ঢাকা ১১:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

চলে গেলেন রাজনীতির ‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরী

  • আপডেট সময় : ০৫:৪০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন; তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু হয় বলে তার সাবেক একান্ত সচিব মো. শাহজালাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। মতিয়া চৌধুরী যখন সংসদ উপনেতা ছিলেন, তখন তার একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সরকারি কর্মকর্তা শাহজালাল। মতিয়া চৌধুরীর পরিবারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে তার। শাহজালাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ মতিয়া চৌধুরী সপ্তাহখানেক আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন। বুধবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শেরপুর-২ আসনের ছয়বারের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী ১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তাকে সংসদ উপনেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে মতিয়া চৌধুরীর জন্ম। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৬৪ সালে সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে মতিয়ার বিয়ে হয়। ইডেন কলেজে পড়ার সময় বাম ধারার ছাত্র রাজনীতিতে জড়ান মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬১-৬২ মেয়াদে তিনি ছিলেন ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদের ভিপি। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফার আন্দোলনে জোরাল ভূমিকা ছিল মতিয়া চৌধুরীর। আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্নিঝরা বক্তৃতার জন্য তাকে বলা হতো ‘অগ্নিকন্যা’।
১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন মতিয়া। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৯ সালে ন্যাপ ছেড়ে মতিয়া যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ১৯৮৬ সালে দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এক সময় তাকে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বহুবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে মতিয়া চৌধুরীকে। জেলজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘দেয়াল দিয়ে ঘেরা’ নামে একটি বই লিখেছেন তিনি। রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছে সারাজীবনই সাধারণ বেশভূষা আর সাদামাটা জীবনযাপনের জন্য পরিচিত ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভূমিকার জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চলে গেলেন রাজনীতির ‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরী

আপডেট সময় : ০৫:৪০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন; তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু হয় বলে তার সাবেক একান্ত সচিব মো. শাহজালাল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। মতিয়া চৌধুরী যখন সংসদ উপনেতা ছিলেন, তখন তার একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সরকারি কর্মকর্তা শাহজালাল। মতিয়া চৌধুরীর পরিবারের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে তার। শাহজালাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ মতিয়া চৌধুরী সপ্তাহখানেক আগে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছিলেন। বুধবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শেরপুর-২ আসনের ছয়বারের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী ১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তাকে সংসদ উপনেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে মতিয়া চৌধুরীর জন্ম। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৬৪ সালে সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে মতিয়ার বিয়ে হয়। ইডেন কলেজে পড়ার সময় বাম ধারার ছাত্র রাজনীতিতে জড়ান মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬১-৬২ মেয়াদে তিনি ছিলেন ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদের ভিপি। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফার আন্দোলনে জোরাল ভূমিকা ছিল মতিয়া চৌধুরীর। আন্দোলন-সংগ্রামে অগ্নিঝরা বক্তৃতার জন্য তাকে বলা হতো ‘অগ্নিকন্যা’।
১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন মতিয়া। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৯ সালে ন্যাপ ছেড়ে মতিয়া যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ১৯৮৬ সালে দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এক সময় তাকে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বহুবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে মতিয়া চৌধুরীকে। জেলজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘দেয়াল দিয়ে ঘেরা’ নামে একটি বই লিখেছেন তিনি। রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছে সারাজীবনই সাধারণ বেশভূষা আর সাদামাটা জীবনযাপনের জন্য পরিচিত ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভূমিকার জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়।