ঢাকা ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের ‘ওহিদুর বাহিনীর’ প্রধান

  • আপডেট সময় : ০৫:১৪:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

শেখ ওহিদুর রহমান -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী অঞ্চলের ‘ওহিদুর বাহিনীর’ প্রধান ও নওগাঁ-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ওহিদুর রহমান মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা ৪০মিনিটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে ওমর ফারুক সুমন।

সাবেক সংসদ সদস্য ও অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন বলেন, শনিবার বাদ এশা শহরের নওজোয়ান মাঠে তার বাবার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন রোববার সকাল ১০টায় আত্রাই উপজেলার রসুলপুর গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা যায়, ১৯৪৩ সালে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন ওহিদুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে নওগাঁ, রাজশাহী ও নাটোরের বিস্তৃত এক অঞ্চল জুড়ে দুই হাজারেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বিশাল এক বাহিনী গঠন করেছিলেন তিনি। যা পরবর্তীতে ‘ওহিদুর বাহিনী’ নামে পরিচিতি পায়।

পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ওহিদুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, অবিভক্ত রাজশাহী জেলার কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক। জাতীয় কৃষক সমিতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ আখ চাষী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নওগাঁ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রবীণ ও অকুতোভয় এই জননেতা আত্রাইয়ের লাল সূর্য নামে খ্যাত ছিলেন। তিনি ১৯৬৫ সালে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজশাহী জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৮৩ সাল শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি তৃতীয় জাতীয় সংসদে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রানীনগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৮৯ সালে পার্টির নওগাঁ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাঁকে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে কো-অপ্ট করা হয়েছিল। ১৯৯০ সালে তিনি আত্রাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ সালের ২১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগে যোগ দেন ওহিদুর রহমান। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ দুই ছেলে রেখে গেছেন। ওহিদুর রহমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং তার প্রেক্ষাপট নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কাজ ‘মুক্তি সংগ্রামে আত্রাই’ বইটি। বইটিতে তিনি আত্রাই এলাকার মানুষের সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ, স্বাধীনতার জন্য তাদের আত্মত্যাগ এবং ঐ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের ‘ওহিদুর বাহিনীর’ প্রধান

আপডেট সময় : ০৫:১৪:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী অঞ্চলের ‘ওহিদুর বাহিনীর’ প্রধান ও নওগাঁ-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ওহিদুর রহমান মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা ৪০মিনিটে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে ওমর ফারুক সুমন।

সাবেক সংসদ সদস্য ও অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক সুমন বলেন, শনিবার বাদ এশা শহরের নওজোয়ান মাঠে তার বাবার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন রোববার সকাল ১০টায় আত্রাই উপজেলার রসুলপুর গ্রামে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা যায়, ১৯৪৩ সালে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন ওহিদুর রহমান। মুক্তিযুদ্ধে নওগাঁ, রাজশাহী ও নাটোরের বিস্তৃত এক অঞ্চল জুড়ে দুই হাজারেরও বেশি মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বিশাল এক বাহিনী গঠন করেছিলেন তিনি। যা পরবর্তীতে ‘ওহিদুর বাহিনী’ নামে পরিচিতি পায়।

পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ওহিদুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, অবিভক্ত রাজশাহী জেলার কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক। জাতীয় কৃষক সমিতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ আখ চাষী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নওগাঁ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রবীণ ও অকুতোভয় এই জননেতা আত্রাইয়ের লাল সূর্য নামে খ্যাত ছিলেন। তিনি ১৯৬৫ সালে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজশাহী জেলা কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৬৮ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৮৩ সাল শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি তৃতীয় জাতীয় সংসদে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রানীনগর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৮৯ সালে পার্টির নওগাঁ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তাঁকে কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে কো-অপ্ট করা হয়েছিল। ১৯৯০ সালে তিনি আত্রাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ সালের ২১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগে যোগ দেন ওহিদুর রহমান। প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ দুই ছেলে রেখে গেছেন। ওহিদুর রহমান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং তার প্রেক্ষাপট নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম প্রধান কাজ ‘মুক্তি সংগ্রামে আত্রাই’ বইটি। বইটিতে তিনি আত্রাই এলাকার মানুষের সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাপ্রবাহ, স্বাধীনতার জন্য তাদের আত্মত্যাগ এবং ঐ অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। যা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।