নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বহিষ্কৃত নেতা আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদের বাসা থেকে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার চারটি চেক জব্দ করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার তালেবুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রিমান্ডে থাকা আসামিদের মধ্যে রিয়াদের কলাবাগানের বাসা থেকে সোয়া ২ কোটি টাকার চারটি চেক উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, এই চারটি চেকের মধ্যে ১ কোটি টাকা করে দুইটি, একটি ১০ লাখ এবং একটি ১৫ লাখ টাকার। চেকে কারো নাম ও তারিখ নেই।
‘ট্রেড জোন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই চার চেকের স্বাক্ষর দাতা বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তবে এই ঘটনা তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, রিয়াদের বাসায় চেক ছাড়াও কয়েক লাখ টাকার এফডিআরের খোঁজ মিলেছে। এগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। চেক জব্দের ঘটনায় কলাবাগান থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান পুলিশ কর্মকর্তা তালেবুর রহমান।
২৬ জুলাই ঢাকার গুলশানে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদসহ পাঁচজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। অপর চারজনের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব ছাড়াও ছিল এক শিশু। এ ঘটনার পর রিয়াদসহ চারজনকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। চাঁদাবাজির অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেন শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর গুলশান থানায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেন। গ্রেফতারদের বাইরে এক আসামি হলেন কাজী গৌরব অপু, যিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। ২৭ জুলাই রিয়াদসহ চারজনের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় আসামি বৈষম্যবিরোধী নেতা রিয়াদ ও অপু গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে সাবেক এমপি শাম্মী আহম্মেদের বাসায় যান। তখন তারা হুমকি ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ আখ্যায়িত করে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি দেন এবং টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকেন তারা।
এক পর্যায়ে সিদ্দিক আবু জাফর বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ ৫ লাখ টাকা ও ভাইয়ের কাছে থেকে নিয়ে আরো ৫ লাখ টাকা দেন। এর পর ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু বাদীর বাসায় প্রবেশ করে তার ফ্ল্যাটের দরজায় স্বজোরে ধাক্কা মারেন। বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে অবহিত করলে আসামিরা চলে যায়। ২৬ জুলাই বিকাল সাড়ে ৫টায় আবার রিয়াদের নেতৃত্বে অন্য আসামিরা বাদীর বাসার সামনে এসে তাকে খুঁজতে থাকেন। বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে বিষয়টি জানান। তখন আসামিদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা না দিলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দিবেন বলে হুমকি দিতে থাকেন। পরবর্তীতে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তাৎক্ষণিক গুলশান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে হাতেনাতে আটক করে।