নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজির মামলায় রিমান্ড শেষে সাবেক সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ চার আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিবুজ্জামান তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন-আবু সুফিয়ান, আব্দুর রহমান ওরফে মানিক এবং হাবিবুর রহমান ফরহাদ।
প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই নাজমুল ইসলাম চার আসামিকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির সময় গত রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে পাঁচজনকে আটক করে সেনাবাহিনী। ক্লিনিকের মালিক আফরুজা শিল্পী বাদী হয়ে সোমবার সকালে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। পরে তাদের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই নাজমুল ইসলাম। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে মঙ্গলবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। মঙ্গলবার চার আসামির দুই দিন করে রিমান্ডের আদেশ আসে। শাহিন হোসেন নামে এক আসামিকে প্রয়োজন বোধে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
মামলায় বলা হয়, ২০ সেপ্টেম্বর রাতে শাহিন সন্তান প্রসব করাতে তার স্ত্রীকে ‘সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ নিয়ে আসেন। নবজাতকের ‘অবস্থা খারাপ’ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে শাহিন অনুরোধ করে বলেন, যেভাবে হোক তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করতে। পরে তার স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করেন।
মামলায় বলা হয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি শাহিনকে অবগত করেন। তিনি অর্থ দিতে চাইলেও মানবিক দিক বিবেচনা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো অর্থ না নিয়েই ছাড়পত্র দিয়ে দেয়।
বাদীর অভিযোগ, ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে আসামিরা হাসপাতালে এসে বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনায় মামলা না করার বিনিময়ে তিন লাখ টাকা চাঁদ দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে আসামিরা হাসপাতাল থেকে একজনকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। তখন এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিলে তারা চলে যায় এবং বাকি টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে বলে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে আসামিরা মোবাইলে ফোন করে বাকি টাকা দাবি করতে থাকে এবং নানা ধরনের হুমকি দেয়।
মামলায় বলা হয়, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আসামিরা তাদের ফোন করে হাজারীবাগের পশ্চিম ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডে ডেকে নিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা নেয় এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আফরুজা শিল্পী বিষয়টি মৌখিকভাবে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে জানালে তারা গিয়ে আসামিদের আটক করে। এর আগে গত মে মাসে হাক্কানি পাবলিশার্সের মালিকের বাসায় মধ্যরাতে ঢোকার চেষ্টা করে আটক হয়েছিলেন রাব্বিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতা। পরে মুচলেকা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা আবদুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ