেন তারা। ঘরে পুরুষের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয় নারীকে। যেসব নারী চাকরি করেন তারা ঘর ও বাইরে দুই দায়িত্বই সামলান। প্রত্যেক নারী চান একটু ভালোভাবে দিনটি কাটানোর। কিন্তু অনেক সময় কর্মক্ষেত্রে তাদের ঘুম ঘুম লাগে। তখন কাজ করতে সমস্যা হয়। তবে কর্মশক্তি অটুট রেখে তারা কর্মচঞ্চল থাকতে পারেন খুব সহজেই। এর কারণ হলোÑ
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি: আমরা যখনই সুস্থতা বা সৌন্দর্যের কোনো টিপস দিই, সব সময়ই সবকিছুর আগে যে কথাটি বলি তা হচ্ছে পানি। পানির গুরুত্ব আমাদের জীবনে নতুন করে আর কি বলার আছে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের কথা তো সব সময়ই শুনে আসছি। এই পানির সঙ্গে একটি লেবুর রস মিলিয়ে পান করুন। শরীরের আদ্রতা ঠিক থাকবে আর দেখবেন বাড়তি মেদের জন্য আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না।
নিজেকে ফিট রাখা: কি করতে আপনার ভালো লাগে হাঁটতে, দৌড়াতে না সাঁতার কাটতে বা ইয়োগা? এর যে কোনো একটি করুন মাত্র আধা ঘণ্টা। তাহলে শরীর থাকবে একদম ঝরঝরে।
মনের দুয়ার: অনেক সময় আমরা একটি লক্ষ্য স্থির করি এবং নিশ্চিত থাকি, এর বাইরে আর কিছুই নেই। আমাদের সব সিদ্ধান্ত যে সঠিক, এটা ভেবে রাখাটা সব সময় সঠিক নাও হতে পারে। প্রয়োজন এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চাহিদার পরিবর্তন হয়। আর কোনো কারণে লক্ষ্য অর্জন না হলে জীবনে যেন সব শেষ এই ধারণা থেকেও বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে। এ জন্যই প্রয়োজন মনের দুয়ার খোলা রেখে চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে আপডেট থাকা। সহনশীল ও নমনীয় মনোভাব রেখে কর্মপরিকল্পনা নিলে সফলতা আসার সম্ভবনা থাকে অনেক বেশি।
ক্লান্তি তাড়াতে ছুটি: ব্যস্ততার মাঝে আপনি যখন ক্লান্তি বোধ করেন, তখন কী করেন আসলে নিজের ভালো লাগা আর ভালো থাকার জন্য আমাদের হাতে সময় কোথায়, এটাই তো ভাবছেন? দিনের কিছতা সময় কাজ থেকে ছুটি নিন। পছন্দের একটি গান শুনুন, পারলে খোলা অকাশের নিচে একটু ঘুরে আসুন, সবুজ ঘাসে খালি পায়ে হাঁটতে পারেন। এগুলো আমাদের নতুন করে কর্মশক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করবে।
পদ-পদবিতে অহঙ্কার: ভুলে যান নিজের বয়স আর পদ-পদবির পজিশন। এসব দেয়াল ডিঙাতে পারলেই ভালো থাকতে পারব। কিছুক্ষণের জন্য হয়ে যান ছোট্ট শিশু, চলুক না একটু খুনসুটি, দুষ্টুমি আর ছবি আঁকা বা গেমস খেলা, গলা ছেড়ে গান গাওয়া, মন্দ কী!
সময়মতো খাওয়া-দাওয়া: সময়ে খাবার খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও সুস্থ থাকা যায় ঘড়ি ধরে খাওয়া-দাওয়া করলে। কাজের চাপ কম থাকলে কোনো দিন তাড়াতাড়ি খাওয়া হয়ে যায়। আবার ব্যস্ততা থাকলে বিকেল গড়িয়ে যায়। টানা এই অনিয়ম শরীরের ওপর নানা প্রভাব ফেলে। তাই দুপুরের খাবার নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া জরুরি। এছাড়া প্রতিদিনের খাবারে শর্করার ভারসাম্য ঠিক রাখা। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শাকসবজি নিয়মিত খাওয়া, ভিটামিন ‘সি‘ সমৃদ্ধ একটি ফল এবং কয়েকটি বাদাম খেলে আমরা যেমন মানসিক চাপ কমাতে পারি তেমনি কর্মশক্তিও বাড়ানো সম্ভব।
পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো এবং সকালে ওঠার অভ্যেস করুন। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের সুস্থ থেকে কাজ করার শক্তি জোগায়।
কর্মক্ষেত্র ও পরিবার: একজন ভালো কর্মী কখনোই শুধু অফিস নিয়েই ব্যস্ত থাকে না। পরিবারে আপনজনের সান্নিধ্যেই আমরা পরবর্তী কাজের অনুপ্রেরণা পাই। আমরা পরিশ্রম করি নিজের ও আপনজনের আরও ভালো থাকার জন্য। কিন্তু অফিসের কাজের অজুহাতে যদি পারিবারিক এবং সামাজিক কাজ আর অনুষ্ঠানগুলো এড়িয়ে যাই, তবে একসময় আমরাই একা হয়ে যাব। কাজ তো করতেই হবে। একই সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সময় কাটাতে হবে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা: মন শান্ত করতে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে নিয়মিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অভ্যাস করুন। দিনে ১০ মিনিট প্রাণায়ম করলে ফল পাবেনই। প্রথম পা মুড়ে বসুন, এরপর শান্তভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিন ও ছাড়ুন। এভাবে প্রতিদিন ১০ মিনিট অভ্যাস করুন।
এ বিষয়গুলো মাত্র দুই সপ্তাহ করতে পারণে ঘরে-বাইরে সুখী ও কর্মক্ষম থাকা সহজ হবে।