ঢাকা ০১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

চল্লিশের পরে খাদ্যাভ্যাস যেমন হওয়া উচিত

  • আপডেট সময় : ১০:০৯:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: যে কোনো বয়সেই সুষম খাবার খাওয়া ও জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা জরুরি। আর বয়স চল্লিশের পর এসব দিকে বেশি নজর দিতে হয়। হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘রুবি হল ক্লিনিক’য়ের পুষ্টিবিদ ও প্রধান খাদ্যপরিকল্পক ডা. কমল পলিয়া বলেন, “বয়স বাড়ার সাথে সাথে সুস্থ জীবনযাত্রা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।” তবে অলস জীবন সেই সাথে ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত খাবার গ্রহণের শরীর হয় অসুস্থ। এছাড়া অপর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ, খাবার ও ওষুধে অনিয়ম, অতিভোজন ইত্যাদি বাজে অভ্যাস রপ্ত হয়ে যায় বয়স বাড়তে বাড়তে। ডা. পলিয়া বলেন, “এসবের ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও ‘ডিস্লিপিডেমিয়া’ বা ভালো ও খারাপ কোলেস্টরলের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।” এই পুষ্টিবিদ চল্লিশের পরে সুস্থ থাকতে প্রয়োজনীয় কয়েকটি অভ্যাস ও খাদ্যের পুষ্টিমানের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
পুষ্টিকর খাবার
ডা. পলিয়া বলেন, “অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও পরিশোধিত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।” কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি গ্রহণের মাত্রা কমানো, পরিবর্তে আঁশ ও প্রোটিন ধরনের খাবার বাড়ানোর দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। রঙিন ফল, সবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি খাবার তালিকায় যুক্ত করতে হবে। এতে সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়।
দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা
দেহঘড়ি ও বিপাক ক্রিয়া সচল রাখতে নিয়ম করে খাবার খাওয়া উচিত। সারাদিনে তিনবেলা সুষম খাবার খাওয়া ও নিয়মিত বিরতিতে স্বাস্থ্যকর নাস্তা গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একবেলা খাবার বিরতি বা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পরামর্শ দেন, ডা. পলিয়া। এরফলে অতিভোজনের ঝুঁকি কমে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া
এই পুষ্টিবিদ ব্যাখ্যা করেন, “প্রক্রিয়াজাত ও মোড়কজাত খাবারে বাড়তি চিনি, অস্বাস্থ্যকর চর্বি ও সোডিয়াম যুক্ত থাকে। আর পুষ্টিমানও সামান্য। যতটা সম্ভব এসব খাবার কম খাওয়া উচিত।” অপ্রক্রিয়াজত খাবারে প্রাকৃতিকভাবেই চিনি কম ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ বেশি থাকে।
পরিমিত খাওয়া
বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেহেতু বিপাক হার কমে তাই পরিমিত খাবার গ্রহণ করা উচিত। ছোট প্লেট ও বাটিতে খাবার খাওয়া চোখে বিভ্রম সৃষ্টির মাধ্যমে পরিমিত খাবার গ্রহণে সহায়তা করে। খাবার গ্রহণ করতে হবে দেহের চাহিদা অনুযায়ী। ক্ষুধা ও তৃপ্তি মেটা পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত, এর বেশি নয়।
আর্দ্র থাকা
হজমক্রিয়া, দেহের তাপমাত্রা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভারসসাম্য বজায় রাখার জন্য সঠিক আর্দ্রতা রক্ষা করা প্রয়োজন। সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান না করার পাশাপাশি মিষ্টিজাতীয় পানীয় সোডা ও অতিরিক্ত ক্যাফেইন পান করার ফলে দেহে পানিশূন্যতার সমস্যা বাড়ায়, যা স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব রাখে।
নিয়মিত শরীরচর্চা করা
নিয়মিত শরীরচর্চা ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদস্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে সুস্থ রাখে। সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট হালকা মাত্রায় শরীরচর্চা করা উচিত। অ্যারোবিক ব্যায়াম (দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা) ও শক্তি বর্ধক প্রশিক্ষণ এক্ষেত্রে উপকারী। সুস্থ থাকতে প্রয়োজনে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা ব্যাক্তিগত প্রশিক্ষকের পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা
দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ স্বাস্থ্য বিশেষ করে বয়স চল্লিশের পরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান, গভীর শ্বাস অনুশীলন, যোগাসন বা মানসিক প্রশান্তি দেয় এমন কাজে ব্যস্ত থাকা উপকারী। নিজের মানসিক যতেœ স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করা ও মানসিক পরিচর্যা করা জরুরি। সুষম খাদ্যাভ্যাস ও ইতিবাচক জীবনযাত্রা চল্লিশ পেরুলেও সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দ্রুত ইতিবাচক পরিবর্তন আনা দরকার জরুরি।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চল্লিশের পরে খাদ্যাভ্যাস যেমন হওয়া উচিত

আপডেট সময় : ১০:০৯:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক: যে কোনো বয়সেই সুষম খাবার খাওয়া ও জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা জরুরি। আর বয়স চল্লিশের পর এসব দিকে বেশি নজর দিতে হয়। হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ‘রুবি হল ক্লিনিক’য়ের পুষ্টিবিদ ও প্রধান খাদ্যপরিকল্পক ডা. কমল পলিয়া বলেন, “বয়স বাড়ার সাথে সাথে সুস্থ জীবনযাত্রা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।” তবে অলস জীবন সেই সাথে ভাজাপোড়া ও অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত খাবার গ্রহণের শরীর হয় অসুস্থ। এছাড়া অপর্যাপ্ত খাবার গ্রহণ, খাবার ও ওষুধে অনিয়ম, অতিভোজন ইত্যাদি বাজে অভ্যাস রপ্ত হয়ে যায় বয়স বাড়তে বাড়তে। ডা. পলিয়া বলেন, “এসবের ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও ‘ডিস্লিপিডেমিয়া’ বা ভালো ও খারাপ কোলেস্টরলের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়।” এই পুষ্টিবিদ চল্লিশের পরে সুস্থ থাকতে প্রয়োজনীয় কয়েকটি অভ্যাস ও খাদ্যের পুষ্টিমানের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন।
পুষ্টিকর খাবার
ডা. পলিয়া বলেন, “অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও পরিশোধিত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।” কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি গ্রহণের মাত্রা কমানো, পরিবর্তে আঁশ ও প্রোটিন ধরনের খাবার বাড়ানোর দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। রঙিন ফল, সবজি, গোটা শস্য, চর্বিহীন প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি খাবার তালিকায় যুক্ত করতে হবে। এতে সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়।
দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা
দেহঘড়ি ও বিপাক ক্রিয়া সচল রাখতে নিয়ম করে খাবার খাওয়া উচিত। সারাদিনে তিনবেলা সুষম খাবার খাওয়া ও নিয়মিত বিরতিতে স্বাস্থ্যকর নাস্তা গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। একবেলা খাবার বিরতি বা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার পরামর্শ দেন, ডা. পলিয়া। এরফলে অতিভোজনের ঝুঁকি কমে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া
এই পুষ্টিবিদ ব্যাখ্যা করেন, “প্রক্রিয়াজাত ও মোড়কজাত খাবারে বাড়তি চিনি, অস্বাস্থ্যকর চর্বি ও সোডিয়াম যুক্ত থাকে। আর পুষ্টিমানও সামান্য। যতটা সম্ভব এসব খাবার কম খাওয়া উচিত।” অপ্রক্রিয়াজত খাবারে প্রাকৃতিকভাবেই চিনি কম ও প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ বেশি থাকে।
পরিমিত খাওয়া
বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেহেতু বিপাক হার কমে তাই পরিমিত খাবার গ্রহণ করা উচিত। ছোট প্লেট ও বাটিতে খাবার খাওয়া চোখে বিভ্রম সৃষ্টির মাধ্যমে পরিমিত খাবার গ্রহণে সহায়তা করে। খাবার গ্রহণ করতে হবে দেহের চাহিদা অনুযায়ী। ক্ষুধা ও তৃপ্তি মেটা পর্যন্ত খাবার গ্রহণ করা উচিত, এর বেশি নয়।
আর্দ্র থাকা
হজমক্রিয়া, দেহের তাপমাত্রা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ভারসসাম্য বজায় রাখার জন্য সঠিক আর্দ্রতা রক্ষা করা প্রয়োজন। সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান না করার পাশাপাশি মিষ্টিজাতীয় পানীয় সোডা ও অতিরিক্ত ক্যাফেইন পান করার ফলে দেহে পানিশূন্যতার সমস্যা বাড়ায়, যা স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব রাখে।
নিয়মিত শরীরচর্চা করা
নিয়মিত শরীরচর্চা ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদস্বাস্থ্য এবং সার্বিকভাবে সুস্থ রাখে। সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট হালকা মাত্রায় শরীরচর্চা করা উচিত। অ্যারোবিক ব্যায়াম (দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো বা সাঁতার কাটা) ও শক্তি বর্ধক প্রশিক্ষণ এক্ষেত্রে উপকারী। সুস্থ থাকতে প্রয়োজনে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বা ব্যাক্তিগত প্রশিক্ষকের পরামর্শ গ্রহণ করা যেতে পারে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা
দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ স্বাস্থ্য বিশেষ করে বয়স চল্লিশের পরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মানসিক চাপ কমাতে ধ্যান, গভীর শ্বাস অনুশীলন, যোগাসন বা মানসিক প্রশান্তি দেয় এমন কাজে ব্যস্ত থাকা উপকারী। নিজের মানসিক যতেœ স্বাস্থ্যকর কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করা ও মানসিক পরিচর্যা করা জরুরি। সুষম খাদ্যাভ্যাস ও ইতিবাচক জীবনযাত্রা চল্লিশ পেরুলেও সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দ্রুত ইতিবাচক পরিবর্তন আনা দরকার জরুরি।